কিছু কিছু বই আমাদের শুধু মাত্র আনন্দ দেয়, কিছু কিছু বই হাঁসায় আবার কিছুতো দুঃখের অতল সাগরে ডুবিয়ে দেয়। কিছু বই শেখায় জীবনের পথ চলা, পালটায় দৃষ্টিভঙ্গি! আবার কিছু বই শেখায় বিশ্বাস করতে। বিশ্বাস-অবিশ্বাসের পার্থক্যটা বুঝিয়ে দেয় খুব নিঁখুত ভাবে, যেন পথ চলায় আমরা সত্য মিথ্যা নির্নয় করতে পারি খুব সহজেই।
ভিক্টর হুগো বলেছিলেন,
“বই বিশ্বাসের অঙ্গ, বই মানব সমাজকে টিকাইয়া রাখিবার জন্য জ্ঞান দান করে। অতএব, বই হইতেছে সভ্যতার রক্ষাকবচ।”
আমি যে বইটি নিয়ে আলোচনা করছি সেই বইটি পড়েছি বেশ কিছুদিন আগে। একটা ঘোরের মধ্যে ছিলাম বলা যায়। ঠিক একটা ঘোর না , কয়েকটি ঘোরের মধ্যে হবে কথাটা। লেখক এই বইটিতে সাধারণ মানুষের সত্য ঘটনাগুলোকে বাস্তবিক ভাবে তুলে ধরেছেন বলেই হয়ত আরো গভীর ভাবে পাঠককে ভাবিয়েছে প্রতিটি গল্প, প্রতিটি বাক্য! অন্যদের ক্ষেত্রে কি হয়েছে জানিনা আমি আমার মন্তব্য প্রকাশ করছি মাত্র।
বইটিতে মোট নয়টি গল্প আছে। প্রতিটি গল্প একেকজনের জীবনের গল্প। আমাদের প্রায় সবারই ধারনা ‘বায়োগ্রাফী’ মূলত বিখ্যাত ব্যক্তিদের হয়ে থাকে। কিংবা আলোচনায় আসা কোন মানুষের। কিন্তু লেখক এখানে নয়জন অচেনা অজানা লোকের বায়োগ্রাফী, তাদের জীবন থেকে শিক্ষা তুলে ধরেছেন প্রতিটি গল্পে।
ঢাকা এফএম এর জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘ধোকা’। ‘ধোকা’ অনুষ্ঠানে প্রতি পর্বে আসা নানা মানুষের গল্প থেকে বেছে বেছে নয়টি গল্প নিয়ে বই লিখেছেন অনুষ্ঠয়ানটির সঞ্চালক ও লেখক মশিউর রহমান শান্ত।
রেডিওতে আসা কিছু অতিথির জীবনের গল্প থেকে নিয়ে লেখা হয়েছে ‘ধোকা’ বই। আচ্ছা এমন যদি হয় যে মা বেঁচে থাকতেও তাকে ডাকতে হয় খালা বলে? জীবনের সবচেয়ে আপনজন, প্রিয় শব্দটা না বলার কারনটাই বা কি!
আবার স্বাভাবিক জীবন যাপন করা, আনন্দে থাকা একটা মানুষের পুরো জীবন যদি হঠাৎ ধবংস হয়ে যায়, অচল হয়ে যায়, একেবারে নিঃশেষ হয়ে যায় আমাদেরই বিপদের বন্ধু কন এক ডাক্তারের ভুলের কারনে! কি সেই ভুল? কেই বা হয়েছিল?
এক সঙ্গে ঘর বেঁধে অনেক গুলো বছর এক সাথে সুখে দুঃখে থেকে হঠাৎ করেই কিবা হলো যে চলে গেলো অন্যের কাছে! একটা গল্প আবার জেদের ভাল খারাপ দিক নিয়েও ছিল। একেবারে পালটে যাওয়া মানুষের গল্প!
এত গুলো প্রশ্নের সবগুলো উত্তর পাওয়া যাবে বইটা পড়ে! বিস্তারিত লিখে এতসুন্দর গল্পগুলোর “স্পয়লার” দিতে চাই না।
তবে লেখক মশিউর রহমান শান্ত খুব নিঁখুত ভাবে পাঠকদের ধরে রাখার জন্য গল্পগুলো সাজিয়েছেন একের পর এক। নামগুলোতেও রয়েছে বিশেষ সৌন্দর্যতা। আর এটাই লেখকের সফলতা।
ধোকা বইটির প্রচ্ছদ করেছেন বিখ্যাত প্রচ্ছদশিল্পী ধ্রুব এষ। আর বইটি প্রকাশ করেছে বর্ষাদুপুর প্রকাশনী।
এক নজরেঃ
বইঃ ধোকা
লেখকঃ মশিউর রহমান শান্ত
প্রচ্ছদঃ ধ্রুব এষ
প্রকাশনীঃ বর্ষাদুপুর প্রকাশনী
মূল্যঃ ২০০ টাকা। ( তবে বিভিন্ন অনলাইন শপে ২০ থেকে ২৫% ছাড়ে পাওয়া যায়)
রিভিউ লেখকঃ আরেফিন শিমন