বছর ঘুরে বছর আসে, সবাই আবার নতুন আশা বুনতে বসে। ক্রীড়াপ্রেমীরাও স্বপ্ন দেখে নতুন দিনে নতুন শুরু করবে তাদের দল। ২০১৯ সালের ব্যর্থতার গ্লানি কাটিয়ে ২০২০ সালে শক্তিশালী হয়ে ফিরবে বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দল- এই আশায় সবার মনে। গত বছরটা খুব একটা ভালো কাটেনি বাংলাদেশ দলের, এই বছরে তাই ফেরার লড়াইয়ে থাকবে টাইগাররা। সাকিব আল হাসানকে ছাড়া হয়তো কঠিনই হতে যাচ্ছে সে কাজটা।
২০১৯ সালে নিউজিল্যান্ড সফর দিয়ে বছর শুরু করেছিল বাংলাদেশ আর শেষ করে ভারত সফর দিয়ে। শুরু এবং শেষ দুই সিরিজেই হার মানতে হয়েছিল টাইগারদের। তবে মাঝে কিছু সুখস্মৃতি আছে, যেমন আয়ারল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজকে পরাজিত করে প্রথমবারের মতো ত্রিজাতি সিরিজের ট্রফি জয়, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শুরু, ভারতকে প্রথমবারের মতো হারানো। তবে সাফল্যের চেয়ে ব্যর্থতার পাল্লাটায় ভারী ছিল। দ্বাদশ বিশ্বকাপসহ পুরো বছরে তিন সংস্করণ মিলিয়ে গত বছর মোট ৩৪টি ম্যাচ খেলেছিল বাংলাদেশ দল, যেখানে জয় ছিল মাত্র ১১টিতে। ব্যর্থতাটা বেশি চোখ পড়েছিল সাদা পোশাকে, ভারত এমনকি নবাগত আফগানিস্তানের কাছেও লজ্জার হার মানতে হয়েছিল।
সেসব ব্যর্থতা পেছনে ফেলে নতুন উদ্যমে নতুন দিন শুরুর আশায় বাংলাদেশ। এই বছরে এশিয়া কাপ ও টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ বাদে মোট ২৮টি ম্যাচ খেলার কথা রয়েছে বাংলাদেশের। টাইগারদের ২০২০ সালের শুরু হয়েছে পাকিস্তান সফর দিয়ে।

পাকিস্তান সফরের পরে আবার বাংলাদেশের ম্যাচ আছে আগামী মার্চ মাসে, জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে। মোটামুটি নিশ্চিত যে একটি টেস্ট ও ৫ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি ম্যাচ খেলতে বাংলাদেশ সফরে আসবে জিম্বাবুয়ে। ঘরের মাঠের এই সিরিজ শেষে আবার উড়াল দিতে হবে বাংলাদেশকে। মে মাসে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে তিন ম্যাচের ওয়ানডে ও ৪ ম্যাচের টি-টোয়েন্টি সিরিজ খেলবে। আইরিশদের মাটিতে ওয়ানডে ম্যাচগুলো হবে যথাক্রমে ১৪ মে, ১৬ মে এবং ১৯ মে। টি-টোয়েন্টি সিরিজটি ইংল্যান্ডের মাটিতে আয়োজনের কথা রয়েছে, তাই এখনো চূড়ান্ত তারিখ ঘোষণা করা হয়নি।
তারপরে আবার ঘরের মাঠে ফিরবে টাইগাররা, পরবর্তী ৪ মাস সাদা পোশাকে ব্যস্ত থাকবে। প্রায় তিন বছর পরে আবারো অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে টেস্ট সিরিজ খেলার কথা বাংলাদেশের। এবারো বাংলাদেশের মাটিতেই হবে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের অংশ এই সিরিজ। ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে জুন মাসে বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে অস্ট্রেলিয়ার। জুলাই মাসেই তিন ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে শ্রীলঙ্কা সফর করবে বাংলাদেশ। আগস্ট মাসে লঙ্কান সফর শেষ হওয়ার কথা। ওই মাসেই আবার ফিরতি সফরে বাংলাদেশে আসবে নিউজিল্যান্ড, ২ ম্যাচের টেস্ট সিরিজ খেলতে।
সেপ্টেম্বর মাসে আবার টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে ফিরবে বাংলাদেশ, ওই মাসেই আয়োজন করা হবে টি-টোয়েন্টি সংস্করণের এশিয়া কাপ। সামনেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়ায় এবারের এশিয়া কাপও হবে টি-টোয়েন্টি সংস্করণে।
তারপরের মাসেই অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ মিশন। বিশ্বকাপের প্রথম পর্বে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচ ১৯ অক্টোবর নামিবিয়ার বিপক্ষে। প্রথম পর্বের পরবর্তী দুইটি ম্যাচ ২১ ও ২৩ অক্টোবর যথাক্রমে নেদারল্যান্ডস ও স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে। সবগুলো ম্যাচই অনুষ্ঠিত হবে হোবার্টে।

এই অক্টোবরেই আবার নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে ফেরার কথা রয়েছে বাংলাদেশের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসানের। বাংলাদেশ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দ্বিতীয় পর্বে উঠলে হয়তো বিশ্বকাপে কয়েকটা ম্যাচ খেলার সুযোগ পেতে পারেন এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার।
বছরের শেষ লগ্নে ডিসেম্বর শ্রীলঙ্কার বাংলাদেশ সফরে আসার কথা রয়েছে। এই সফরে শুধু একদিনে ম্যাচ থাকবে, তিন ম্যাচের ওয়ানডে সিরিজ খেলতে আসবে লঙ্কানরা।
একনজরে ২০২০ সালে বাংলাদেশের সূচি:
সময়কাল | ম্যাচ | ভেন্যু |
জানুয়ারি | ৩ টি-টোয়েন্টি ও ২ টেস্ট | পাকিস্তান (সম্ভাব্য) |
মার্চ | ১ টেস্ট ও ৫ টি-টোয়েন্টি (জিম্বাবুয়ে) | বাংলাদেশ |
মে | ৩ ওয়ানডে ও ৪ টি-টোয়েন্টি | আয়ারল্যান্ড |
জুন | ২ টেস্ট (অস্ট্রেলিয়া) | বাংলাদেশ |
জুলাই-আগস্ট | ৩ টেস্ট | শ্রীলঙ্কা |
আগস্ট-সেপ্টেম্বর | ২ টেস্ট (নিউজিল্যান্ড) | বাংলাদেশ |
সেপ্টেম্বর | টি-টোয়েন্টি সংস্করণ | এশিয়া কাপ |
অক্টোবর-নভেম্বর | টি-টোয়েন্টি সংস্করণ | অস্ট্রেলিয়া |
ডিসেম্বর | ৩ ওয়ানডে (শ্রীলঙ্কা) | বাংলাদেশ |