দেখতে পারেন মজার কিছু ফ্যান্টাসি মুভি (পর্ব- ২)

Untitled2.jpgপ্রথম পর্বে বেশ কিছু চমৎকার ফ্যান্টাসি ঘরানার মুভির কথা আপনাদের জানিয়েছিলাম। আশা করি লেখাটি আপনাদের ভাল লেগেছে। আজ ফ্যান্টাসি মুভি নিয়ে দ্বিতীয় লেখা নিয়ে হাজির হলাম। আজও বেশ কয়েকটি চমৎকার ফ্যান্টাসি ঘরানার মুভির কথা জানাবো আপনাদের।

১। Maleficent

পাশাপাশি দুইটি রাজ্য- একটি মানুষের, অন্যটি ম্যাজিক্যাল ক্রিয়েচারদের। একটি ঘন বন রাজ্য দুইটিকে আলাদা করে রেখেছে। মানুষদের রাজা একটু লোভী টাইপের, তার প্রায়ই শখ হয় ম্যাজিক্যাল ক্রিয়েচারদের রাজ্যটিও জয় করে নিতে। কিন্তু তার সেই আশা পূরণের প্রধান বাধা ম্যাজিক্যাল রাজ্যটির শাসনকর্ত্রী ম্যালিফিসেন্ট, যে কিনা একই সাথে সুন্দরী, বুদ্ধিমতী আর দয়ালু। কিন্তু রাজা তার সংকল্পে অটল, ঐ রাজ্য তার চাই-ই। তিনি ঘোষণা দিলেন, যে ম্যালিফিসেন্টকে হত্যা করতে পারবে, তার কাছেই তিনি রাজকন্যাকে বিয়ে দিবেন, সেই সাথে তাকেই পরবর্তী রাজা বানাবেন। লোভের ফাঁদে ভালবাসা পরাজিত হয়, ম্যালিফিসেন্টের প্রেমিক স্টিফেন তাকে ধোঁকা দিয়ে তার ডানা কেটে নিয়ে যায়। রাজকন্যাকে বিয়ে করে মানুষের রাজ্যের রাজা বনে যায়। এদিকে প্রতারিত ম্যালিফিসেন্ট রাতারাতি বদলে যায়, বদলে যায় সদা হাসি খুশি ম্যাজিক্যাল ক্রিয়েচারদের রাজ্যটিও। বছর পেরিয়ে যায়, নতুন রাজা স্টিফেনের ঘরে জন্ম নেয় ফুটফুটে এক মেয়ে। খবর একান-ওকান করে ম্যালিফিসেন্টের কাছেও পৌঁছে যায়, তার ভেতরের প্রতিশোধ স্পৃহা আবার জ্বলে উঠে। সে রাজকন্যাকে অভিশাপ দেয়- ষোল বছর বয়সে রাজকন্যা মারা যাবে, কেবল মাত্র ‘প্রকৃত ভালবাসার চুমু’ই (ট্রু লাভ কিস) তাকে বাঁচাতে পারবে, পৃথিবীতে যেটার আদৌ কোন অস্তিত্ব নেই। কিন্তু আসলেই কি তাই?

ম্যালিফিসেন্ট চরিত্রে অন্যবদ্য অভিনয় করেছেন হলিউডের হার্টথ্রব Angelina Jolie। প্রিন্সেস আরোরা চরিত্রে Elle Fanning এর অভিনয়ও দেখার মত। IMDb তে রেটিং ৭/১০ আর নামিয়ে নিতে পারেন এইখান থেকে

২। Goosebumps

বাবা মারা যাওয়ার পর জ্যাচ তার মাকে নিয়ে নতুন এক শহরে শিফট হয়। সেখানে এক অদ্ভুত প্রতিবেশী হানার সাথে দেখা হয় তার। হানাদের পুরো ফ্যামিলিটাই অদ্ভুত। নিজের মায়ের সম্পর্কে কোন কথাই মনে নেই হানার, হানার বাবা তাকে সমবয়সী কারো সঙ্গেই মিশতে দেন না এমনকি তিনি নিজেও কারো সঙ্গে মেশেন না। এবং তারা বেশ কয়েক বছর পর পরই শহর বদলান। ক্রমেই হানার প্রতি আকৃষ্ট হয় জ্যাচ। একদিন লুকিয়ে হানার সাথে দেখা করতে এলে অপ্রত্যাশিত এক সত্যের মুখোমুখি হয় জ্যাচ আর তার বন্ধু চ্যাম্প। হানার বাবা আসলে বিখ্যাত হরর বই লেখক আর জ়ে স্টেইন, এবং তার সৃষ্টি প্রতিটি দানবেরই বাস্তব অস্তিত্ব আছে। তারা বইয়ের মাঝে বন্দী এবং মুক্তি পাওয়ার জন্য সর্বদাই ব্যাকুল। বদানুবাদের এক পর্যায়ে ভুলক্রমে দানব স্লপি তার বই থেকে মুক্তি পেয়ে যায় এবং তাকে বইয়ের জগতে ফেরত পাঠানোর একমাত্র উপায় বইটি পুড়িয়ে ফেলে। তারপর একে একে মুক্তি দিতে থাকা বাকি অন্যসব দানবকে। রূপকথার কল্পজগতে থাকা সব দানব একে একে নেমে আসে ম্যাডিসন শহরের রাস্তায় এবং সব ধ্বংস করার উন্মত্ত খেলায় নামে। এদিকে জ্যাচ, হানা, স্টেইন আর চ্যাম্পও নামে পৃথিবীকে রক্ষার এক অসম লড়াইয়ে।

মূল চরিত্রের অভিনেতারা হলেন- Jack Black (আর জ়ে স্টেইন), Dylan Minnette (জ্যাচ), Ryan Lee (চ্যাম্প) আর Odiya Rush (হানা)। মুভিটির IMDb রেটিং ৬.৪/১০ আর নামিয়ে নিতে পারেন এইখান থেকে

৩। Peter Pan

ডার্লিং ফ্যামিলির বড় মেয়ে উইন্ডি ঘুমানোর সময় তার দুই ছোট ভাই মাইকেল আর জনকে গল্প শোনাত। আর সেই গল্প শুনতে জাদুর রাজ্য নেভারল্যান্ড থেকে পৃথিবীতে আসত প্যান, পিটার প্যান নামের এক চির-কিশোর। একদিন রাতে পিটার তাদেরকে তার সাথে আসার আমন্ত্রণ জানায়। শুরু হয় নেভারল্যান্ডে ডার্লিং ফ্যামিলির বাচ্চাদের এক শ্বাসরুদ্ধকর অভিযান। স্কটিস উপন্যাসিক J. M. Barrie-র শিশুতোষ উপন্যাস Peter Pan or The Boy Who Wouldn’t Grow Up অবলম্বনে মুভিটি পরিচালনা করেন অস্ট্রেলিয়ান অভিনেতা এবং পরিচালক Paul John Hogan। ২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত মুভিটির IMDb রেটিং ৬.৯/১০ আর সরাসরি নামিয়ে নিতে পারেন এইখান থেকে

৪। Warm Bodies

জম্বি নিয়ে এই পর্যন্ত অনেক মুভি মুক্তি পেয়েছে। প্রায় সবগুলো মুভিই কাছাকাছি থিমের হলেও Warm Bodies সম্পূর্ণ আলাদা একটা থিম নিয়ে তৈরি। এই মুভিতে শুধু জম্বিদের মানুষ খাওয়া নিয়ে বীভষ্যতাই দেখানো হয়নি, দেখান হয়েছে জম্বিরাও প্রেমে পড়তে পারে আর ভালবাসার জন্য সবকিছু বাজি রেখে লড়তেও পারে! জম্বিদের সাথে এক এনকাউন্টারে জুলির প্রেমিক পেরি সহ তার বন্ধুরা নিহত হয়। জম্বিদের একজন, যার নাম আর, কি মনে করে সে আর জুলিকে মারে না। তাকে জম্বি সাজিয়ে নিজেদের এলাকায় নিয়ে আসে। জম্বিদের এলাকায় এসে জুলি দেখতে পায় আর বাকি জম্বিদের মত নয়। সে গান শোনে, গাড়ি চালায়, স্বপ্ন দেখে। ধীরে ধীরে আর জুলির প্রেমে পড়ে কিন্তু জুলি বাড়ি ফিরতে চায়। আর তাকে বাড়ি পৌঁছে দেয়। কিন্তু জুলি চলে যাওয়ার পরেও আর তাকে ভুলতে পারে না, তাই তাকে দেখতে সে ছন্মবেশে মানুষের এলাকায় চলে আসে।

চমৎকার এই রোমান্টিক ফ্যান্টাসি ঘরানার মুভিটির IMDb রেটিং ৬.৯/১০। আর চরিত্রে অন্যবদ্য অভিনয় করেছেন Nicholas Hoult আর জুলি চরিত্রটি চিত্রায়ন করেছেন Teresa Palmer। মুভিটি সরাসরি নামিয়ে নিতে পারেন এইখান থেকে

৫। Click

কেমন হত যদি জীবনের জটিল আর বিরক্তিকর বিষয়গুলো সহজে স্কিপ করা যেত? কেমন হত যদি জীবনের চড়াই উতরাই গুলো ডিভিডি প্লেয়ারের ফাস্ট ফরওয়ার্ডের মত বাটন চেপে ফরওয়ার্ড করে গিয়ে শুধু সাফল্যগুলো উপভোগ করা যেত? এর ফল কি আদৌ ভাল হত? এমনই এক থিম নিয়ে তৈরি হয়ছে ফ্যান্টাসি কমেডি ঘরানার মুভি ক্লিক। মুভিতে দেখা যায় মাইকেল নিউম্যান নামের এক ব্যক্তি একটি অদ্ভুত রিমোট পায়, যেটা দিয়ে ইচ্ছা করলে সে তার চারপাশ থামিয়ে দিতে পারে, তার জীবনের বিশেষ বিশেষ মূহুর্ত গুলোতে ফেরত যেতে পারে আবার লম্বা একটা সময়কে ফাস্ট ফরওয়ার্ডের মাধ্যমে এক লহমায় অতিক্রম করে ফেলতে পারে। প্রথমে সে ভেবেছিল রিমোটটি তার জন্য আশীর্বাদ হয়ে এসেছে, কিন্তু পরে দেখা গেল সেটা আসলে আশীর্বাদ নয়, জ্বলন্ত অভিশাপ। শর্টকাটে কখনো জীবনে অশান্তি ছাড়া শান্তি আসে না। আর আপনি যদি জীবনের ঝামেলাপূর্ণ বিরক্তিকর বিষয়গুলো স্কিপ করে যেতে চান, তাহলে আনন্দের বিষয়গুলোও যে কখন আপনাকে স্কিপ করা শুরু করবে আপনি তা টেরই পাবেন না।

মাইকেল নিউম্যান চরিত্রে Adam Sandler দূর্দান্ত অভিনয় করেছেন। মুভিটির IMDb রেটিং ৬.৪/১০ আর নামিয়ে নিতে পারেন এইখান থেকে। সম্প্রতি মুভিটি ভারতে রিমেক হয়েছে ‘বার বার দেখো নামে যেটায় অভিনয় করেছেন ক্যাটরিনা আর সিদ্ধার্থ।