উত্তর কোরিয়ার কারাগার : এক ভয়ঙ্কর যন্ত্রণাদায়ক জীবনের গল্প

অ্যালার্টঃ দুর্বল চিত্তের অধিকারীদের এড়িয়ে চলার অনুরোধ করা গেল।

কারাগার কোনকালেই কোন আরামের স্থান ছিল না। তবে, বর্তমান সময়ে সম্পুর্ন পৃথিবীকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে চলা উত্তর কোরিয়ার কারাগারের ভয়াবহতা ঠিক কতখানি? তা জানার আগ্রহ আমাদের বৈকি, সারা দুনিয়ার মানুষেরই আছে। তবে ২০১৪ সালে দ্য ইউনাইটেড নেশন্স ইনকোয়ারি ইনটু হিউম্যান রাইটস অ্যাবিউজেস কর্তৃক প্রকাশিত কিম কোয়াং-ইল নামে প্রাক্তন এক রাজনৈতিক বন্দীর করা ৮টি পেন্সিল স্কেচ প্রকাশ করে সারা দুনিয়াতে হৈচৈ ফেলে দিয়েছিল। শিউরে উঠেছিল সমগ্র বিশ্বের মানুষ। যেখানে উত্তর কোরিয়ার কারাগারের ভিতরের অবস্থা ফুটিয়ে তুলেছিলেন কিম কোয়াং-ইল। চলুন একে একে দেখে ফেলা যাক, কেমন অবস্থায় আছে উত্তর কোরিয়ার কারাবন্দীরা।

ক্যাপশনঃ Pigeon Position Interrogation ।। Source: United Nations

১। উত্তর কোরিয়ার কারাবন্দীদের পান থেকে চুন খসলেই তাদের ৬০সেমি উঁচু আংটায় এভাবে উল্টো করে হাত বেঁধে রাখা হয়, যতক্ষণ না সে রক্তবমি করে।

ক্যাপশনঃ Crane, Airplane & Car Interrogation Positions ।। Source: United Nations

২। সেখানে জেলে খুব কমন একটি শাস্তি হচ্ছে ‘কাল্পনিক মোটরসাইকেল’। তাদের দুই হাত উঁচু করে ঘণ্টার পর ঘন্টা দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। কখনো কখনো শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে, যেমন- হাতে, অন্ডকোষে ইত্যাদিতে ওজন বেঁধে দেওয়া হয়।

ক্যাপশনঃ Entry to the Prison || Source: United Nations

৩। জেলে নিজ কক্ষে ঢুকতে গেলে তাদের ১০সেমি উঁচু ছোট দরজা দিয়ে ঢুকতে হয়। এতে করে তাদের হাটু ও কনুইয়ে ভর দিয়ে ঢুকতে হয়। সাথে বুট জুতোর লাথি তো আছেই। কারণ বলা হয়, জেলে ঢোকা মাত্র তুমি আর মানুষ নেই, তুমি পশু হয়ে গেছো।

ক্যাপশনঃ Pump Interrogation – Ordered to do Hundred sit-ups || Source: United Nations

৪। যখন কোন কাজ থাকে না তখন তাদের উদ্ভট উদ্ভট ভঙ্গীতে দাঁড়িয়ে থাকার হুকুম দেওয়া হয়। কেউ যদি দাঁড়িয়ে না থাকতে পারে, তাহলে তার জন্য শাস্তি হচ্ছে মাটিতে মুখ লাগিয়ে শুয়ে থাকা।

ক্যাপশনঃ Solitary Prison Cell Punishment. Catching Rats in the Solitary Cell || Source: United Nations

৫। খাদ্য হিসেবে তাদের বিভিন্ন জিনিস দেওয়া হয়, যার ভিতরে সিদ্ধ পচা শসা অন্যতম। যদি কেউ খেতে অনাগ্রহ প্রকাশ করে তবে তাকে ১২০সেমি লম্বা ও ১০০সেমি চওড়া ছোট লোহার সেলে রাখা হয়, যেখানে না পারা যায় বসা, না পারা যায় শোয়া। মাঝে মাঝে এত অখাদ্য দেওয়া হয় যে তা ইদুরেও খায় না।

ক্যাপশনঃ Eating Rats & Snake out of Hunger || Source: United Nations

৬। ক্ষুধার্ত কারাবন্দীরা কখনো কখনো খাবারের জন্য এতটাই বেপরোয়া হয়ে যায়, যে হাতের কাছে সাপ-ব্যাঙ-ইদুর যা পায় তাই খায়। এভাবে অনেকেই অসুস্থ হয়ে মৃত্যুবরণ করে। কিম কোয়াং-ইল নিজেও এসব খেয়ে অসুস্থ হয়ে গিয়েছিলেন।

ক্যাপশনঃ Morgue Where Rats are Eating Human Eyes, Noses and Ears || Source: United Nations

৭। ক্ষুধা-তৃষ্ণায় জর্জরিত অসুস্থ কারাবন্দীরা যারা মারা যায়, তাদের লাশের ঘরে দিনের পর দিন এভাবে ফেলে রাখা হয়। যতদিন গাড়ি ভরার মত লাশ না জমা হয় ততদিন এভাবেই পড়ে থাকে। অনেকের মৃতদেহ এখান থেকেই ইদুরে খেয়ে ফেলে।

ক্যাপশনঃ Dead Bodies taken to the Crematorium || Source: United Nations

৮। পরিমানমত লাশ জমা হলে তা পাহাড়ের চুড়ায় নিয়ে গিয়ে পুড়িয়ে ফেলা হয়।

 

আর্টিকেলটি সম্পুর্ণ পড়ার জন্য ধন্যবাদ। শেয়ার করে অন্যদের দেখার সুযোগ করে দিন।

 

সোর্সঃ ১. UN inquiry into human rights abuses report 2014
২. www.theguardian.com
৩. www.theblaze.com
৪. www.huffingtonpost.com
৫. www.telegraph.co.uk