চাকরি খোঁজার সময় কয়েকটি ভুল যা আপনি করতে পারেন

1382390_402791999849863_231457173_n
ছবি কৃতজ্ঞতা- রিমি শারমিন আখন্দ

আপনি যখন একটি নতুন চাকরি খোঁজ করছেন তখন অনেক রকম ভুল হতে পারে।যেমন রিজিউমির ফরম্যাট এ ভুল, ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় প্রশ্নের উত্তর দিতে গিয়ে হোঁচট খাওয়া ইত্যাদি। চলুন জেনে নিন এমন কয়েকটি সাধারণ ভুল যা আবেদনকারীরা প্রায় করে থাকে-

১। আপনার যোগ্যতা অবমূল্যায়ণ

চাকরির বাজরে চাকরি যতই অভাব থাকুক তারপরও চিন্তা-ভাবনা ছাড়া কোন প্রস্তাব গ্রহণ করা উচিত নয়।যদি অনেকবেশি দরকার হয় তাহলে চাকরির প্রস্তাব গ্রহণ করা যায়।প্রস্তাবিত চাকরিটি কতটুকু অনুকূল সেটা বোঝার অন্যতম উপায় হল আপনার যোগ্যতা এবং দক্ষতা কতটা গুরত্বপূর্ণ চাকরিটির জন্য।
আপনার বেতন কত হওয়া প্রাসঙ্গিক এটা পেস্কেল বা গ্লাসডোর এর মত বিভিন্ন বেতন সাইটে সার্চ করে জেনে নিন।এভাবে আপনি বেতনের একটা মধ্যস্থতা করতে পারবেন এবং কম সুবিধাজনক প্রস্তাব এড়ানো সম্ভব।আপনার সর্বনিম্ন একটা বেতন এর অনুমান থাকতে হবে যেটা মানতে আপনি ইচ্ছুক এবং অবশ্যই একটা লক্ষ্য রাখতে হবে যে আপনি বর্তমানে যেই বেতন-সুবিধা পাচ্ছেন তার থেকে যেন বেশি হয়।একটি ভালো চাকরির জন্য বেতন এর বিচার-বিবেচনা করা কোন ভুল নয় তাই বেতন মূল্যায়ন করতে ভয় পাবেন না।মনে রাখবেন আপনি এবং আপনাকেই আপনার রোজগার উপার্জন করতে হবে।

২। পারস্পরিক যোগাযোগের নেটওয়ার্ক ব্যবহার না করা

আপনি কি জানেন তা নয় বরং আপনি কাকে জানেন এটাই অনেক ক্ষেত্রে বেশি জরুরি।সংখ্যাগরিষ্ঠ কিছু চাকরি আছে যেগুলোর বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়না।সেই ক্ষেত্রে আপানার পরিচিতি এবং তাদের পরিচিতি একমাত্র আপনার চাকরির উৎস।কিছু শিল্প প্রতিষ্ঠানে কম্পিউটার নিরাপত্তা ও ব্যবস্থাপনা পরামর্শকারী এর মত আরও কিছু চাকরি আছে যেগুলোতে বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়না।রেফারেন্স এর মাধ্যমে এসব চাকরি আপনি খুঁজে পেতে পারেন।অতঃপর আপনি সেখানে ফোন বা ইমেইল করতে পারেন।

৩। কোম্পানি সম্পর্কে অবগত না হওয়া

এটা এমন বড় কিছু হয় যখন আমি নিয়োগ পরিচালকদের জিজ্ঞাসা করি যে তারা চাকরি প্রার্থীদের নিয়ে কেমন অবগত।আবেদন করার পূর্বে কোম্পানির আখ্যান সম্পর্কে জেনে নিবেন; তাদের আলোচ্য বিষয়,মূল্যবোধ,শিল্পের ধরন ইত্যাদি।এটি আপনাকে সাহায্য করবে যে কোম্পানিটি আপনার জন্য উপযুক্ত কিনা।এর ফলে যিনি আপনার চাকরির সাক্ষাৎকার নিবেন তিনি বুঝতে পারবেন যে আপনি চাকরিটির এবং সম্ভাব্য ভবিষ্যৎ এর প্রতি যত্নবান।

৪। প্রস্তুত না হয়ে ইন্টারভিউ দিতে যাওয়া

আপনাকে চাকরি পেতে হলে ইন্টারভিউ কে টেক্কা দিতে হবে, কিন্তু নিয়োগ পরিচালকদের মতে অনেক প্রার্থী আছে যারা নিজেদের সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে পারেনা।তাই আপনাকে ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় আপনার বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ঠিক রাখতে হবে,কোম্পানিটির জন্য প্রযোজ্য এমন প্রশ্ন-উত্তর জেনে আসতে হবে,এবং সর্বদা পরিচিত প্রশ্নের উত্তরগুলো সম্পর্কে অবগত থাকতে হবে।এবং অবসশই ১৫মিনিট আগে ইন্টারভিউ দিতে আসতে হবে তবে অনেক বেশি আগে না।

৫। অনলাইন প্রোফাইল মার্জিত না রাখা

অধিকাংশ মানুষ এটা নিয়ে সচেতন যে নিয়োগকর্তারা অনেক সময় চাকরি প্রার্থীদের সামাজিক যোগাযোগের প্রোফাইল চেক করেন এমনকি এর ফলে মাঝে মাঝে অনেক প্রার্থী বাদ পড়ে যায় তাদের ত্রুটিপূর্ণ প্রোফাইলের কারনে।তাই আপনার সামাজিক নেটওয়ার্কের প্রোফাইল যথাযথ মার্জিত রাখুন এবং এমনকিছু যেন না থাকে যা আপনার জন্য খারাপ আলোর নিদর্শনস্বরূপ।

৬। চাকরি খোঁজা গোপন না রাখা

অনেক সময় এটা অনুমান করা হয় যে আপনি যখন মনে মনে আপনার বর্তমান চাকরিটি ছেড়ে দেওয়ার কথা ভাববেন তখন সেটা আপনার বস জানলে কিছু সমস্যা হতে পারে।যেমন আপনার বস আপনার সাথে এমনকিছু আচরন করতে পারে যা আপনার জন্য বিরক্তিকর।তবে বিষয়টি আপনার বস কেমন তার উপর নির্ভর করে।আপনাকে গোপনে চাকরি খুঁজতে হবে।আপনি আপনার খোঁজ করাটা গোপন রাখবেন এমনকি যখন নিয়োগকর্তা তদন্ত চালান।আপনি আপনার চাকরি খোঁজার আগেই লিঙ্কডইন সেটিং পরিবর্তন করেছেন কিনা নিশ্চিত হবেন।

৭। অযাচিত রিজিউমি পাঠানো

যদি আপনি এমন কোন কোম্পানি খুঁজে পান যেখানে আপনি কাজ করতে ইচ্ছুক এবং সেখানে কাজ করে এমন কারও যোগাযোগের তথ্য আপনার কাছে আছে তাহলে খুবই ভালো।এ ক্ষেত্রে আপনি ‘আমি কি আপনাদের কোম্পানিতে একটি চাকরি পেতে পারি,আমি কি যোগ্য’ এমনকিছু বলে রিজিউমি পাঠাবেন না।এটি একটি বড় ভুল চাকরি খোঁজার ক্ষেত্রে যা আপনি করতে পারেন।আপনি যোগাযোগ করেন যে সেখানে চাকরির জন্য আবেদন করা যাবে কিনা।অতপর তারা যদি সুপারিশ চায় বা রিজিউমি চায় তাহলে তো ভালো।তবে তাদেরকে সিদ্ধান্ত নিতে দিন তারা কি করবে আর কি করবে না।

৮। একটি জবে প্রবেশ করেই অন্য চাকরির খোঁজ না করা

যথাযথ সময় বিবেচনা না করে নতুন চাকরি খোঁজা একটি বড় ভুল।আপনার একটা চাকরি আছে এবং সেই চাকরিটিও বন্ধ করতে চান না তারপর ও আপনি নতুন চাকরি খুঁজছেন।এ ক্ষেত্রে আপনি কমপক্ষে ১৮মাস পরে নতুন চাকরির জন্য খোঁজ করবেন।একটি চাকরিতে কয়েক বছর কর্মরত থাকলে পেনশন দেওয়া হয়।আপনার কাজ যাই হোক না কেন যতক্ষণ পর্যন্ত নিজের পায়ে দাঁড়িয়ে থাকতে পারবেন ততক্ষণ পর্যন্ত আপনি আপনার পরবর্তী চাকরি খোঁজার জন্য প্রস্তুত হবেন।