আমি মুঠোফোন ব্যবহার করি যার Operating System হল Android 5.0 (Lollipop)। কাজেই এই লেখায় যেসব দিকনির্দেশনার কথা বলা হবে সেগুলো এই ফোনের সাথে মিলবে। অন্যফোনে একটু এদিক সেদিক থাকতে পারে। যারা নতুন Android চালান তাদের কথা মাথায় রেখে এই লেখাটি সাজানো হলেও পুরনো ব্যবহারকারীরাও হয়ত কিছু কিছু ব্যাপার নতুনভাবে জানবেন। আর আপনার কিছু জানা থাকলে কমেন্টে অবশ্যই লিখুন।
১। আমার Android Version কত কিভাবে বুঝব?
উত্তরঃ Settings থেকে About Phone এ ক্লিক করুন। এখানে Android Version পাবেন। আরেকটু মজা দেখার জন্য Android Version লেখাটির উপর দ্রুত জোরে জোরে ৫ বার চাপ দিন। বলুন তো কি পেলেন?
২। Internet চালু করার সাথে সাথে Data ফুরিয়ে যাচ্ছ কিছু Browse না করা সত্ত্বেও। কি করব?
উত্তরঃ Screen উপর থেকে টেনে Shortcut Menu টি আনুন। তারপর দেখুন Background Data নামে icon টি Active আছে কিনা। থাকলে Click করে Inactive করে দিন। কিন্তু Menu তে এই icon না থাকলে Settings এ যান। Wireless & Network এ দেখুন Data Usage আছে। এখানে Click করুন। তারপর Screen এর আয়তাকার বাক্স অথবা তিনটি Dot এ Click করলে কিছু Option আসবে। সেখান থেকে Restrict App Background এ Click করুন।
বাড়তি সতর্কতার জন্য গুগলের Play Store এ প্রবেশ করুন। Play Store এ প্রবেশ করতে হলে gmail এ account থাকতে হবে। না থাকলে খুলে নিন। Play Store এ প্রবেশ করার পর উপরে বাঁ পাশের কোণায় দেখুন ৩ টি দাগ আছে। ওখানে Click করে Settings এ Click করুন। এবার Auto-updae apps এ Click করে “Do not auto-update apps” সিলেক্ট করে দিন।
৩। অনেকে অনেক রকম Cleaning Software ব্যবহার করে। কোনটি ব্যবহার করব? Anti Virus ব্যবহার করার দরকার আছে কিনা?
উত্তরঃ আসলে Cleaning Software গুলো কতটুকু কাজের আমার সঠিক ধারনা নেই। Clean Master অতি পরিচিত একটি Cleaning Software. আমি Install করে Clean করতে দিলাম। 1.1 GB পরিষ্কার হল। পরেরদিন আবার দিলাম। আবারো 1.1GB পরিষ্কার হল! কিন্তু একদিনে এত Junk জমার কথা নয়। তখন বিশ্বাস হারিয়ে Uninstall করে দিয়েছি। তাহলে System পরিষ্কার করার উপায় কি?
বর্তমানের ফোনগুলোতে Built in Cleaner থাকে। সেটা দিয়ে কাজ চলবে। আরো গভীরভাবে করতে হলে-
- File Manager >> System Storage >> Android >> data >> com.adroid.gallery3d >> cache এ প্রবেশ করুন। এখানে দেখুন imgcache.0 নামের একটি ফাইল রয়েছে যা অনেক mb দখল করেছে। এটি Delete করে দিন। আমি করেছি, কোন সমস্যা হয় নি। মাসে একবার অন্তত এই কাজটি করুন।
- ফোনের Screen এর option button চেপে ধরে রাখুন যতক্ষন না screen পরিবর্তন হয়ে যায়। পরিবর্তিত হয়ে কতগুলো app window আসবে। এই app গুলো আপনি recently ব্যবহার করেছেন। প্রতিটি app এর উপর আঙুল দিয়ে ডানদিক থেকে বামদিকে টান দিন। আপনার রিসেন্ট app গুলো অফ হয়ে যাবে।
- প্রতিটি App এর cache পরিষ্কার করতে হবে। ধরাযাক, আমি Google Chrome এর cache পরিষ্কার করব। স্ক্রিনের গুগল ক্রোম আইকনটি চেপে ধরে রাখলে উপরের দিকে info আসবে। ক্রোম আইকনটি টেনে নিয়ে info লেখার উপর ছেড়ে দিলে ক্রোমের বিস্তারিত হিসাব-কিতাব নিয়ে আরেকটি পেজ আসবে। নিচের দিকে গেলে Clear Cache বাটন পাওয়া যাবে। ক্লিক করুন। আরো গভীরভাবে পরিষ্কার করতে চাইলে Clear Data বাটনে চাপ দিতে হবে। আরো কিছু জায়গা খালি হবে।
সতর্কতাঃ Clear Data তে ক্লিক করলে ক্রোমের সেভ করা সকল বুকমার্ক, ইউজার নেম, পাসওয়ার্ড মুছে যাবে। মোটকথা, ক্রোম একবারে নতুন হয়ে যাবে প্রথমবার ব্যবহারের মত।
প্রতিটা App এর ক্ষেত্রে এই কাজগুলো করা যায়। তবে যেসব App আপনি বেশি ব্যবহার করেন এবং বেশি জায়গা দখল করেছে সেগুলোর ক্ষেত্রে করুন। ছোটগুলোকে রেহাই দিন।
৪। Backup and Restore
নতুন মডেলগুলোতে এই নামে একটা App থাকে। না থাকলেও সমস্যা নেই। Clean Master জাতীয় সফটওয়্যার দিয়ে ব্যাকআপ নেয়া যায়।
Backup and Restore এপটি দিয়ে ফোনবুক, মেসেজ, ছবি, সমস্ত এপস ব্যাকআপ রাখা যায়। আপনি যদি নতুন ফোন নিয়ে থাকেন তাহলে পুরনো মোবাইলের সবকিছু নতুন মোবাইলে নিতে পারবেন। সেজন্য প্রথমে এই এপটি দিয়ে ব্যাকআপ তৈরি করতে হবে। যদি আপনার কন্টাক্ট লিস্ট ব্যাকআপ নিতে চান তাহলে Backup and Restore >> Personal Data তে ক্লিক করুন। দেখবেন Contact, Message, Picture ইত্যাদি লিস্ট এসেছে। Contact সিলেক্ট করে Back up to SD Card এ ক্লিক করুন। ব্যাকআপ ফাইলটি কি নামে (ধরি, phone numbers) হবে সেটি লিখে দিয়ে OK করুন। এরপর এখান থেকে বের হয়ে File Manager >> SD card >> data তে প্রবেশ করলেই দেখতে পাবে phone numbers নামে একটা Folder তৈরি হয়েছে। এই ফোল্ডারটি নতুন ফোনে Bluetooth, Share it দিয়ে নিন। তারপর Folder টির ভিতরে ঢুকে Contacts.vcf ফাইলটিতে দু’বার চাপ দিন। এখন পুরনো ফোনের সব নাম্বার নতুন ফোনে চলে এল। (এই পদ্ধতি Android থেকে Android ফোনে কাজ করবে। Symbian বা i-phone এ কাজ করবে কিনা জানি না।)
এই এপটি ব্যবহার করে আপনার সকল এপের ব্যাকআপ তৈরি করে নিন। কেন সেটা বলছি।
৫। ফোন ধীরগতিতে কাজ করে। কি করা যাবে?
উত্তরঃ এন্ড্রয়েড ফোন স্লো হয়ে যাওয়া খুব কমন সমস্যা। হার্ডওয়্যারগত কোন সমস্যা না থাকলে দেখে নেয়া যাক কি কি কারনে ফোন স্লো হতে পারে।
ক) এন্টিভাইরাসের ব্যবহারঃ এন্টিভাইরাসের ব্যবহার আপনার ফোনকে ধীরগতির করে দিবে। কয়েকমাস এন্টিভাইরাসসহ ফোন ব্যবহার করে তারপর এন্টিভাইরাস আনইন্সটল করে দেখলে পার্থক্য সহজেই টের পাওয়া যায়। আমার মতে, একজন সাধারন ব্যবহারকারীর জন্য এন্টিভাইরাসের কোন দরকার নেই। একটু সতর্ক হলে ফোন নিরাপদে বহুদিন ব্যবহার করা যায়। ভাইরাস থেকে ফোন নিরাপদ রাখতে নির্ভরযোগ্য ওয়েবসাইট ছাড়া আজেবাজে ওয়েবসাইট ব্রাউজ করবেন না। ফেসবুক, ইয়াহু, গুগলের সাইটসমূহ ইত্যাদি স্বনামধন্য সাইটসমূহ নিরাপদ সাইট। আপনি গুরুত্বপূর্ণ কেউ হলে এন্টিভাইরাসের Paid Version ব্যবহার করুন।
খ) অহেতুক এপসের উপস্থিতিঃ কাউকে কাউকে দেখেছি ফোন কেনার পর যে সফটওয়্যার পায় সব ইন্সটল করা শুরু করে। এমন করা থেকে বিরত থাকুন। উপরে সব এপসের ব্যাকআপ নিতে বলেছিলাম। এখন কাজ শুরু করা যাক।
আপনার এপস্গুলোর দিকে নজর দিন। আমি আমার ফোনের দিকে তাকালে দেখতে পাই, Backgrounds, Backup and Restore, BD Data Plan ……….. এভাবে A-Z সাজানো আছে নামানুযায়ী। এভাবে Sort করতে চাইলে ডানদিকের উপরের কোন তিন দাগ (option) এ চাপ দিন। তারপর দেখুন Sort by থেকে Alphabetical নির্বাচন করুন। এখন এপসগুলোর মধ্যে আপনি ঠিক করুন কোন এপসটি আপনার প্রয়োজন নেই বা আপনি ব্যবহার করেন না। সেটি Uninstall করে দিন। অনেকে আবার একই রকম একাধিক সফটওয়ার Install করে থাকেন। যেমন, whats app, viber, imo, skype ইত্যাদি মেসেজিং এপস। এদের মধ্যে যেটা আপনার জন্য দরকার সেটা রাখুন। বাকিগুলো Uninstall করে দিন। এমনিভাবে Google Chorme, Opera Mini, Firefox, UC Browser, Tor Browser – ইত্যাদি ব্রাউজারের মধ্যে যেটা ব্যবহার করে আপনার ভাল লাগে সেটা রেখে বাকিগুলো Uninstall করে দিন। Uninstall করা এপসগুলো পুনরায় দরকার হলে Back up থেকে আবার Install করে নিন।
গ) আপডেট করাঃ কিছু কিছু এপস দেখবেন দু’দিন পরপরই আপডেট চায়। আপডেট করতে থাকলে সাধারনত এপসের আকার বাড়তে থাকে। ইন্টারনেট ভিত্তিক গেমগুলো ছাড়া অন্যকোন App ঘন ঘন আপডেট না করলেও চলে। যেমন, Google Chrome বছরে একবার আপডেট করতে পারেন। আপডেট না করে পুরনো ভার্সণ Uninstall করে Play Store থেকে নতুন ভার্সণ ডাউনলোড করে নিলে আরো ভাল।
ঘ) Weak Network: এটা আমার ব্যক্তিগত পর্যবেক্ষন বলতে পারেন। Network এর দুর্বলতার কারণে অনেক সময় ফোন গরম হয়ে irresponsive হয়ে যায়। একটু সময় নিন। প্রয়োজনে ফোন Restart দিন। ঠিক হয়ে যাবে।
৬। ফোনের মেমোরী খালি রাখতে নিচের কাজগুলো করতে পারেন-
ক) Apps Disable : কিছু কিছু এপসে দেখবেন Uninstall করার Option আসে না। এগুলো হল System App. এই এপগুলোর মধ্যে অনেকগুলো আপনার নাও প্রয়োজন হতে পারে। যেমন, কোথাও বেড়াতে না গেলে আমাদের Maps এপটি দরকার পরে না। এটা যেহেতু Uninstall করা যাবে না (বিশেষ সফটওয়্যার ছাড়া) সেহেতু এটা বন্ধ করে রাখতে হবে। Maps এর উপর আঙুল দিয়ে চেপে ধরে রাখুন যতক্ষন না উপরে info এবং remove না আসে। চেপে ধরে রাখা অবস্থায় Maps কে টেনে ধরে info এর উপর ছেড়ে দিন। এবার যে নতুন পাতা আসবে সেখানে Disable বাটনে ক্লিক করুন। ডিসেবল করা এপস পুনরায় চালু করতে চাইলে Settings>> Apps >> Disabled এ যান। এখান থেকে আপনার প্রয়োজনীয় Apps টিতে ক্লিক করলেই Enable অপশনটি আসবে। ক্লিক করুন। হয়ে যাবে।
সতর্কতাঃ Settings এপটি আবার Disable করে দেবেন না। ডিসেবল করার মত এপগুলো হতে পারে Drive, Gmail, Google Play Games, Hangouts, Messenger, News & Weather ইত্যাদি। (এগুলো আমি ব্যবহার করি না তেমন একটা। তাই আমার ফোনে এগুলো ডিসেবল করা আছে। আপনার যেগুলো লাগে না, আপনি করতে পারেন।)
খ) ভালমানের মেমোরী কার্ড ব্যবহার করাঃ পেন ড্রাইভ, মেমোরী কার্ড প্রভৃতির দাম নির্ভর করে মূলত কত জিবি এবং স্পীড কত তার উপর। ১৬ জিবির মেমোরী কার্ডের দাম ব্যান্ড ভেদে ভিন্নতর হতে পারে। সেক্ষেত্রে যে ব্র্যান্ডের Data Transfer Rate বেশি সেটি একটু বেশি দাম দিয়ে হলেও কিনুন।
গ) Junk Cleaning: জাংক ফাইল ডিলিট করার ব্যাপারে আগেই বলা হয়েছে। এছাড়া ফোনবুকে যেসব নাম্বার একাধিকবার Save করা আছে সেখান থেকে মূলটি রেখে অন্যগুলো ডিলিট করুন। অপ্রয়োজনীয় সব মেসেজ Delete করে দিন।
ঘ) Factory data reset: যদি আপনার এন্ড্রয়েডের ভার্সন পুরনো হয় তাহলে System Apps গুলো ডিসেবল করা যাবে না। আর এটা সেটা অনেককিছু করার পরও যদি আশানুরূপ গতি ফোনে না পাওয়া যায় তাহলে সর্বশেষ উপায় হল Factory data reset করা। এটা করলে মোবাইলের সব ডাটা মুছে যাবে। কাজেই Factory data reset করার আগে ফোনবুক, মেসেজ, ছবি, অডিও-ভিডিও ফাইল, ব্যাক আপ করা সবগুলো এপস মেমোরী কার্ডে নিয়ে নিন। তারপর Settings>>Backup & reset>>Factory data reset করুন। Confirmation চাইলে Ok দিন। এবার অপেক্ষা করুন।
রিসেট হয়ে গেলে এন্ড্রয়েডের বিভিন্ন সেটিংসের পাতাগুলো একের পর এক আসবে। যেগুলো সাধারনত দোকানদাররা করার পর সেট আমাদের হাতে দেয়। আপনি ধীরে সুস্থে সেগুলো করুন। তারপর ব্যাক আপ থেকে ফোনবুক, মেসেজ, একান্ত প্রয়োজনীয় এপসগুলো ইন্সটল করে নিন।
৭. ফোন অত্যধিক গরম হয়ে যায়। কিভাবে প্রতিকার সম্ভব?
উত্তরঃ ফোন কেনার আগে কিছু বিষয় খেয়াল করলে এই সমস্যা কম হত। যে ফোনের ওজন কম এবং র্যাম কম (২ জিবির নিচে) সেসব ফোনে এই সমস্যা প্রকট। ব্রান্ডের ফোনগুলো ব্যাতিক্রম হতে পারে। আর Network দুর্বল থাকলেও ফোন গরম হয়ে যায়। কিছুক্ষন ফোন অফ রাখলে দ্রুত ঠান্ডা হতে পারে।
৮. বিশেষ নম্বারে বিশেষ রিংটোন সেট করার কি উপায়?
উত্তরঃ প্রথমে যে টোনটি আপনি রিংটোন হিসেবে সেট করতে চান সেটি Copy করে File manager>>System Storage>> Ringtones ফোল্ডারে Paste করে দিন। তারপর Contacts এ যেয়ে বিশেষ ব্যক্তির নামের উপর ক্লিক করুন। তারপর Edit বাটন অথবা ডানদিকের উপরের কোনায় পেন্সিল আইকনে ক্লিক করে option বাটন (আয়তাকার বাক্সের মত যেটা ফোনের নিচের দিকে Home বাটনের পাশে থাকে অথবা ৩ ডটের উপর)ক্লিক করলে Pop up মেন্যু থেকে Set Ringtones এ ক্লিক করলে রিংটোনের লিস্ট আসবে। আপনার পছন্দের টোনটি সিলেক্ট করে Ok করুন। এবার ঐ ব্যক্তি আপনাকে ফোন করলে আপনি টোন শুনেই বুঝতে পারবেন কে ফোন করেছে।
৯. Play Store থেকে Install করা কোন এপসের মূল ফাইল (.apk) কোথায় ডাউনলোড হয়?
উত্তরঃ প্লে স্টোর থেকে ডাউনলোড করা মূল ফাইলটি Install হবার পর নিজে থেকে মুছে যায়। একারনে ঐ ফাইলের কোন ব্যাকআপ পাওয়া যায় না। কাজেই ব্যাকআপ পেতে হলে Backup & Restore এপটি দিয়ে ব্যাকআপ তৈরি করে নিতে হবে।
১০. ভিডিও দেখার সময় বার বার ভিডিও সিলেক্ট করতে হয়। একবারে সিলেক্ট করে ভিডিও দেখার উপায় কি?
উত্তরঃ এন্ড্রয়েড ফোনে দুইভাবে ভিডিও চালানো যায়। গ্যালারী থেকে অথবা Videos এপটি দিয়ে। যেভাবেই চালানো হোক না কেন একটি ভিডিওর বেশি একবারে চালানো যায় না। বার বার সিলেক্ট করতে হয়। এই ঝামেলা থেকে মুক্তির উপায় Play Store থেকে ভিডিও চালানোর কোন এপস Install করে নেয়া। অনেক ফোনে MX Player দেয়া থাকে। এটা দিয়ে সুন্দর কাজ চালানো যায়। তবে আমার কাছে BSPlayer Free টা বেশি ভাল লেগেছে। BSPlayer এর অন্যতম সুবিধা হল এর POP up ভিডিও চালানোর ক্ষমতা। পপ আপে Fore ground এ ভিডিও চলবে, আপনি Background এ মেসেঞ্জার, ক্যালকুলেটর, ফেসবুক সব চালাতে পারবেন কম্পিউটারের মত।
১১. এন্ড্রয়েড থেকে এন্ড্রয়েডে ইন্টারনেট শেয়ার কিভাবে করা যায়?
উত্তরঃ প্রথমে Mobile Data অন করে নিন। তারপর Settings>>Wireless & networks >> More >>Tethering & Portable hotspot থেকে Wi-Fi hotspot অন করুন। তারপর Wi-Fi hotspot লেখার উপর চাপ দিন। তারপর Set up Wi-Fi hotspot এ ক্লিক করুন। আপনার Hotspot এর কোন সুন্দর নাম দিতে চাইলে দিতে Network Name এ লিখুন। কোন পাসওয়ার্ড সেট করতে চাইলে Security র ডান পাশের Drop Down সিম্বলে ক্লিক করে WPA2 PSK সিলেক্ট করুন। এবার পাসওয়ার্ড দিন। পাসওয়ার্ড না দিতে চাইলে None সিলেক্ট করুন। এখন অন্যরা Wi-fi দিয়ে আপনার মোবাইলের ইন্টারনেট ব্যবহার করতে পারবে।
এন্ড্রয়েডের আরো কিছু Features এর ব্যবহার দেখে নেয়া যাক।
- Owner info: এর মাধ্যমে আপনি যা লিখবেন সেটা Lock Screen এ দেখা যাবে। অনেক সময় ভুলে আমরা ফোন কোথাও ফেলে যাই। আপনি এমন হলে Settings >> Security >> Owner info তে যেয়ে Show owner info on lock screen অপশনটি টিক দিন। তারপর নিচে লিখুন “If you found this phone please call 01XXXXXXXXX” বা আপনার যা মনে চায় লিখুন। তারপর দেখুন Lock Screen এ আপনার আপনার লেখাটি দেখা যাচ্ছে। আমি লিখেছি “HOW DARE YOU TOUCH ME!”
- Camera: ক্যামেরা দিয়ে ছবি তোলার সময় যদি দেখেন Fore ground এ আলো কম এবং Back ground এ বেশি অথবা বিপরীত সেক্ষেত্রে HDR মুড চালু করে দিন। তারপর দেখুন। অবশ্য স্থির বস্তুর ছবি হলে ভাল ছবি আসবে।
- Gesture: এই ফিচারটি দিয়ে কি হয় সেটা বোঝার জন্য Settings>>Smart awake থেকে Gesture Left এ চাপ দিন। অনেকগুলো এপসের লিস্ট থেকে যেকোন এপস সিলেক্ট করুন। তারপর ফোন লক করুন। ডিসপ্লের আলো যখন নিভে যাবে তখন আঙুল দিয়ে স্ক্রিনের মাঝামাঝি স্থানে বামদিকে থেকে ডানদিকে টানুন। তারপর ফোন আনলক করুন। দেখবেন আনলক হবার পর আপনার সিলেক্ট করা এপটি চালু হয়ে যাবে। এভাবে Gesture C, V, Z ইত্যাদি দিয়ে বিভিন্ন এপস আপনি চালাতে পারবেন।
- Cast Screen: আপনার বন্ধু মোবাইল দিয়ে কি করে না করে সেটা আপনি দেখতে পারবেন এই ফিচারটি দিয়ে। কিছু সময়ের জন্য বন্ধুর ফোনটি চেয়ে নিন। তারপর আপনার ফোনের Settings>>Display>>Cast Screen ক্লিক করুন।তারপর Option বাটনে ক্লিক করে Enable wireless display তে টিক দিন। এবার স্ক্রিনে আপনার সেটের মডেল সহ Discoverable by others এ টিক দিন। এবার আপনার বন্ধুর ফোনটি নিয়ে Cast Screen এ যেয়ে Enable wireless display তে টিক দিলে আপনার সেটের মডেল নম্বরটি উঠবে। সেটাতে ক্লিক করলে আপনার ফোনে Dialogue box আসবে Connection কনফার্মেশনের জন্য। আপনি Accept করুন।এবার দেখুন বন্ধুর ফোনের ডিসপ্লেতে যা আসছে আপনার ফোনেও সেটা দেখা যাচ্ছে। এবার ফোনটি আপনার বন্ধুকে ফেরত দিন। Wi-fi রেঞ্জের বাইরে এটা কাজ করবে না। এই ফিচারটি সম্ভবত Experimental . কাজেই সব ফোনে কাজ নাও করতে পারে। আর প্রধান অসুবিধা হল Guest Mobile (আপনার বন্ধুর ফোনে)এ কোন ভিডিও চালানো হলে তার মাইকে সাউন্ড আসবে না। কিন্তু Host Mobile এ (আপনারটাতে) ভিডিও অডিও দু’টোই শোনা যাবে।
- Captions: এই ফিচার দিয়ে মুভ্যি দেখার সময় যে Subtitles আমরা দেখি সেই লেখাগুলোকে Customize করা যায়। Settings>>Accessibility>Captions এ ঢুকে অন করুন। তারপর বিভিন্ন অপশন থেকে আপনার ইচ্ছামত নির্বাচন করুন। এই ফিচারটিও সম্ভবত এক্সপেরিমেন্টাল। আমার সেটে কাজ করে না।
আজ আপাতত এই পর্যন্তই। ধন্যবাদ সবাইকে।
লেখক সম্পর্কঃ আহমাদ রবীন। শখের বসে টুকটাক লেখালেখি করি। ভাল লাগে বই পড়তে আর ভ্রমন করতে। জ্ঞানের যেকোন শাখাই আমাকে আগ্রহী করে। ব্যক্তিগত জীবনে একটি বেসরকারী কোম্পানিতে চাকুরীরত। সমাজ-সংসার নিয়ে সুখেই আছি।