ক্যারিয়ারের শুরুটা হোক সফলতার বুনিয়াদ

personal-development

ইউনিভার্সিটি বা কলেজ থেকে পাস করার পর সবাই নিজের ক্যারিয়ার মনের মত করে গোছানোর স্বপ্ন দেখে । কেউ সেই স্বপ্নের পাড়ে তরী ভেরাতে পারে , কেউ পারেনা । যারা পারে না তারা হতাশায় ভোগে এবং লক্ষ্যচ্যুত হয়ে ঝরে পড়ে। আবার কেউ স্বপ্নের তরীতে ভীরে রিলাক্সে থাকে ,আত্ন উন্নয়নে তাদের কোন চিন্তাভাবনা বা পরিকল্পনা থাকেনা। কিন্তু বর্তমান প্রতিযোগিতামূলক চাকরির বাজারে সফলতার শিখরে উঠতে হলে পেশাগত দক্ষতা এবং মানসিক ও শিক্ষাগত আত্ন উন্নয়নের কোন বিকল্প নেই । শিক্ষাগত আত্ন উন্নয়ন শুরু করা উচিৎ অন্তত গ্রাজুয়েশনের শুরু থেকে । সেই সাথে মানসিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কিছু অভ্যাস গড়ে তোলা প্রয়োজন। এই দক্ষতাগুলো ক্যারিয়ারের শুরু থেকেই সফলতার বুনিয়াদ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে ।

শিক্ষাগত আত্ন উন্নয়নঃ

ইউনিভার্সিটি বা কলেজে পড়াশোনার পাশাপাশি কম্পিউটারে দক্ষতা, ইংরেজি ও অন্যান্য ভাষায় ভাষাগত দক্ষতা অর্জন অত্যন্ত জরুরি , এই কথা বলার কোন অপেক্ষা রাখেনা ।তাই সম্ভব হলে এমএস অফিস, হার্ডওয়ার ,সফটওয়ার , গ্রাফিক্স শিখে রাখাটা জরুরি ।সম্ভব হলে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কম্পিউটারের উপর স্বল্পমেয়াদী ডিপ্লোমা কোর্স করিয়ে থাকে , তা করা যেতে পারে অথবা বাড়িতে বসে শেখার জন্য ইউটিউব বা বিভিন্ন অনলাইন ভিডিও পেজের সাহায্য নেয়া যেতে পারে । ইংরেজিতে দক্ষতা অর্জনের জন্য আইএলটিএস এর কোন বিকল্প নেই । এতে বলা,লেখা,শোনা এবং বোঝায় দক্ষতা অর্জন সম্ভব। এছাড়া বিদেশে উচ্চতর পড়াশোনা বা স্কলারশিপের ক্ষেত্রে অন্যতম ভূমিকা রাখে এটা বলার অপেক্ষা রাখেনা। অন্যান্য ভাষার শেখার জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান রয়েছে । চাইলে ঐ প্রতিষ্ঠান গুলোতে গিয়ে শেখা যায় । আজকাল স্মার্টফোনে এই ভাষাগত দক্ষতা অর্জনের জন্য বিভিন্ন অ্যাপস পাওয়া যায় , যা ডাউনলোড করে নিজে নিজে অনুশীলন করা যায়।

মানসিক উন্নয়নঃ

ছাত্রজীবন থেকে মানসিক দক্ষতা এবং উন্নয়নে কাজ করা উচিত।কারণ পেশাগত জীবনটা খুব একটা সহজ নয় । এখানে বিভিন্ন মানসিকতাসম্পন্ন মানুষের সাক্ষাৎ পাওয়া যাবে এবং প্রচুর পরীক্ষার সম্মুখীন হতে হবে যেখানে ইচ্ছাশক্তি ও ধৈর্যের পরিচয় দিতে হয়। তাই প্রথম থেকেই পজিটিভ থিঙ্কিং এর অনুশীলন করা উচিত। এছাড়া লিডারশীপ এর দক্ষতা এবং টিম মেম্বার হিসেবে লক্ষ্য অর্জনে দক্ষতা অর্জনের জন্য কলেজ বা ইউনিভার্সিটিতে বিভিন্ন ভলান্টিয়ার ক্লাব, এসোসিয়েশন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বর্তমানে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান লিডারশীপ প্রোগ্রাম এবং বিজনেস আইডিয়া প্রতিযোগিতার আয়োজন করে থাকে যেখানে নিজেকে ঝালাই করে নেওয়ার সুযোগ থাকে।

পেশাগত দক্ষতা উন্নয়নঃ

পেশাগত জীবনের শুরুটা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ । কারণ শুরু থেকেই প্রথম কয়েক মাস এমনকি এক বছরকে বলা যায় কঠোর সময়। এই সময়ের প্রতিটি মুহূর্ত অত্যন্ত দামি। এই সময়ে আপনি যাই শিখবেন তা ভাল হোক বা খারাপ হোক তা আপনার জন্য মূল্যবান অভিজ্ঞতা। যা আপনি পরবর্তীতে কাজে লাগাতে পারেন অথবা পরিবর্তন করতে পারেন। অনেকে ছাত্রজীবনে অতি মাত্রায় বেতনের এবং অফিসের পরিবেশের ব্যাপারে উচ্চাকাঙ্ক্ষী থাকে ।যখন প্রত্যাশা অনুযায়ী মিলেনা তা পরবর্তীতে হতাশার জন্ম দেয়। কিন্তু প্রথম থেকেই এটা মাথায় রাখা উচিত বেতন যাই হোক না কেন আপনি কাজকে উপভোগ করছেন কিনা এবং ভালভাবে শিখতে পারছেন কিনা। মনে রাখবেন , অফিসের সিনিয়র থেকে জুনিয়র এমনকি পিয়ন থেকেও শেখার অনেক কিছু আছে।পেশাগত জীবনে সব মানুষ সমান নয় । এখানে কেউ আপনাকে কাজ শেখাবে ,কেউ শেখাবেনা । তাই যেভাবে হোক না কেন অভিজ্ঞতায় পালক আপনাকে লাগাতে হবে। এছাড়া পেশাগত দক্ষতা অর্জনের জন্য পেশার সাথে সম্পর্কিত বিভিন্ন কর্মশালা বা ট্রেনিং এ অংশগ্রহণ করতে পারেন । এক্ষেত্রে আপনার বেতন থেকে একটা অংশ ট্রেনিং এর জন্য বাজেট হিসেবে রাখতে পারেন । ব্যবসার জন্য যেমন মূলধন বিনিয়োগ করতে হয় ঠিক তেমনি চাকরি জীবনের শুরুতেও আপনার ইচ্ছাশক্তি এবং শ্রম বিনিয়োগ প্রয়োজন।

অনেকে ক্যারিয়ারের শুরুতে কম পরিশ্রমে সফলতার চূড়ায় আরোহণ করতে চায় । কিন্তু সফলতা অর্জন সময়সাপেক্ষ ব্যাপার । সবার পক্ষে মার্ক জুকারবারগ হওয়া যেমন সম্ভব নয় , তেমনি বিল  গেটস , স্টিভ জবস বা সুন্দর পিচাইয়ের মত সফলতা অর্জন করার জন্য নিজের ইচ্ছাশক্তি , ধৈর্য এবং পরিশ্রমের দ্বিতীয় কোন বিকল্প নেই।