শীতে চুলের যত্ন : জেনে নিন রুক্ষতার হাত থেকে বাঁচার যত উপায়…

প্রকৃতির কেমন নিয়ম দেখুন দেখতে দেখতে দরজায় চলে এসেছে শীত। আর শীত কাল মানেই প্রকৃতির সাথে একরাশ শুষ্কতা যোগ হওয়া। প্রকৃতির এই শুষ্কতার পাশাপাশি আমাদের জন্য নিয়ে আসে চুলের শুষ্কতা ও অনুজ্জ্বলতা।  আর এই শুষ্ক ও অনুজ্জ্বল চুলের জন্য আমরা সর্বদায় চিন্তিত থাকি। কিভাবে চুলকে উজ্জ্বল করা যায়। এসময়ে দরকার বাড়তি কিছু যত্ন। শীতে সহজ কিছু পদ্ধতি অনুসরন করলেই  চুল উজ্জ্বল, মসৃন রাখা যায়। আসুন জেনে নেই কিভাবে শীতে চুলের যত্ন করতে হবে।

১.বাতাসে আর্দ্রতা কম থাকার কারণে শীতে চুল হয়ে উঠে রুক্ষ এবং খুশকির সমস্যা দেখা দেয়। এই সময় খুশকির সমাধানে ভালো শ্যাম্পু ব্যবহার করতে হবে।

২.চুল সাধারণত দু’রকম, তৈলাক্ত ও শুষ্ক। তৈলাক্ত চুলের ক্ষেত্রে চুল সবসময় পরিষ্কার রাখা জরুরি। একদিন অন্তর অন্তর চুলের উপযোগী শ্যাম্পু দিয়ে চুল ধুতে হবে। আর শুষ্ক চুলের ক্ষেত্রে হটওয়েল থেরাপি ভালো কাজ করে। সামান্য গরম অলিভ অয়েল চুলের গোড়ায় ম্যাসাজ করে তারপর গরম পানিতে তোয়ালে ভিজিয়ে মাথায় জড়িয়ে রাখতে হবে। এরপর চুলের উপযোগী শ্যাম্পু ব্যবহার করে চুল ধুয়ে ফেলতে হবে।

৩.রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পারলে নিয়ম করে বসে চুল আঁচড়াবেন। এতে চুল পড়া বন্ধ হবে এবং আপনি মানসিক চাপমুক্ত হয়ে ঘুমাতেও পারবেন।

৪.শীত কালে অনেকেরই চুল রুক্ষ হয়ে যায় এং আগা ফেটে যায়। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে শীতের রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চুলে নারিকেল তেল বা অলিভ অয়েল গরম করে ম্যাসাজ করেন নিন। চুলের আগায় ও গোড়ায় ভালো করে হালকা গরম তেল ম্যাসাজ করে ঘুমিয়ে যান। সারা রাত চুলে তেলের উপস্থিতিতে চুলের রুক্ষ ভাব কেটে যাবে এবং চুল হয়ে উঠবে ঝলমলে উজ্জ্বল।

৫.ভিটামিন-ই চুলের জন্য অনেক ভালো। ২ দিন পর পর যেকোন তেলের সাথে ভিটামিন-ই ক্যাপসুল ভেঙ্গে এর তেলটি মিশিয়ে মাথায় ভালো ভাবে লাগিয়ে ২-৩ ঘণ্টা রাখতে হবে। সারারাত রাখলে ভালো হয়। সকালে ধুয়ে ফেলতে হবে। তবে বেশি গরম পানি দিয়ে কখনো চুল ধুয়া উচিত না।

৬.শীতকালে ত্বকের ও চুলের যত্নে কিন্তু আপনাকে খাওয়া-দাওয়ার ব্যাপারেও মনোযোগী হতে হবে। শীতের শাকসবজি ও ফল সুন্দর স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক ও চুলের জন্য প্রয়োজন। শিম, বরবটি, নানারকম শাক, মটরশুঁটি, ফুলকপি ইত্যাদি প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় রাখুন। হাতের নাগালের সব ফলই প্রতিদিন খাবেন। যেমন-আপেল, আমলকী কিংবা আমড়া ইত্যাদি ফলমূল।

৭.শীতে এইসহজ কিছু পদ্ধতিগুলো অনুসরন করলেই ত্বক এবং চুল উজ্জ্বল, মসৃন রাখা যায়।আরো একটা কাজ করতে পারেন, যদি অনেক বেশি খুশকি হয় তাহলে আমলকীর গুড়া বাজার থেকে কিনে হালকা গরম পানি নিয়ে ৩০ মিনিট আগে গুড়াটা ভিজিয়ে রেখে, ভাল ভাবে ভিজে গেলে মাথায় সব জায়গায় লাগিয়ে ১৫-২০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করলে চুল অনেক ঝলমল ও খুশকিমুক্ত হবে।

৮.নিয়মিত চুলের ডগা ছেটে চুল ফেটে যাওয়া রোধ করুন। এক্ষেত্রে প্রতি ছয় থেকে আট সপ্তাহ পর পর এ কাজটি করতে পারেন।

blank

৯. চুলকে শীতের প্রকোপ থেকে বাঁচতে প্রয়োজনে স্কার্ফ ব্যবহার করুন।

১০. চুল বেঁধে রাখুন শীতের শুষ্ক বাতাসে বাইরে ঘোরাঘুরি করলে চুল বেঁধে রাখুন। এ সময় চুল ছেড়ে রাখলে তা রুক্ষ হয়ে যেতে পারে।

এতো গেল স্বাভাবিক যত্ন, বেশি সুন্দর ঝলমলে চুল চাইলে তো নিতে হবে বাড়তি একটু যত্ন। ঘরের তৈরি প্যাক নিয়মিত ব্যবহারে আমরা ফিরে পেতে পারি চুলের হারানো সৌন্দর্য সেই সাথে দূর করতে পারি খুশকিও। যা করতে হবে-

১।মেহেদি পেস্ট-১ টেবিল চামচ, টক দই-১ টেবিল চামচ, ডিম ১ টি, মধু- ১ চা চামচ একসঙ্গে নিয়ে প্যাক তৈরি করুন। এই প্যাক পুরো চুলে ৩০ মিনিট রেখে শ্যাম্পু করুন।
২।পেঁয়াজের রস-১ টেবিল চামচ, লেবুর রস এবং মসুরের ডাল বাটা দিয়ে পেস্ট তৈরি করে চুলে মেখে আধা ঘণ্টা রাখুন। এবার খুশকি মুক্ত শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার দিয়ে চুল ধুয়ে নিন।

নিয়মিত যত্ন নিলে খুশকি মুক্ত সুন্দর চুল নিয়ে আনন্দে কাটানো যাবে আপনার প্রিয় মুহুর্তগুলো।