প্রাচীন চীনে সরকারী চাকুরি কিংবা সিভিল সার্ভিসের সুচনা । তখনকার চীনে হাজারখানেক সরকারী চাকুরে রাজ্যের বিভিন্ন বিষয়ে সম্রাটকে অবহিত করতেন । সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা বলা হতো মন্ত্রিদেরকে,যারা সরাসরি প্রাসাদের কাজ করতেন । তারা সরকারের ক্ষমতাশালী ব্যাক্তিবর্গ হিসাবে পরিচিত ছিলেন ।
২) চীনে সিভিল সার্ভিসের শুরু কখন ?
খ্রিস্টপূর্ব ২০৭ সালে হ্যান শাসনামলে সম্রাট গাওজুর আমলে সর্বপ্রথম সিভিল সার্ভিস বা সরকারী চাকরির সুচনা হয় । সম্রাট জানতেন চীনের মতো এতো বড় সাম্রাজ্য তিনি একা চালাতে পারবেন না । তিনি উচ্চশিক্ষিত মন্ত্রী এবং প্রশাসকদের সরকারের সাথে যুক্ত করার সিদ্ধান্ত নিলেন । এভাবেই ২০০০ বছর ধরে চীনা সাম্রাজ্য সিভিল সার্ভিস কিংবা সরকারী চাকুরেদের দ্বারা পরিচালিত হতো ।
৩) সিভিল সার্ভিস পরীক্ষা্র পদ্ধতি কেমন ছিল
সিভিল সার্ভিসে নিয়োগের জন্য পরীক্ষার ব্যবস্থা ছিল । পরীক্ষা পদ্ধতি ছিল খুব কঠিন । অনেকেই এই পরীক্ষায় পাস করার জন্য বছরের পর বছর পড়াশুনা করতো । কিন্তু খুব কম সংখ্যকই পাস করতে পারতো । কনফুসিয়াসের ফিলসফি থেকে শুরু করে ,অংক ,বিজ্ঞান, সমরজ্ঞান ,ভুগোল, ইত্যাদি নানা বিষয়েই পরীক্ষা হতো । অনেক সময় কবিতা লেখার উপরেও পরীক্ষা নেয়া হতো ।
সিভিল সার্ভিসে বিভিন্ন ধরনের পদমর্যাদা ছিল । পরীক্ষার নম্বর অনুসারে একেকজন একেক র্যাঙ্কে পদোন্নতি পেতো । খুব কম সংখ্যক লোকই সর্বোচ্চ পদমর্যাদায় যেতে পারতো । যারা যেতে পারত তাদের ক্ষমতা এবং সম্পদ হতো সবচেয়ে বেশি ।
৪) সিভিল সার্ভিসের কাজ কি ?
যারা সিভিল সার্ভিসে কাজ করতো তারা মূলত সরকারকে সাহায্য করতো । উঁচু পদের কর্মকর্তারা সরাসরি প্রাসাদে কাজ করতেন । বাকিরা বিভিন্ন জেলায় নিয়োগ পেতেন । তারা ট্যাক্স গ্রহন করতেন । সরকাররের আইন বাস্তবায়ন করতেন । সরকারের হয়ে বিভিন্ন খমতান প্রয়োগ করতেন ।
৫) এই চাকরিটা কেমন ছিল ?
সিভিল সার্ভিসে চাকরি করাটা খুব ভালো ক্যারিয়ার হিসাবে বিবেচিত হতো চীনে । শুধুমাত্র পুরুশেরাই এই চাকুরী করার জন্য নিয়োগ পেতেন । এতো বেশি মানুষ সরকারী চাকুরিতে নিয়োগ পাওয়ার জন্য পরীক্ষা দিতেন যে প্রতি পদের বিপরীতে প্রতিযোগীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছিল প্রায় তিন হাজার ।
৬) সিভিল সার্ভিস সম্পর্কে কিছু মজার তথ্য –
বিভিন্ন শাসনামলে সরকারী চাকুরেদের বিভিন্ন ধরনের ইউনিফর্ম কিংবা ড্রেস কোডের প্রচলন ছিল ।
ধা্রণা করা হয় যে সরকারী চাকরিতে জনবলের সংখ্যা ছিল প্রায় ১ লাখ ।
পরীক্ষায় কোনরকম অসুদুপায় অবলম্বন করে ধরা পড়লে শাস্তি ছিল মৃত্যু্দন্ড।
সিভিল সার্ভিসে যারা যেতে পারতো তাদের প্রায় সবাই ছিল মেধাবী । মেধার ভিত্তিতেই তাদের নিয়োগ দেয়া হতো ।
লেখকঃ আরাফাত আবদুল্লাহ