অ্যামেলিয়া এয়ারহার্ট অন্তর্ধান রহস্য : সম্ভাবনা রয়েছে দেহাবশেষ খুঁজে পাওয়ার…

অ্যামেলিয়া এয়ারহার্টের নাম শুনেছেন কি কখনো? নিশ্চয়ই শুনে থাকবেন কেননা, তিনিই প্রথম নারী যিনি একা আকাশপথে আটলান্টিক মহাসাগর পাড়ি দিয়েছিলেন। ১৯৩৭ সালে তাঁর বিশ্বভ্রমণের সময় তিনি রহস্যজনকভাবে উধাও হয়ে যান। ধারণা করা হয়, প্রশান্ত মহাসাগরে তাঁর বিমানটি ডুবে গিয়েছিলো।

দি ইন্টারন্যাশনাল গ্রুপ ফর হিস্টোরিক এয়ারক্রাফট রিকভারি (TIGHAR) এর রিক গিলসপাই অবশ্য মনে করেন, এয়ারহার্ট আরও করুণ কোন পরিণতির শিকার হয়েছেন। বিশ্বভ্রমণ শুরুর চার মাসের মধ্যে তাঁর বিমানের জ্বালানি ফুরিয়ে আসে। এয়ারহার্ট তখন হাওল্যান্ড দ্বীপের সন্ধান করছিলেন। বিমানের অন বোর্ড এঞ্জিনিয়ার এবং ইয়ারহার্ট- উভয়কেই জুনের দুই তারিখে শেষবারের মত রাডারে দেখা গিয়েছিল। গিলসপাই বিশ্বাস করেন, প্রশান্ত মহাসাগরের কোন এক দ্বীপে বিমান আছড়ে পড়ে তাঁদের মৃত্যু হয়েছিল। তিনি আরও জানান যে, তাঁরা নিকুমারোরো দ্বীপে ল্যান্ড করেছিলেন, যা হাওল্যান্ড দ্বীপ থেকে প্রায় চারশত মাইল দক্ষিণপূর্বে অবস্থিত।

জানা যায়, বিমানটি থেকে জুনের দুই থেকে ছয় তারিখের মধ্যে একশত বার ডিসট্রেস কল এসেছিল, যা পৃথিবীব্যাপী মানুষ শুনতে পেয়েছিল। টেক্সাসের বাসিন্দা এক গৃহিণী জানান- এয়ারহার্ট বলছিলেন তিনি আংশিকভাবে পানিতে ল্যান্ড করেছেন।blank

গিলসপাই বলেন- এয়ারহার্ট নিশ্চয়ই উড়োজাহাজে জ্বালানি অবশিষ্ট থাকতেই ল্যান্ড করেছিলেন,যার ফলে তিনি ডিসট্রেস কলগুলো করতে সক্ষম হয়েছিলেন।এয়ারহার্ট বলছিলেন, তিনি নিজে আঘাতপ্রাপ্ত, তবে এঞ্জিনিয়ার নুন্যানের অবস্থা আরও সঙিন। তবে, তাঁরা দ্বীপে থাকাকালীন সময়ে কেউ তাঁদের রক্ষার্থে এগিয়ে আসেনি।

Gerald Gallagher, একজন ব্রিটিশ কর্নেল অফিসার ১৯৪০ সালে ঐ একই দ্বীপে একটি কংকাল খুঁজে পান। সে সময় কংকালটি ফিজিতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় এবং সেখানে পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সেটিকে একটি পুরুষের কংকাল হিসেবে সনাক্ত করা হয়। ১৯৯৮ সালে পুনরায় এটিকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে জানানো হয় যে, সম্ভবত এটি কোন লম্বা, শ্বেতকায় নারীর কংকাল। উল্লেখ্য যে, মাঝখানের এই বছরগুলোতে কংকালের হাড়গুলো হারিয়ে গিয়েছিলো।

blank
অ্যামেলিয়া ও ন্যুনান

TIGHAR সদস্যরা দ্বীপে ১৯৩০ সালের বৈশিষ্ট্যপূর্ণ অ্যালুমিনিয়াম প্যানেলিং ফিটিং, প্লেক্সিগ্লাস বল বেয়ারিংয়েরও সন্ধান পান; যা খুব সম্ভবত অ্যামেলিয়ার বিমানেরই অংশ ছিল। তারা এমন একটি জুতোর হিলও খুঁজে পান, যেটির সঙ্গে অ্যামেলিয়ার বিশ্বভ্রমণের ছবিতে তাঁর পায়ে থাকা জুতোর মিল পাওয়া যায়।

গোটা বিমানটির সন্ধান অবশ্য এখনো পাওয়া যায়নি। গিলসপাইয়ের মতে, বিমানটি স্রোতের টানে ভেসে সমুদ্রে ডুবে গিয়েছে। তাই এয়ারহার্টের হারিয়ে যাওয়ার আশিতম বর্ষপূর্তিতে সাবমেরিন পাঠিয়ে এ সম্পর্কে আরও বিশদ অনুসন্ধান চালানোর পরিকল্পনা করছে TIGHAR. আশা করা যাচ্ছে, এসব অনুসন্ধানের ফলেই প্রকৃত ঘটনা জনসমক্ষে বেরিয়ে আসবে।

Source:www.thevintagenews.com