৭টি জনপ্রিয় খাবারের উৎপত্তির কথা

প্রতিদিনই আমরা মজার মজার খাবার খাই।এখন শুধু দেশীয় ভিনদেশীয় খাবারও হাতের নাগালে।কিন্তু আমরা হয়ত অনেকেই জানি না কিভাবে এসব খাবারগুলো প্রথম তৈরি হয়েছিল। চলুন জেনে নেই এমন কিছু খাবারের উৎপত্তির কাহিনী।

চকলেট চিপস

রুথ ওয়াকফিল্ড ছিল একটি বেকারির মালিক।তিনি নিজে বিভিন্ন ধরণের খাবার বানাতেন।একদিন তার দোকানের চকলেট ফুরিয়ে গেল।এক মুদি দোকানে গেলেন চকলেট কেনার জন্য।সেখানেও চকলেট ছিল না।তখন নেসলের একটি চকলেট বার নিয়ে যান।তারপর তা নিয়ে নতুন এক খাদ্য তৈরি করেন যার নাম চকলেট চিপস।

স্যান্ডউইচ

এই খাবারটি সবার কাছে খুবই পরিচিত।স্যান্ডউইচ বানানো খুব সহজ,ঝামেলামুক্ত।এই খাবার প্রথম কখন কিভাবে তৈরি হল তা নিয়ে নানান কাহিনী রয়েছে।১৭০০ সালে জুয়াখেলার আসরে এক উত্তেজনা মুহূর্তে জন মনটেগু নামের এক জুয়াড়ি তার জন্য রুটির মধ্যে মাংস দিয়ে আনতে বলে।যাতে করে খেলার ফাঁকে ফাঁকে সে খেতে পারে। এবং সময়ও কম লাগে।তার এই খাবার পরবর্তীতে স্যান্ডউইচ নামে পরিচিত হয়।আধুনিক বিশ্বের অন্যতম জনপ্রিয় ফাস্টফুড এই স্যান্ডউইচ যা বড় থেকে ছোট সবাই পছন্দ করে।

 

হট স্পাইসি চিকেন

মশলাযুক্ত এই গরম গরম চিকেন কার না প্রিয়।এই খাবারের উদ্ভাবনের কাহিনীও মজার।নেসভিলের প্রিন্সেস সর্বপ্রথম এই খাবার তৈরি করে।থরটন প্রিন্স ছিল খুব অত্যাচারী ও অসচ্চরিত্র।৭০ বছর আগের ঘটনা এটি।

এক রাতে সে প্রিন্সেসকে শাস্তি দেয়ার জন্য বলে সকালে যেন তার জন্য বেশি মসলাযুক্ত চিকেন রান্না করে দিতে।প্রিন্সেস এমন রান্নার কথা কখনো শুনেনি।অন্যরাই শুনেনি এই খাবারের কথা।তারপর নিজের মত করে বেশি মসলা দিয়ে ঝাল করে চিকেন রান্না করে।নতুন এই রান্নাটি প্রিন্স ের খুব পছন্দ হয়ে যায়।বাকিটা শুধুই ইতিহাস।পরবর্তীতে নেসভিলের সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার হয় এই হট স্পাইসি চিকেন।

 

নাসোস

টেলিভিশনের পর্দায় যখন আমরা পনির,ক্রিম আর সসে ভরপুর নাসোস দেখি তখন সকলেরই কমবেশি জিভে জল আসে।এতে কোন সন্দেহ নেই “নাসোস” চমৎকার একটি খাবার।এই খাবারটি এসেছিলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের চলাকালীন সময়ে উদ্ভাবিত হয়েছিল।১৯৪৩সালে আমেরিকান সামরিক স্ত্রীদের একদল টেক্সাসে থাকত।সামরিক ঘাঁটিতে একাকীত্বকে এড়ানোর জন্য তারা প্রায়ই কাছাকাছি শহরগুলোতে বেড়াতে জেত।একদিন তারা ‘জিত’ নামে এক রেস্টুরেন্টে গিয়েছিল।কিন্তু তখন ঐ রেস্টুরেন্টের প্রধান শেফ উপস্থিত ছিল না।তাই তখন রেস্টুরেন্টের অন্যান্য শেফরা চিপ্স,পনির দিয়ে নতুনভাবে তাদের জন্য এই খাবারটি তৈরি করে এবং তাদেরও এটি পছন্দ হয়।এইভাবে উদ্ভাবিত হয় বর্তমান যুগের  সুস্বাদুও চমৎকার “নাসোস”।

কোণ  আইসক্রিম

অত্যন্ত জনপ্রিয় এই কোণ আইসক্রিমের উদ্ভাবনের কাহিনী একটু ভিন্ন রকমের।প্রথমে যখন এটি তৈরি করা হয় তা ছিল অস্বাস্থ্যকর।তবে তখন এটি ছিল সস্তা ও নিম্ন আয়ের লোকদের কাছে জনপ্রিয়।কাছের পাত্র বা কাগজে মোড়া থাকত এই আইসক্রিম।

এই আইসক্রিমের আধুনিক সংস্করণ হল ১৯০৪ সালে।এই বছর ফোটাস এর মেলায় ৫০টির  বেশি আইসক্রিম বিক্রেতা এসেছিল।সিরিয়ার অভিবাসী আরনেস্ত হামউই এর কোণ আকৃতির এক আইসক্রিম ক্রেতার খুব দৃষ্টি আকর্ষণ করে।তিনি এক আইসক্রিম কোম্পানির সাথে যুক্ত হয়ে এই আইসক্রিমের মার্কিন  যুক্তরাষ্ট্রের ব্যাপক প্রচার চালান। এভাবেই জন্ম কোণ আইসক্রিমের।

কাঠির আইসক্রিম

এই আইসক্রিম উদ্ভাবনের কাহিনী শুরু হয় ১৯০৫সালে।১১ বছর পর বয়সী ফ্রাঙ্ক চিনিযুক্ত পানীয় সোডা পাউডার পানির সাথে একটি কাঠি দিয়ে মিশিয়ে তৈরি করে।ঘটনাক্রমে এটি ছিল শীতের রাত।আর সে কাঠিটি ঐ মিশ্রণ থেকে বের করতে ভুলে গিয়েছিলো।পরদিন দেখা গেল কাঠির মধ্যে এই মিশ্রণটি জমে শক্ত হয়ে গিয়েছিলো।এটি অন্যান্য বাচ্চাদেরও দিয়েছিলো,তারাও খুব পছন্দ করেছিল।তবে ফ্রাঙ্ক এই আবিষ্কার গোপন রেখেছিলো ১৮ বছর।

আলুর চিপস

আলুর চিপস সারা বিশ্বের একটি জনপ্রিয় খাবার।এটি প্রথম তৈরি করে নিউইয়র্কের মুন লেক নামক লজ রেস্টুরেন্টের একজন শেফ।ফ্রান্সে আলুকে মোটা করে কেটে লবণ দিয়ে সংরক্ষণ করে রাখত।কিন্তু আমেরিকান এই শেফ আলুকে পাতলা করে কেটে নতুনভাবে রান্না করে।এটি ১৮৫৩সালের এক গ্রীষ্মের কথা।এই চিপ্সের নাম হয় সারাটোগা চিপ্স।১৮৬০সালে একটি রেস্টুরেন্ট খুলে যার প্রধান মেনু ছিল এইচিপস।তখন খুব দামী ছিল এই খাবারটি।শুধু ধনীরাই  আসতো এই রেস্টুরেন্টে।প্রথমে ঘরে বানানো হয় পড়ে বাসার পিছনে শুধু আলুর চিপস বানানোর জন্য একটি কারখানা বানানো হয়।এখানে অনেক মজুত করেও রাখা হতো।দিনে দিনে আলুর চিপসের প্রসার হতে থাকে।অনেকে তখন ডিনারে অল্প হলেও আলুর চিপস খেত।১৯২৫ সালে ক্যালিফোর্নিয়ার এক কোম্পানি এই চিপ্সকে মোম কাগজের প্যাকেটে বাজারজাত করে।১৯৩২ সালে হারমান লে লে “Lay” নামক এক চিপসের বাজারজাত করে।এই Lay এর পটেটো চিপস প্রথম সফলভাবে বাজারজাত জাতীয় ব্র্যান্ড হয়ে উঠে।