আলুপেঁয়াজের চড়া দাম, মশামাছির উপদ্রব, ৫ মিনিটের বৃষ্টিতে ৫ ফুট পানির নিচে তলিয়ে যাও্য়া রাস্তাঘাট, এসবের যন্ত্রণায় অতিষ্ট হয়ে যদি অন্য কোন গ্রহে চলে যেতে চান, ভুলেও কিন্তু মঙ্গলগ্রহের কথা মাথায় আনবেন না। কারণ, মঙ্গলগ্রহে বসবাস করতে চাইলে আপনার নামে কিন্তু অবৈধ অনুপ্রবেশের দায়ে মামলা ঠুকে দেবে ইয়েমেন এর এক পরিবার!
হ্যাঁ, ভুল পড়েননি! ইয়েমেনে বসবাসরত এক পরিবার নাসা’র নামে “অনধিকার প্রবেশ” এর মামলা করেছিলো কেননা নাসা মঙ্গলগ্রহে স্যাটেলাইট পাঠানোর মতো স্পর্ধা দেখিয়েছিলো। মামলাটি করেছিলো একই পরিবারের তিন সদস্য। তাদের নাম যথাক্রমে আদম ইসমাইল, মুস্তফা খলিল এবং আবদুল্লাহ আল উমারি। তাদের মতে, মঙ্গলগ্রহ তাদের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পত্তি। এটি ১৯৯৭ সালের ঘটনা।
মঙ্গলগ্রহ
আদম, মুস্তফা এবং আব্দুল্লাহ দাবি করেন যে, মঙ্গলগ্রহ তাদের একান্ত পারিবারিক সম্পত্তি। নাসা সেখানে স্যাটেলাইট পাঠিয়ে অত্যন্ত গর্হিত কাজ করেছে।তাদের এই ধারণার পেছনে রয়েছে একটি কিংবদন্তী যা তাদের পরিবারে বহু বছর ধরে প্রচলিত রয়েছে।
কিংবদন্তী অনুযায়ী, তাদের পরিবার প্রাচীনকালে দক্ষিণ আরবে বসবাসরত সাবায়ুন এবং হিময়ার গোত্রের অন্তর্ভুক্ত ছিলো। আমাদের সোলার সিস্টেমের সাতটি গ্রহেই তাদের পারিবারিক মন্দির অবস্থিত ছিলো। এই বিষয়ে তারা তাদের পরিবারের বিভিন্ন দলিল এবং বই পুস্তক আদালতে পেশ করে।
তারা আরবীয় সাপ্তাহিক পত্রিকা আল ত্বোহাকে বলে যে, “মঙ্গলগ্রহ আজ থেকে তিন হাজার বছর আগে থেকে আমাদের পরিবারের নিজস্ব সম্পত্তি”। ১৯৯৭ সালের জুলাই মাসে CNN একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। সেখানে আব্দুল্লাহ, আদম এবং মুস্তফার আদালতে দেয়া স্টেটমেন্ট দেখানো হয়। তারা বলেছিলো, “Sojourner এবং Pathfinder এই দুইটি রোবোটিক রোভারের মালিক মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সরকার। আমাদের অনুমতি না নিয়েই তারা মঙ্গলগ্রহে অবতরণ করেছে। শুধু তাই নয়, তারা মঙ্গলগ্রহে বিভিন্ন ধরণের গবেষণা শুরু করছে। আমরা এই ঘটনায় অত্যন্ত ব্যথিত এবং অপমানিত বোধ করছি”।তাদের দাবি ছিলো Sojourner এবং Pathfinder যেন তাদের কর্মকান্ড তৎক্ষণাত বন্ধ করে।
Sojourner এবং Pathfinder
মঙ্গলগ্রহের মালিকানা সংক্রান্ত দলিল তারা আদালতে পেশ করা হয়েছিলো, সকল দলিলই আদালত কর্তৃক ভিত্তিহীন বলে ঘোষিত হয়। বিচারক আদম, মুস্তফা এবং আবদুল্লাহকে সরাসরি মানসিক রোগী বলে আখ্যায়িত করে এবং ভবিষ্যতে তারা যদি এই ধরণের অবাস্তব বিষয় নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয় তবে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে ঘোষণা করে। তবে আদালতের নিষেধাজ্ঞায় এই তিন ভাইয়ের মানসিকতা খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি।এর পরের বছরই তারা মঙ্গলগ্রহের জমি ২ মার্কিন ডলার প্রতি স্কয়ার ফিট হিসেবে বিক্রি করা শুরু করে।তবে জমি কিনতে কেউ খুব বেশি আগ্রহ দেখায়নি!
এই ধরণের ঘটনা যে ইতিহাসে একবারই ঘটেছে, তা কিন্তু নয়। সিলভিও ল্যাংভিন নামে এক ব্যক্তি দাবি করে যে আমাদের সৌর জগতের সকল গ্রহের মালিক তিনি। আশির দশকে ডেনিস হোপ নামে এক ব্যক্তি দাবি করেন যে তিনি পৃথিবীর চাঁদের মালিক এবং বিশ মার্কিন ডলার প্রতি স্কয়ারফিট বিক্রি করা শুরু করেছিলেন।“Nation of Celestial Space” এখনো দাবি করে যে সৌ্রজগতের সমস্ত গ্রহের মালিক তারা।
তথ্যসূত্রঃ www.thevintagenews.com
ছবিঃ
১ঃ www.thevintagenews.com
২ঃ http://channel.nationalgeographic.com/mars/
৩ঃ http://etc.usf.edu/clippix/picture/mars-pathfinder-and-sojourner.html