ক্রিপ্টোকারেন্সী এর চৌদ্দকথা – চলুন জানি ক্রিপ্টোকারেন্সী এর সকল তথ্য

https://hackernoon.com/

“ক্রিপ্টোকারেন্সী” নিয়ে আমার লেখা শুরু হতে যাচ্ছে আজ থেকে!

মোট তিন পর্বের এই বর্ণনার আজকে প্রথম পর্ব!

সাথে থাকুন! আর রাখুন “ক্রিপ্টোকারেন্সী” নিয়ে সকল খবরাখবর!

একটি cryptocurrency (বা ক্রিপ্টো মুদ্রা) একটি ডিজিটাল সম্পদ যা লেনদেন নিরাপদ করার জন্য এবং মুদ্রার অতিরিক্ত ইউনিট তৈরির নিয়ন্ত্রণের জন্য ক্রিপ্টোগ্রাফি ব্যবহার করে বিনিময়ের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে।ক্রিপ্টোকারেন্সী গুলিকে ডিজিটাল, বিকল্প এবং ভার্চুয়াল মুদ্রার একটি উপসেট হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়। সহজ ভাষায়, ক্রিপ্টোকারেন্সী হলো ওপেন সোর্স ক্রিপ্টোগ্রাফিক প্রোটোকলের মাধ্যমে সাংকেতিক মুদ্রা বা ডিজিটাল কারেন্সী। এর লেনদেনের জন্যে কোনো ধরনের অর্থনৈতিক বা নিয়ন্ত্রণকারী প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন পড়ে না।
বেশ কয়েক ধরনের ক্রিপ্টো কারেন্সী এর মধ্যে সবচেয়ে বেশী জনপ্রিয় আর প্রথম হচ্ছে “বিটকয়েন“! ২০০৮ সালে সাতোশি নাকামোতো এটির প্রচলন করেন। বিটকয়েন হল ওপেন সোর্স ক্রিপ্টোগ্রাফিক প্রোটকলের মাধ্যমে লেনদেন হওয়া সাংকেতিক মুদ্রা। বিটকয়েন লেনদেনের জন্য কোন ধরনের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান, নিয়ন্ত্রনকারী প্রতিষ্ঠান বা নিকাশ ঘরের প্রয়োজন হয় না।

বিটকয়েনের লেনদেনটি বিটকয়েন মাইনার নামে একটি সার্ভার কর্তৃক সুরক্ষিত থাকে। পিয়ার-টু-পিয়ার যোগাযোগ ব্যাবস্থায় যুক্ত থাকা একাধিক কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের মধ্যে বিটকয়েন লেনদেন হলে এর কেন্দ্রীয় সার্ভার ব্যবহারকারীর লেজার হালনাগাদ করে দেয়। একটি লেনদেন সম্পন্ন হওয়ার সাথে সাথে নতুন বিটকয়েন উৎপন্ন হয়। ২১৪০ সাল পর্যন্ত নতুন সৃষ্ট বিটকয়েনগুলো প্রত্যেক চার বছর পরপর অর্ধেকে নেমে আসবে। ২১৪০ সালের পর ২১ মিলিয়ন বিটকয়েন তৈরী হয়ে গেলে আর কোন নতুন বিটকয়েন তৈরী করা হবে না।

যেহেতু বিটকয়েনের লেনদেন সম্পন্ন করতে কোন আর্থিক প্রতিষ্ঠানের প্রয়োজন পড়ে না এবং এর লেনদেনের গতিবিধি কোনভাবেই অনুসরণ করা যায় না, তাই বিশ্বের বিভিন্ন যায়গায় বিটকয়েন ক্রমান্বয়ে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বৈধ পণ্য লেনদেন ছাড়াও মাদক চোরাচালান এবং অর্থপাচার কাজেও বিটকয়েনের ব্যবহার আশঙ্কাজনক ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। যদিও বিটকয়েন ডিজিটাল কারেন্সি হিসেবে জনপ্রিয়তা পেয়েছে, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মুদ্রার বিপরীতে এর দর মারাত্মক ওঠানামা, দুষ্প্রাপ্যতা এবং ব্যবসায় এর সীমিত ব্যবহারের কারণে অনেকেই এর সমালোচনা করেন।

সম্প্রতি কানাডার ভ্যানক্যুভারে বিটকয়েন এর প্রথম এটিএম মেশিন চালু করেছে। ধারণা করা হচ্ছে মুদ্রা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে এটি বিটকয়েনকে আরও আগিয়ে নিয়ে যাবে। মাদক, চোরাচালান অবৈধ অস্ত্র ব্যবসা ও অন্যান্য বেআইনি ব্যাবহার ঠেকানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডীয় সরকার বিটকয়েনের গ্রাহকদের নিবন্ধনের আওতায় আনার চিন্তাভাবনা করছে।
সহজ ভাষায়ঃ ব্যস্তবিকভাবে দেখতে গেলে একটি সাধারন কাগজ আর কোন নোটের মধ্যে কোন পার্থক্য থাকে না। কিন্তু একটি নোটের মূল্য ২ টাকা থেকে শুরু করে ১ হাজার টাকা পর্যন্ত হয়ে থাকে—কেনোনা এর পেছনে সরকার থাকে, ব্যাংক থাকে, এবং কোন অথোরিটি থাকে। তারা একসাথে বসে এটি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে যে, কোন নোটের মূল্য কত হবে। আর আমরা তাদের বিশ্বাস করি এবং এই সামান্য কাগজের টুকরাটাকে মূল্যবান বানিয়ে দেয়।

কিন্তু বিটকয়েনের ক্ষেত্রে এই মামলাটা সম্পূর্ণই আলাদা। কেনোনা বিটকয়েনের মান না তো কোন সরকার নির্ধারণ করে দেয়, আর নাই বা কোন ব্যাংক। বিটকয়েন নিয়ন্ত্রন করার জন্য কোন নির্দিষ্ট অথোরিটিও থাকে না। ২০০৯ সালে এই মুদ্রা সর্বপ্রথম চালু করা হয়েছিলো, এবং এটি তখন থেকে শুরু করে আজ পর্যন্ত চলে আসছে, যা অনলাইনে অনেক বেশি জনপ্রিয়।

বর্তমানে ১ বিটকয়েন সমান ৪৮৩৭.৯৯ ডলার (১০.১০.২০১৭;রাত ১১.১৪)। যেহেতু এর মূল্য নির্ধারণ করার জন্য কোন অথোরিটি নেই, কোন সরকার নেই এবং কোন ব্যাংক নেই, তাই এর মূল্য উঠানামা করতে থাকে। আপনার এবং আমার এই মুদ্রার উপর ভরসা আছে বলেই আমরা একে অপরের সাথে এটিকে বিনিময় করতে পারি। এতে সুবিধা হলো আমি যদি আপনাকে কিছু বিটকয়েন পাঠাতে চাই, তবে আমি আপনাকে তা সরাসরি পাঠিয়ে দিতে পারবো। এমনটা নয় যে, আমাকে কোন ব্যাংকে যেতে হবে আর না হলে কোন অথোরিটির মাধ্যমে আপনাকে পাঠাতে হবে। আপনার অ্যাকাউন্ট কখনো ফ্রিজ করা সম্ভব নয় এবং আপনি যখন ইচ্ছা যাকে তখন ইচ্ছা তাকে এই মুদ্রাটি পাঠাতে পারবেন। এতে আপনি যতো সুবিধা পেতে পারেন, ততো সুবিধা সাধারনত কোন ব্যাংক বা সাধারন মুদ্রা আপনাকে দিতে পারবেনা। ব্যাংক ট্রানজেকশনে অনেক বেশি রুল থাকে, যা আপনাকে অবশ্যই অনুসরন করতে হয়, কিন্তু বিটকয়েনের ক্ষেত্রে কোন রুল থাকে না।
আজকে এ পর্যন্তই! আগামী পর্বে আবার কথা হবে!
ভালো থাকবেন, ভালো রাখবেন!
এই পোস্টটি এর পূর্বে এখানে প্রকাশিত হয়েছে!