একজন বই পড়ুয়ার আত্মকথন

আমি তখন ক্লাস ফোরে পড়ি। স্কুল থেকে এসে, ফ্রেশ হয়ে, চাচাতো বোন – তানভি আপুর সাথে খেলতে গিয়ে দেখি, খুব ভাব নিয়ে গম্ভীর মুখে ছোট একটা পেপারব্যাক বই পড়ছে। জিজ্ঞেস করলাম, ‘কী পড়ো?’ সে তার চেয়েও গম্ভীর মুখ করে বললো, ‘গোয়েন্দা বই।’
আর কোনও কথা নেই।
কিছুক্ষণ উশখুশ করে বললাম, ‘চলো না, খেলি।’
ও বলল, ‘বিরক্ত করিস না তো! আজকে খেলবো না। দেখছিস না, পড়ছি?’

সেই সময়ে সবকিছুতেই তানভী আপুর সাথে আমার কম্পিটিশন। একসাথে স্কুলে যাওয়া থেকে শুরু করে পড়াশোনা, খেলাধুলা, এমনকি ঈদের ড্রেস কেনার ক্ষেত্রেও। আর এখন সে নতুন একটা উপলক্ষ পেয়ে আমার চেয়ে এগিয়ে থাকবে! ওইটুকু বয়সে এই ব্যাপারটাও মেনে নিতে পারছিলাম না। তাছাড়া খেলার সঙ্গী ভাব নিয়ে বই পড়ছে, আমি করবো টা কী?

একটু চেষ্টা করতেই জানতে পারলাম, তানভী আপুকে বইটা দিয়েছে ওর ভাই, তোহা ভাইয়া। তার কাছে নাকি আরোও অনেক বই আছে এরকম। কিন্তু সমস্যা হলো, তোহা ভাইয়াটাকে আমি একদমই দেখতে পারি না। সেও যে আমাকে খুব দেখতে পারে, তা নয়। বরং সবসময় আমার পিছনেই লেগে থাকে আর সুযোগ পেলেই ক্ষেপায়! কী করে তার কাছে বই চাইতে যাই?

আমার মাথায় তখন ঘুরছে, “গোয়েন্দা বই” আমাকে পড়তেই হবে। তাই লজ্জার মাথা খেয়ে চোরের মতো তোহা ভাইয়ার কাছে গিয়ে মিনমিন করে বললাম, ‘আমারো একটা “গোয়েন্দা বই” লাগবে। পড়েই ফেরত দিয়ে দেব।’

ফাজিলটা তো প্রথমেই মুখের উপর না করে দিলো। আমিও ছেড়ে দেবার পাত্রী নই। ঘ্যানঘ্যান করে তার কান ধরিয়ে দিলাম। কিন্তু সেও কি বাঁদরামি তে কম যায়? বললো, বই দিতে পারে, তবে তার ভাগের সমস্ত কাজ আমাকে করে দিতে হবে। খাবার পর প্লেটটা ধুয়ে দেওয়া, টেবিল ঘুছিয়ে দেওয়া, বিছানা ঝেড়ে দেওয়া…

সেই ভাইয়ার এক বস্তা ভর্তি অফসেট পেপারের বইগুলি ছিল। আমার সৌভাগ্য যে, আমি ওই বস্তাটা তখনই দেখতে পেয়েছিলাম। এত এত এত বই দেখে আমার মাথা ঘুরিয়ে যেত। জিজ্ঞেস করেছিলাম, এতবই কেনার টাকা কই পাও? হাসতে হাসতে, খুব গর্ব নিয়ে সে তার বস্তাভর্তি বইয়ের রহস্য বলেছিল। হাতখরচ বেশি পায়, এমন একটা ছেলের সাথে বন্ধুত্ব ছিল তার। ওকে দিয়ে সেবার বই কেনাতো। বন্ধুর পড়ার পর ভাইয়া পড়ার জন্য নিয়ে আসতো, তারপর আর ফেরত দিত না। এজন্যই এখন আমি আমার বই কাউকে ধার দিতে চাইনা!

blank
যাই হোক, ভাইয়ার ফুট ফরমাইশ খাটতাম, আর বিনিময়ে বই পড়ার সুযোগ পেতাম। নেশা লেগে গেল প্রথম বইতেই। কিন্তু বই কেনার টাকা তো নাই। তাই ভরসা সেই তোহা ভাইয়া-ই। নিজের ভাগের সবচেয়ে ভালো খাবারগুলো তাকে দিয়ে দিয়ে বইগুলো ধার হিসেবে নিতাম। সেই যে নেশায় পড়লাম, এরপর থেকে যত কষ্টের কাজই হোক না কেন, সেটা করে দিয়ে ভাইয়ার কাছ থেকে বই আদায় করতাম। ভাইয়ার ওই বইয়ের বস্তা শেষ করতে পেরেছিলাম এস এস সির পর তিন মাসের ছুটিতে। সেই প্রসঙ্গে পরে আসছি।

সিক্সে উঠার পর থেকে প্রতিবছর উপবৃত্তির টাকা পেলেই ছুটতাম বই কিনতে। কনা নামের একটা বান্ধবী ছিল, ওর সাথে শেয়ারে বই পড়তাম। স্কুল লাইফের বেস্ট ফ্রেন্ড কেয়া অনেক বই কিনেছিল আমার বইপ্রীতি দেখে। নিজে পড়ার আগে আমাকে পড়তে দিত। চাঁদপুর ছেড়ে যাবার আগে মেয়েটা তার সমস্ত বই আমাকে দিয়ে গেছিল।

স্কুল লেভেলের বেশিরভাগ স্যার-ম্যাডাম আমাকে চিনতো। এর কারণ হলো বই পড়া। পড়ার বইয়ের ফাঁকে তিন গোয়েন্দা রেখে পড়ার সময় কত বকা খেয়েছি মায়া ম্যাডামের কাছে! আর মার খেয়েছি আম্মুর কাছে। এত মার মেরে, বই ছিঁড়েও বই পড়া থেকে বিরত রাখতে পারেনি আম্মু। নোকিয়া মেমোরিহীন ক্যামেরা মোবাইলের (মডেল ভুলে গেছি) আবছা নীল আলোয় কত বই পড়েছি!

কিছু ঘটনা না বললেই, নয়। একদিন পড়ার টেবিলে বসে আছি ক্লাসের পড়া শেষ করবার আশায়। কিন্তু পড়ার নামে ঘন্টাটাও হচ্ছে না। বিড়বিড় করে ছোটভাইয়ের মুন্ডুপাত করছি। তিন গোয়েন্দার বইটা ওর চোখে ধরা পড়ে গেছে। সেটা তো বড় কথা নয়, বড় কথা হলো, সে আমাকে হুমকি দিয়েছে! বলেছে, আর কখনো যদি তিন গোয়েন্দা পড়তে দেখে, মাকে বলে পিটুনী দেবে!

blank

পিচ্চি হলে কী হবে, বিচ্ছু একটা! সুযোগ পেলেই ব্ল্যাকমেইল করে। মায়ের কাছে গোয়েন্দা বই ধরিয়ে দেবার হুমকি দেয়। আর আমি ভালো করেই জানি, মায়ের হাতে কোন বই পড়লে, মা সেটাকে আস্ত রাখবে না। ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করে ফেলবে। অথবা চুলোয় ফেলবে। মা গল্পের বই পড়া পছন্দই করে না। দুঃখে কষ্টে চোখ ফেটে কান্না আসছে আমার। ভাইটাকে যে কী করে মানাবো, বুঝতেই পারছি না। এটাই তো তিন গোয়েন্দা পড়ার আদর্শ সময়। অবশ্য আমার মনে হয়, বুড়ো হয়ে গেলেও তিন গোয়েন্দা পড়া ছাড়তে পারবো না আমি।

মনে মনে কত কিছু ভেবে রেখেছি! আমার যখন অনেক টাকা হবে তখন আমার আলাদা একটা বেডরুম থাকবে। শোবার বিছানার মাথার কাছেই দেয়ালে একটা গোপন কুঠুরি থাকবে। যেখানে সারি সারি বই সাজানো থাকবে। যখন ইচ্ছে করবে তখনই বই পড়তে পারব। আবার কেউ এসে পড়লে চটজলদি লুকিয়েও রাখতে পারব! বই বের করে নিলে কিংবা ঢুকিয়ে রাখার পর অটোমেটিক লক হয়ে যাবে! কেউ টেরটিও পাবে না মা’র গলার আওয়াজ পেয়ে স্বপ্নের জগত থেকে ফিরে এলাম। পড়া শেষ করার তাগাদা দিচ্ছে মা। একটু শান্তিমত বসে যে সুখস্বপ্ন দেখব, সেই সুযোগটাও নেই। তার উপরে আবার মাথায় “কালো হাত” গল্পটা ঘুরছে। মাত্র ৩৫ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পড়তে পেরেছি টিফিন পিরিয়ডে। টিফিন পিরিয়ডের পরের ক্লাসগুলি কড়া কড়া টিচারদের ছিল। টিচারকে ফাঁকি দিয়ে পড়ার সুযোগই পাইনি। রহস্যের সমাধান না হওয়া পর্যন্ত কি পড়ায় মনোযোগ বসবে?

একটা গল্প পুরোটা শেষ না করতে পারলে কী যে অস্থির লাগে আমার! সারাক্ষণ ওটাই মাথায় ঘুরতে থাকে। মায়ের চোখ এড়িয়ে তিন গোয়েন্দার ভলিউম ২১ মোটা গাইডের মধ্যে রেখে পড়তে শুরু করলাম।  এতোটাই তন্ময় হয়ে পড়তে লাগলাম যে কখন মা টেবিলের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে, বলতেই পারব না।

“কী পড়িস?” আম্মুর গলায় প্রশ্নটা শুনে ভিতরে ভিতরে চমকে গেলাম। হৃদপিন্ডটা যেন লাফ মেরে গলার কাছে উঠে আসতে চাইছে। আম্মু কি ইতিমধ্যেই বইটা দেখে ফেলেছে? জানি না। কিন্তু এই মুহূর্তে আমার চোর চোর মার্কা চেহারাটা দেখলেই আম্মু বুঝে ফেলবে, কিছু একটা গড়বড় আছে।  আম্মুর দিকে না তাকিয়েই গাইডের পৃষ্ঠা উল্টালাম। কণ্ঠ যথাসম্ভব শান্ত রেখে বললাম, “সমাজের প্রশ্ন পড়ছি।”
আম্মুকে কিছু বলছে না দেখে বই থেকে মুখ তুলে তাকিয়েই হাঁফ ছাড়লাম। টেবিল থেকে যথেষ্ট দূরে আছে আম্মু। এত দূর থেকে মোটা গাইডের মধ্যে লুকানো তিন গোয়েন্দার বইটা আম্মুর চোখে পড়বে না।

মায়া ম্যাডামের ক্লাসে সব্বাই পড়া শিখে আসে। ক্লাস শুরু হবার আগে বার বার রিভাইস করে। আমি সেদিন পড়াতো শিখিইনি, বরং ক্লাসের ফার্স্ট বেঞ্চে বসে  উরুর উপর রেখে, মাথা নিচু করে, “কালো হাত”এর বাকি অংশ পড়ছি। বইয়ে এতোটাই ডুবে ছিলাম যে কখন ম্যাডাম ক্লাসে এসেছেন, কখন পড়া ধরতে শুরু করেছেন, টেরই পাইনি। যেহেতু প্রথম বেঞ্চে ছিলাম, তাই আমার ডাক পড়লো তখনই। একই দিনে দ্বিতীয়বারের মত চমকে উঠলাম। গল্পের বইটা পিছনে লুকাতে লুকাতে উঠে দাঁড়ালাম। বুঝতে হবে, চোরের সাত দিন, গেরস্থের এক দিন। আজকে যে গেরস্থের দিন, সকালেই বোঝা উচিৎ ছিল আমার। তখন যেহেতু বুঝিনি, এখন তার খেসারত দিতে হবে। মনে মনে আল্লাহকে ডাকছি। কিন্তু আল্লাহ নিশ্চয়ই প্রত্যেকবার আমাকে সাহায্য করবেন না? আমাকে আতঙ্কের সাগরে ডুবিয়ে বাঁজখাই গলায় ম্যাডাম বলে উঠলেন, “হাতে কী তোর?”
সাথে সাথে হাত থেকে বইটা ছেড়ে দিলাম। পিনপতন নীরব ক্লাসরুমে থ্যাচ করে বইটা পড়ার শব্দটা বেশ জোরেসোরেই কানে বাজলো। ম্যাডাম আমার পিছনের মেয়েটাকে বললেন, “দেখ তো কী ফেলেছে সে হাত থেকে?”
মেয়েটা আমার অত সাধের বইটা তুলে ম্যাডামের হাতে দিলো। ম্যাডাম যে কী পরিমাণ ক্ষেপলেন, সেটা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। একগাদা কথা শোনাতে শোনাতে বেত আনানোর ব্যবস্থা করলেন। তারপর দুই হাতে চার ঘা দিয়েই ক্ষান্ত হলেন। প্রথমবারের মত কোন টীচারের হাতে মার খেয়ে আমি তখন আকুল নয়নে কাঁদছি। যতটা না কষ্ট লাগছে মার খেয়ে, তার চেয়েও বেশি কষ্ট লাগছে, বইটা হারিয়ে। ব্যাপারটা এখানেই শেষ হতে পারতো। কিন্তু হয়নি। সে প্রসঙ্গে পরে বলছি।

blank
কথায় আছে, ঢেকি স্বর্গে গেলেও ধান ভানে। আমার ক্ষেত্রেও হয়েছে তাইই। দুইদিন না যেতেই অন্য আরেকটা বই জোগাড় করে ফেললাম। বইয়ের যা নেশা, দুইদিন আগের মাইর আর অপমানের কথা বেমালুম ভুলে গেলাম। রাতে সবাই ঘুমিয়ে পড়ার পর টেবিল ল্যাম্প জ্বালিয়ে টেবিলে বসে পড়তে শুরু করলাম। সবাই ঘুমিয়ে গেছে ভেবে মোটা গাইডের আড়াল পর্যন্ত নিইনি। তন্ময় হয়ে পড়ছি আর পড়ছি। হঠাত ধ্যান ভাঙলো আম্মুর গলার আওয়াজে। আম্মু বলছিলো, “কী পড়িস?”
কাঁপা কাঁপা গলায় বললাম, “বই পড়ি।”
“দেখি তো কী বই? নিয়ে আয়।” বিছানায় বসে আম্মু আদেশ দিলো।
আম্মুর আদেশ শুনে মাথায় তো আকাশ ভেঙ্গে পড়লো। নিজেকে থাপড়াতে ইচ্ছে করলো। এতোটাই বোকামি করেছি যে, সারা পড়ার টেবিলে একটা টেক্সট বইও রাখিনি! এখন কী হবে?
ডুবে যাওয়া মানুষ খড়কুটা যা পায়, তাইই আঁকড়ে বাঁচতে চায়। আমিও তাইই করলাম। আলগোছে শেলফ থেকে বিজ্ঞান বইটা নিয়ে আম্মুকে দেখাতে চাইলাম, আমি পড়ার বই-ই পড়ছি।
কিন্তু তখনো আমি জানি না, আমাকে রাত জেগে গভীর মনোযোগ দিয়ে পড়তে দেখে আম্মু  চুপিসারে এসে দেখে গেছে, আমি কী বই পড়ছি। পুরো ঘর অন্ধকার ছিল বলে আমি টেরটিও পাইনি। চুরির উপর বাটপারি করার জন্য শেলফ থেকে যে বই নিয়েছি, আম্মু সেটাও দেখেছে। আলোতে থেকে আমি আম্মুকে স্পষ্ট দেখতে না পেলেও আম্মুতো আমার কার্যকলাপ স্পষ্টই দেখেছে। শুধু বসে বসে দেখছিলো, আমি তাঁর সাথে কতটা মিথ্যে কথা বলতে পারি।
আমাকে একটার পর একটা মিথ্যে কথা বলতে দেখে আম্মু আর নিজের রাগ সামলাতে পারলো না। উঠে এসে আগে আমার গল্পের বইটা ছিঁড়ে টুকরো টুকরো করলো। এরপর মনের স্বাদ মিটিয়ে মারলো। কাঁদতে কাঁদতে আমি ঘুমিয়ে গেলাম। কিন্তু আম্মু জেগে বসে রইলো। আম্মু কিছুতেই বুঝতে পারছিলো না, পড়া ফাঁকি দিয়ে গল্পের বই পড়ার মত বদঅভ্যাস আমার কীভাবে হলো। অথবা কীভাবে সেটা দূর করাবে!
আম্মু যেখানেই আমার কোন গল্পের বই পায়, লুকিয়ে ফেলে। আম্মু ঘরে না থাকলে তন্ন তন্ন করে পুরো ঘর খুঁজি আমি। বেশিরভাগ সময়ই পাই না। কোথায় যে লুকায়, আল্লাহ মালুম!

 

একবার কী যেন খুঁজতে গিয়ে  বিছানার তোষকের নিচে একটা বই পেয়েছিলাম। তখনকার অনুভূতিটা ছিল, ঈদের চাঁদ হাতে পাবার মত। একবার একটা ছেঁড়া বইয়ের পাতা খুঁজে পেয়ে কষ্টে বুক ফেটে গেছিল। ওগুলো জড়িয়ে ধরে কেঁদেওছিলাম। তারপর বহুকষ্টে স্কচটেপ দিয়ে জোড়া লাগিয়ে সেই বই পড়েছিলাম।
লুকানো বইগুলির মধ্যে কিছু কিছু বই ছিল ধার করা। ওগুলি যার যার মালিকের কাছে ফিরিয়ে দেবার জন্য হাড়ভাঙ্গা পরিশ্রম করে পয়সা জমাই। কষ্টের পয়সার সেই বই যার যার মালিককে ফিরিয়ে দেবার সময় বুকে তীব্র চিনচিনে ব্যথা অনুভূত হয়। বিশেষ করে সুস্মিতার হ্যারি পটার অ্যান্ড দ্যা সিক্রেট অব দ্য আজকাবান বইটা যখন বাজেয়াপ্ত হলো, তখন খুব কষ্ট লেগেছিল। ওই বয়সে ৩০০ টাকা জমাতে জান বের হয়ে গিয়েছিল আমার!
এসএসসির পর অন্যান্য লেখকদের বই পড়া শুরু করেছি। তখন আমার অবাধ স্বাধীনতা। খেতে খেতেও বই পড়ি। বই পড়তে পড়তে ঘুমাই। বই না থাকলে রাতে ঘুম আসে না।  নৌকা, বাস এমনকি রিক্সায় বসেও বই পড়েছি। সত্যি বলতে হাঁটতে হাঁটতেও বই পড়েছি।

blank

আমার বই পড়ার সাথে অনেক ছোট ছোট ঘটনা জড়িয়ে আছে। সব লিখতে গেলে রচনা হয়ে যাবে। তবে শেষ কথা হলো, গল্পের বই পড়ার পথে বহু বাঁধা এসেছে। কিন্তু কোনও বাঁধাই আমাকে বই পড়া থেকে বিরত রাখতে পারেনি। এখন পর্যন্ত বই পড়ে যাচ্ছি। এবং আমৃত্যু পড়ে যেতে চাই।
আজ বিশ্ব বই দিবস। হঠাৎ করেই আমার প্রথম দিকের বই পড়ার ওসব স্মৃতির পাতাগুলোয় চোখ পড়ে গেল। আর এজন্যই বাংলাহাবের পাঠকের জন্য আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ঢালি সাজিয়ে বসা।

যেকোন বাসার ড্রয়িং, রিডিং কিংবা বেডরুমে বই ভর্তি  বুকশেলফের চেয়ে সুন্দর দেখতে আর কিছুই হতে পারে না। বেশি বেশি বই পড়ুন। অন্যকে বই পড়তে উৎসাহিত করুন। সবাইকে  বই উপহার দিন। সকল বইপড়ুয়াকে বিশ্ব বই দিবসের শুভেচ্ছা।

ছবিঃ মাদিহা মৌ