বিলাসবহুল বাড়ি যখন মাটির নিচে!

জনসংখ্যা প্রতি বছর বৃদ্ধি  পাচ্ছে। টলকিনের গল্প থেকে Hobbits এর মত ভূগর্ভস্থ ঘরবাড়ি  এখন শুধু বইয়ের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। মানবজাতি আগেও গুহায় বাস করত।আর বর্তমানে আমরা উপলব্ধি করি ভূগর্ভস্থ বাড়ি  প্রকৃতপক্ষে বাস করার জন্য  খুব পরিবেশবান্ধব উপায়। আজ থাকছে সেরকমই কয়েকটি মাটির নিচের বাড়ির গল্প।

বোল্টনের ভূগর্ভস্থ বাড়ি

ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড ফুটবল দলের প্রাক্তন অধিনায়ক এই পরিবেশ বান্ধব ভূগর্ভস্থ বাড়ি নির্মাণের পরিকল্পনার কথা ঘোষণা করেছিল।এই ব্রিটিশ ফুটবল তারকা গ্যারি নেভিলের অধিবাসী ছিল।বাড়িটি অবস্থিত যুক্তরাজ্যের   বল্টনে পেনিইন পাহাড়ের কাছে।বাড়িটির  আকৃতি ছিল  ফুলের পাতার মত।এটি 8,000 বর্গ ফুট জুড়ে বিস্তৃত।এর ভিতরে ছিল ৪ টি শয়নকক্ষ।পুরো ঘরটি ঢোকা এবং  আলোকিত করার জন্য  ফুলের পাপড়ির  আকৃতির  খোলাগুলি ব্যতীত বাকিটা ছিল মাটির নিচে।বাড়িটি যেমন পরিবেশ বান্ধব তেমনি দেখতেও আকর্ষণীয়।

গুহা বাড়ি

এই আধুনিক বাড়িটি মিসৌরির ফেস্টাসের মধ্যে বালিস্টন গুহার মধ্যে নির্মিত ।১৫০০ বর্গ ফুটের ঘরটি Curt এবং ডেবোরা স্লিপার দ্বারা নির্মিত।এতে চারটি শয়নকক্ষ  এবং তিনটি চেম্বার রয়েছে।এটি এমন ভাবে তৈরি হয়েছে যেন কোন এয়ার কন্ডিশনার বা চুল্লীর কোন প্রয়োজন নেই।এই স্থানটি পূর্বে একটি কনসার্টের স্থান এবং একটি বেলন স্কেটিং রিঙ্ক হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছিল।এটি একটি প্রাইভেট বাসভবন হয়ে উঠার আগে  নিলামের মাধ্যমে খ্যাতি অর্জন করে।

সিক্রেট হাউস

পোল্যান্ডের লোয়ার সিলেসিয়াতে অবস্থিত ভূগর্ভস্থ সিক্রেট হাউস।KWK Promes এই বাড়িটির ডিজাইন করেন।ঘাসে আচ্ছাদিত একটি বিশাল ট্র্যাপডোরকে প্রবেশদ্বার হিসেবে বানানো হয়।এটি এমনভাবে ডিজাইন করা হয়েছে যাতে বাড়ির ভিতরে বাসিন্দারা ঘাসযুক্ত ছাদ দিয়ে সিঁড়ির মাধ্যমে ভিতরে প্রবেশ করতে পারে।এটি বাইরে দিয়ে দেখতে অনেকটা বাগানের মত লাগে।

সুইজারল্যান্ডের ভূগর্ভস্থবাড়ি

সুইস ভেটসেক আর্কিটেক্ট দ্বারা নির্মিত সুইজারল্যান্ডের এই বাড়িটি পাহাড়ের পাদদেশে  নির্মিত ।মূলত ৯টি বাড়ি নিয়ে এই গঠিত এই ভূগর্ভস্থবাড়ি যা কিনা পরস্পর সংযুক্ত এবং সিঁড়ির মাধ্যমে প্রতিটি বাড়ি বেসমেন্টের নিচে নেমে যায়।এমনকি একটি ভূগর্ভস্থ পার্কিং লট ও আছে।এই ঘরগুলি মাটির নিচে অবস্থানের ফলে বৃষ্টি, চরম তাপমাত্রা, বায়ু এবং অন্যান্য দুর্যোগ থেকে রক্ষা করে।

যুক্তরাষ্ট্রের স্যাডাম হাউস   

উত্তর  নর্থ নরফোক  উপকূলের পাহাড়ের পাদদেশে বাসাটি এমনভাবে নির্মাণ করা হয় যেন সূর্যের আলো ভালভাবে বিকশিত হতে পারে। ভূগর্ভস্থ বাড়িটি পরিবেশ বান্ধব।খুব সহজেই বাড়িটি গরম এবং শীতল হতে পারে।এটি দক্ষিণমুখী বাড়ি।পাঁচটি বেডরুম আছে বাড়িটিতে।বাসস্থানের স্থানটিতে বিশাল এক কাচের দরজা রয়েছে।একটি কাঠের বারান্দায় ও দুটি ভিন্ন কক্ষ ও কাচের প্যানেল রয়েছে যা দিয়ে পুরো ঘরে বায়ুচলাচল ব্যবস্থা করা হয়েছে।এই ঘর দেখার জন্য অনেকেই এখানে বেড়াতে আসে।

গ্রীসের পাথরের ঘর

গ্রিসের তীব্র শুষ্ক মরুভূমির আড়ালে  এই অর্ধ-ভূগর্ভস্থ পাথরের বাড়িটি পরিবেশ বান্ধব।পাশাপাশি দুই পার্শ্ববর্তী ঢালাই পাহাড়ের মধ্যে সরাসরি নির্মিত  এই ঘর দীর্ঘ আয়তক্ষেত্রাকার গঠন আকৃতির।এই বাড়িটি এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে যেন আসেপাশের মানুষজন বাড়িটির কিছুই দেখতে না পায়।দেখতে অনেকটা একটি পরিত্যক্ত কাঠামো হিসাবে মনে হয়।বাড়িটির ভিতরে একটি সংযোগ সেতু রয়েছে। ক্লাসিক্যাল গ্রিক স্থাপত্যের  সাথে Deca দ্বারা নির্মিত এই বাসভবনটির কোন মিল নাই।Deca দ্বারা ডিজাইন করা এই আয়তক্ষেত্রাকার কাঠামো প্রাকৃতিক আলো এবং তাপ ব্যবহার করে পরিবেশ বান্ধব করা হয়েছে।

ইরানের গুহাবাড়ি

৭০০ বছরের পুরনো এই গুহা বাড়িগুলা ইরানের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পাহাড় মাউন্ট সাহান্ডের পাদদেশে অবস্থিত।এলাকাটি প্রাগৈতিহাসিক সময়ের মত দেখতে লাগলেও এতে আধুনিক দরজা এবং জানালা লাগিয়ে আধুনিক কক্ষ হিসেবে গড়ে তোলা হয়েছে।এটি আসলেই একটি হোটেল ও রেস্টুরেন্ট।ঘরগুলি আগ্নেয় শিলা থেকে তৈরি করা হয়েছিল।

কুমারিয়াআন্ডারগ্রাউন্ড হাউস

ইংল্যান্ডের কুমারিয়ার আন্ডারগ্রাউন্ড হাউস    নির্মাণ করেছিল ফিল এবং হেলেন রেড্ডি।বাড়িটি ডিজাইন করেছিল জন বোডার ।কুমারের ইডেন উপত্যকায় একটি ঢালের উপর দাঁড়িয়ে থাকা একটি পুরানো খননস্থলের উপর ভিত্তি করে তারা এই বাড়ি  নির্মাণ করেছিল।এপ্রিল ২00২ সালে হেলেনের পশু চিকিৎসার জন্য আলাদা একটি ক্লিনিকও তৈরি করে।