নিম্ন রক্তচাপ বা হাইপোটেনশন : লক্ষণ ও প্রতিরোধের উপায়

উচ্চরক্তচাপের পাশাপাশি নিম্ন রক্তচাপ বা হাইপোটেনশন ও ইদানীং মানুষের মাঝে বেশি দেখা যাচ্ছে। তাই আজ হাইপোটেনশনের কিছু প্রধান লক্ষণ ও এর হাত থেকে বাঁচার উপায় আপনাদের সামনে তুলে ধরবো।

মাথা ঘুরানো :

মাথা ঘুরানো এবং ভোঁতা ধরণের যন্ত্রণা হওয়া নিম্ন রক্তচাপ এর একটি উল্লেখযোগ্য লক্ষণ। নিম্ন রক্তচাপের কারণে মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহিত কম হয়। যার কারণে মস্তিষ্কে অক্সিজেন সাপ্লাই কমে যায় এবং এই কারণে মাথা ঘুরানো অথবা মাথা হঠাৎ করে হালকা হয়ে যায় এমনটা অনুভূত হয়।

ক্লান্ত বোধ করা

নিম্ন রক্তচাপের কারণে আমাদের মস্তিষ্কের অক্সিজেন সাপ্লাই এ ব্যাঘাত ঘটে। যার কারণে কিছুক্ষণ পরপরই তেমন কোনো কাজ না করলেও ক্লান্তি বোধ হয়। এনার্জির ঘাটতি শরীরের জন্য খুবই ক্ষতিকর। তাই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

দ্রুত হৃদস্পন্দন

দ্রুত হৃদস্পন্দন অথবা পালপিটিশন নিম্ন রক্তচাপের একটি উল্লেখযোগ্য লক্ষণ। সুস্থ দেহে প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ রক্ত হৃদপিন্ডে প্রবাহিত হয়। এমনটা না হলে হৃদপিন্ড খুব দ্রুত স্পন্দিত হওয়া শুরু করে। পালপিটিশনের সাথে সাথে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া বা দ্রুত নিশ্বাস প্রশ্বাস নেয়া শুরু হতে পারে।

মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটা:

মস্তিষ্ক সঠিকভাবে কাজ করবে তখনই যখন তাতে প্রয়োজনমত অক্সিজেন সরবরাহ করা হবে। হাইপোটেনশনের ক্ষেত্রে এটি ঘটে না বলেই মনোসংযোগে ব্যাঘাত ঘটে।

ঘনঘন পানির পিপাসা:

শরীরের পানিশূন্যতা হাইপোটেনশনের কারণ হতে পারে। তাই ঘনঘন পানির পিপাসার মানে এ ও হতে পারে যে আপনি হাইপোটেনশনে ভুগছেন।

দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া:

হঠাৎ করে চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া হাইপোটেনশনের একটি অন্যতম লক্ষণ। মস্তিষ্কে অক্সিজেন সাপ্লাই এ ব্যাঘাত ঘটে বলে চোখের মুভমেন্ট ব্যাহত হয়। যার কারণে খুব অল্প বা দীর্ঘ সময়ের জন্য চোখের দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যায়। হাইপোটেনশন ছাড়াও মাইগ্রেন, মায়োপিয়া, গ্লুজোমা, রেটিনাল ডিটাচমেন্টের মতো ভয়ানক রোগের লক্ষণ এটি। তাই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন।

এছাড়াও বমিবমি ভাব, বমি হওয়া, মাথাব্যথা করা, বিষণ্নতা, কাজে মন না বসা, বদহজম,পিঠের উপরিভাগে ব্যথা ইত্যাদি লক্ষণ দেখা দিতে পারে।

প্রতিকার:

১: প্রতিদিন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।
২: ঘুম থেকে ওঠার পর সাথে সাথে ঝট করে দাঁড়িয়ে যাবেন না। কিছুক্ষণ বসে থাকুন।
৩: এক নাগাড়ে অনেকক্ষণ এক পায়ের উপর আরেক পা দিয়ে পা ক্রস করে বসে থাকবেন না।
৪: পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম হাইপোটেনশন থেকে আপনাকে দূরে রাখবে।
৫: ভিটামিন B12 এবাদত এবং ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার খাবেন।
৬: ধূমপান এবং মদ্যপান ত্যাগ করুন।
৭: মাঝেমধ্যে খাবারে লবণের পরিমাণ সামান্য বাড়িয়ে দিন।
৮: ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার, মুরগীর মাংস, কলিজা, ডিম, দুধ ইত্যাদি খাবারের তালিকায় রাখুন।

হাইপোটেনশনের লক্ষণগুলো দেখা দিলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন এবং সেই উপদেশ মেনে চলুন। দীর্ঘমেয়াদি হাইপোটেনশন আরো নানাবিধ সমস্যা ডেকে আনবে। তাই সময় থাকতে সচেতন হওয়াই শ্রেয়।