ইলুমিনাতি- পৃথিবী কি ধ্বংস হবে এদেরই হাতে?


ইলুমিনাতিই কি পৃথিবী ধ্বংসের মূল কারণ হবে?  তাদের প্ল্যান শুনলে খুবই অবাক হবেন… এক কথায় বলছি, তাদের প্ল্যান হলো সারা পৃথিবীতে তারা কর্তৃত্ব স্থাপন করবে, এবং এর জন্যে তাদের মূল প্ল্যানিং হলো পৃথিবীর সভ্যতা ধ্বংস করা…

পৃথিবীতে মুসলিমরা বরাবরই সম্পদশালী ছিল, এর প্রমাণ খুঁজতে বেশি দূরের ইতিহাস ঘাঁটতে হবেনা, আপনারা ২০-২৫ বছর পূর্বের মধ্যপ্রাচ্যের চিত্র দেখলেই বুঝবেন… বর্তমানের ইরাক-সিরিয়া-লেবানন-মিশরের প্রতিটা বাড়িই ছিল রাজপ্রাসাদের মত, রাস্তাঘাটের সৌন্দর্য দেখলে মনে হবে আপনি স্ব্ররগের একটা টুকরায় অবস্থান করছেন… এবং এসবই সম্ভব ছিল তখনকার মুসলিম নেতাদের অনেকটা আপোষহীন শাসন ব্যাবস্থা…

সবকিছুরই যেমন ভালোমন্দ আছে, তেমনি স্বৈর শাসনেরও কিছু ভালো দিক আছে, যদি সেই দেশের শাসক ভালোমনের অধিকারী হয়ে থাকে… মধ্যপ্রাচ্যের যেসব দেশে সৈরশাসন জারি ছিল, সেসব দেশের মানুষকে প্রথমে এইভাবে ব্রেইনওয়াশ করা হয় যে তারা তাদের চাওয়া-পাওয়া এই সরকার ব্যাবস্থার মাধ্যমে পূরণ করতে পারবেনা… বোকা মুসলমানরা সেই ফাঁদে পা দিয়ে পশ্চিমাদের জালে আটকে যায় এবং পশ্চিমারা শান্তির দূত সেজে সেখানকার মানুষের দাবী পূরণে জাতিসংঘের মাধ্যমে যুদ্ধ বাঁধিয়ে অনেক দেশকে ধ্বংস করে দেয়… এসবেরই প্রি-প্ল্যানিং ছিল জাতিসংঘ তৈরী করা, যার মূল কন্সেপ্ট তারা আমাদের নবীর যুগের একটি সংঘটনের কাঠামো থেকে নেয়… [নামটি ঠিক মনে পড়ছে না, কেউ জানলে জানাবেন]

জাতিসংঘের মূল উদ্দেশ্যই হচ্ছে OneWorldOrder বাস্তবায়ন… খেয়াল করে দেখুন, পৃথিবীর প্রত্যেকটা দেশই বর্তমান জাতিসংঘের সদস্য… জাতিসংঘের করা বিশ্বব্যাবস্থা অনুযায়ীই প্রত্যেক দেশের সরকার কাজ দেশ শাসনের কাজ পরিচালনা করছে… সব দেশই স্বাস্থ্য, শিক্ষা, চিকিৎসাসহ মানুষের মৌলিক অধিকার পূরণের একটি আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্য মান বেছে নিয়েছে, যা জাতিসংঘ অনুমোদিত… আর এই জাতিসংঘই হলো ইলুমিনাতির হেডকোয়ার্টার…

সবচেয়ে সাংঘাতিক ব্যাপার হলো, এই জাতিসংঘ বর্তমান পৃথিবীতে শান্তি প্রতিষ্ঠায় ব্যার্থ, কিন্তু তারা ঠিকই ইলুমিনাতির প্ল্যান সাকসেসের ক্ষেত্রে প্রায় সফল… তারা #OneWorldOrder বাস্তবায়ন করতে পারবেনা শুধুমাত্র মুসলিমদের জন্যেই, তাই একে একে মধ্যপ্রাচ্যের প্রায় সব দেশ ধ্বংস করছে, এবং এই একটা ব্যাপারেই জাতিসংঘ নিরব… আমি হয়ত পুরো ব্যাপারটা বুঝাতে পারছিনা, কিন্তু আপনারা বুঝে নিতে পারবেন আশা করি।

এবার আসি ইসলামের ব্যাপারে…
তাদের এই বিশ্বব্যাবস্থায় ইসলাম কেন পথের কাঁটা হলো ???

ইহুদীরা মনে করে, তারাই পৃথিবীর একমাত্র শুদ্ধ জাতি, বাকিরা সৃষ্টিকর্তার কাছে গ্রহণযোগ্য নয়, তাদের জীবন বিধান সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক মনোনিত নয়… কিন্তু পবিত্র কুর’আন এই ব্যাপারে কি বলছে ??? আপনারা সূরা ইসরা/সূরা বনী ইসরাইলেই এর বিস্তারিত পাবেন…

আমরা সকলেই জানি, কিয়ামতের পূর্বে দাজ্জালের অগমন ঘটবে, এবং সে পৃথিবিতে ৪০ দিন অবস্থান করবে… এই চল্লিশদিন কি আমাদের বর্তমানের চল্লিশদিনের মতই ??? না, কিন্তু আমাদেরকে এটা বুঝতে হবে আমাদের অন্তর্দৃষ্টি দিয়েই… আমরা অনেকেই হয়ত জানিনা, জান্নাতের ১ বছর মানে দুনিয়ার ১ হাজার বছিরের সমান… খেয়াল করে দেখুন, কিভাবে দাজ্জাল আমাদের মাঝেই ১৪০০ বছরেরও আগে থেকেই বিদ্যমান… তার আগে আপনারা নিজেরাই কিছুটা পড়াশোনা করুন, কুর’আন-হাদীসের তাফসীর পড়ুন, বুঝতে চেষ্টা করুন…

হাদীসে কিছু ঘটনার বর্ণনা আছে, একদিন মহানবী হযরত মুহাম্মাদ সাল্লালাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সাথে একটি বালক বেয়াদবী করেছিল… এই ঘটনার সাক্ষী হযরত আবু বকর আলাইহি ওয়াসাল্লাম খোলা তরবারী হাতে সেই বালকের শিরচ্ছেদ করার অনুমতি চাইলেন নবীর কাছে, তখন নবী বলেছিলেন, “সে যদি দাজ্জাল হয়ে থাকে, তাহলে তুমি তাকে হত্যা করতে পারবেনা…”

তাছাড়াও আরেকটা হাদীসে আছে, একদল বনিক জাহাজে করে মধ্যপ্রাচ্য থেকে অন্য আরেক দেশে যাচ্ছিল… সমুদ্রের মাঝে তারা তারা ঝড়ের কবলে পড়লে প্রায় একমাস তারা সমুদ্রের মাঝে কাটিয়ে পরে বিরাট একটি দ্বীপে চলে যায়… সেখানে অদ্ভুদ এক প্রানীর দেখা পায়, এবং সেই প্রাণীটি বলে, দ্বীপের গহীনে একজন আছে, সে তাদের জন্যে অপেক্ষা করছে… তারা ভীত হয়ে সেই দ্বীপের গহীনে যায়, এবং হাত-পা বাঁধা অবস্থায় একজনকে দেখতে পায়… সে একটু মোটা, শ্যামবর্ণের ছিল, একটা চোখে সমস্যা ছিল… পরে সে ঐ বনিকদের কিছু প্রশ্ন করে, এবং মহানবী সম্পর্কেও জানতে চায়… তাদের ঐসব প্রশ্ন এবং ঘটনা শুনে নবী বলেন, সেই ব্যাক্তিটি ছিল দাজ্জাল… পরবর্তীতে গবেষণা করে বের করা হয়, দ্বীপটি ছিল বর্তমানের গ্রেট বৃটেন…

এবার আসি সবচেয়ে ইন্টারষ্টিং পার্টে… আমি আগেই বলেছি, জান্নাতের এক বছর হলো দুনিয়ার ১০০০ বছর… হাদীসে বর্ণিত আছে, দাজ্জালের প্রথম ১ দিন সমান ১ বছর, তারপরের ১ দিন সমান ১ মাস, তারপরের একদিন সমান ১ সপ্তাহ, তারপরের দিনগুলো আমাদের মতই…

প্রথম ১ দিন মানে ১ বছর, অর্থাৎ বৃটেনের প্রায় ১০০০ বছরের বিশ্বশাসন, এর পরের ১ দিন মানে ১ মাসে, মানে বর্তমান আমেরিকার প্রায় ১০০ বছর ধরে সুপারপাওয়ার হিসেবে টিকে থাকা এবং দুনিয়ায় একচ্ছত্র অধিপত্য, এর পরের ১ দিন সমান ১ সপ্তাহ, অর্থাৎ আল মালহামা/আরমাগেডন এর পর ইসরাইলের সুপারপাওয়ার হিসেবে বিশ্বশাসন, এবং এর পরের দিনগুলো আমাদের মতই হবে…

আল মালহামা/আরমাগেডন/#WorldWarIII

বর্তমানের বিশ্ব-রাজনীতির দিকে খেয়াল করুন, কি সুন্দর কোল্ডওয়ার চলছে… আমেরিকা-ইউরোপ এক পক্ষে তো চীন-রাশিয়া তার বিপরীতে… সিরিয়াতে চলা যুদ্ধ একসময় তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধে রূপ নেবে, এতে সন্দেহ নেই… এই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন সময়ে বা তার আগে-পরে সংঘটিত হবে গ্বাজওয়ায়ে-হিন্দ নামের আরেকটি যুদ্ধ, যেটি বাংলাদেশ-ভারত-পাকিস্তান-আফগানিস্তান-মায়ানমার এর মধ্যে সংঘঠিত হবে, এবং হাদীসে এই যউদ্ধের শহীদদেরকে সর্বশ্রেষ্ঠ শহীদ হিসেবে ঘোষণা করা হবে বলা আছে…

এটি কিভাবে হবে ??? বর্তমানের পাকিস্তান-ভারতের জম্মু-কাশ্মীরের উত্তেজনা, বাংলাদেশ-মায়ানমারের সীমান্তে উত্তেজনাসহ আরও অনেক ইস্যু উঠে আসবে, যেটি একসময় যুদ্ধে রূপ নেবে… এই যুদ্ধে মুসলিমরাই জয়ী হবে, ভারত কয়েক টুকরা হবে, মায়ানমারও ভাগ হবে… ওবং এই যুদ্ধের মাধ্যমেই ইমাম মাহ্দী’র আগমন ঘটবে ভারতবর্ষে, তিনি বিজয়ী সেনাদের নিয়ে মধ্যপ্রাচ্যের সিরিয়াতে যাবেন, এবং সেখানে ঈসা আলাইহি ওয়াসাল্লামকে খুঁজে পাবেন… এরপর তাঁকে সাথে নিয়েই দাজ্জালকে হত্যা করবেন, দুনিয়ায় খেলাফত প্রতিষ্ঠা করবেন…

টাইমলাইন এবং অনুমানের ভিত্তিতে বলা যায়, ২০১৭ থেকে ২০২৫ সালের মধ্যেই ইমাম মাহ্দীর আগমন ঘটবে, এবং এর মধ্যেই তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দাজ্জাল এবং ঈসা আলাইহি ওয়াসাল্লাম দুনিয়ায় আগমন করবেন… ইহুদীরা #OneWorldOrder এর বাস্তবায়ন করে ফএলবে ততদিনে, এবং তারা তাদের প্রতিক্ষিত মাসীয়াহ্ এর অপেক্ষা করবে, যাকে আমরা দাজ্জাল নামেই চিনি এবং জানি…

লেখকঃ শাহ নেওয়াজ। পড়াশোনার প্রতি বিন্দুমাত্র ইন্টারেষ্ট নাই, তাও মার্কেটিং নিয়ে পড়ছি [বিয়ে করার জন্যে] রাজনীতি, শেষ জামানা নিয়ে চরম মাত্রায় নেশাগ্রস্থ…

[ প্রকাশিত লেখাটি লেখকের ব্যক্তিগত মতামত]