কিনবেন নাকি ভুতুরে পুতুল?

অভিশপ্ত বা ভুতুরে পুতুলের একটি দীর্ঘ ইতিহাস আছে।গত কয়েক শত বছর ধরে মানুষ নির্দিষ্ট কিছু পুতুল তালিকাভুক্ত করেছেন যারা অভিশপ্ত বা ভুতুরে পুতুল হিসেবে পরিচিত। ।ভুতুড়ে পুতুলগুলো বেশিরভাগ  হস্তনির্মিত যা অভিশপ্ত থাকে।তবে বর্তমানে এমন লোক আছে যারা ভুতুড়ে পুতুলগুলি সংগ্রহ করে এবং তারা অন্য লোকেদের দেখায়।e bay, Craigslist এর মত জনপ্রিয় সাইটগুলিতে বিক্রি হচ্ছে ভুতুরে পুতুল।এই ফিচারে রয়েছে বেশ কিছু জনপ্রিয় ভুতুড়ে পুতুল।

বেবে

বেবে নামের  পুতুলটি পরিচিত হয়েছিল একটি হত্যাকান্ডে নিহত মেয়ের আত্মা ধারন করার জন্য।বেবে প্রথমে কোথায় ছিল তা জানা যায় নি।কিন্তু একটি দোকান থেকে কিনে নেওয়ার পর তার মালিক অদ্ভুত কিছু পরিবর্তন দেখে তার বাসায়।বাড়ির বায়ুমণ্ডলে বেশ ভিন্ন অনুভূত হয়, দরজা ও জানালা খোলা এবং বন্ধ হয়ে যাচ্ছিলো।বাড়িতে বাঁশির আওয়াজ শোনা যাচ্ছিল।তারপর লোকটি রাতে স্বপ্ন দেখে একটি মাঝবয়সী লোক ছোট একটি বাচ্চা মেয়েকে হত্যা করে।মেয়েটির পাশে ছিল পুতুলটি।তখন লোকটি বুঝতে পারে মেয়েটির আত্মা পুতুলটির মধ্যে রয়েছে।লোকটি স্বপ্নে দেখা মেয়েটির হত্যাকারীকে তদন্ত করে খুজে বের করতে চেষ্টা করতে থাকে।একসময় হত্যাকারী খুঁজে পাওয়া যায়। মেয়েটিকে তার পিতাই হত্যা করেছিল।

 

 

ম্যান্ডি


blank
ম্যান্ডি নামক একটি চীনামাটির পুতুল বিশ্বের সবচেয়ে ভুতুড়ে পুতুল বলে মনে করা হয়। পুতুলটি মূলত ১৯১০  থেকে ১৯২০ সালের মধ্যে তৈরি করা হয়েছিল এবং এখন ব্রিটিশ কলম্বিয়ার কেশেল জাদুঘরে তার সাবেক মালিক দান করে এসেছে।মালিকটির কাছে যখন পুতুলটি ছিল তখন  তিনি রাতে  কান্নাকাটি শুনত।জাদুঘরে ম্যান্ডিকে  দেয়ার পর তার কান্নার আওয়াজ অনেকেই শুনেছিল।কিন্তু অদ্ভুত ঘটনা কিছু ঘটেছে যেমন জাদুঘরে কর্মীদের জিনিসপত্র  হারিয়ে যাওয়া, অফিস সরবরাহ রহস্যজনকভাবে অদৃশ্য হয়ে যাওয়া এবং হঠাৎ কেউ যখন তখন ঘুরে বেড়ায় এমন অনুভূত হত।

 

ইমিলিয়া

blankইমিলিয়া একটি পুতুল যা খুব পুরানো এবং প্রাচীনতম এই পুতুল প্রথম ১৮০০ সালে ইতালির রাজাকে দেওয়া হয়েছিল। মৃত্যুর আগে তিনি তার নিকটতম বন্ধুকে  পুতুলটি  দিয়েছেন যিনি ইমিলাকে তার কন্যা মারিয়াকে দিয়ে ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে একটি বিস্ফোরণ পরে একজন মহিলা এই পুতুল সংরক্ষণ করার চেষ্টা করে। অনেকে বলে একটি মহিলার  আত্মা পুতুলটির ভিতরে দেওয়া হয়।পুতুল এরপর থেকে তার চোখ নিজে থেকে  খোলা এবং বন্ধ করতে পারে।এমনকি রাতে কান্নাকাটির আওয়াজ  শোনা যেত।তবে কিভাবে পুতুলটি ভুতুড়ে করে তোলে আজ ও টা অজানা।

 

আমান্ডা

blank

আমান্ডা একটি প্রাচীন পুতুল।এটি খেলার জন্য নয়।সংগ্রহের জন্য পরিচিত।কিন্তু সে একজায়গায় বেশিদিন থাকতো না।পুতুলের মালিকরা বলছেন যে আমান্ডা একজায়গায় বেশিদিন থাকতে চায় না।যখন সে বাড়িটা তে আর থাকতে চাইত না তখন সে বাড়িটা ঘৃণা করতো এবং নানা বিচিত্র ধরনের কাজ করতো।পুতুলের পূর্ববর্তী মালিকরা বলেছে সে যখন ঐ বাড়িতে আর থাকতে চাইত না তখন তাদের জন্য  দুর্ভাগ্য নিয়ে আসত।সে নিজের জায়গা থেকে অন্য জায়গা চলে যেত।বর্তমানে আমান্ডা জর্জিয়ার আটলান্টায় বাস করে।

ভুডু এবং একটি ভুতুড়ে পুতুল

blank 

এই পুতুল একটু আলাদা।কারণ এটি একটি সাধারণ খেলনা পুতুল না।স্ট্রিং এবং কাপড় দিয়ে তৈরি এই  পুতুলটি নিউ অর্লিন্সে জন্মগ্রহণ করে।এই পুতুলটি বিভিন্ন মালিকানার হাতবদল হয়ে টেক্সাস এর এক মহিলার কাছে আসে।এই মহিলাটি একসময় eBay তে বিক্রি করে দেয়।বিক্রির সময়ে তিনি কিছু নিয়ামাবলি বলে দেয়।কিন্তু নতুন মালিক টা দেখে নি।পুতুলটিকে একটি নির্দিষ্ট স্থানে বন্দী করে রাখতে বলা হয়েছিল।কিন্তু নতুন মালিক তা রাখেনি।যার ফলাফল ছিল ভয়াবহ।মাঝরাতে সে তার মালিক কে আক্রমণ করে।এই ঘটনার পর মালিকটি তাকে এক শিকারি কুকুর পালে এমন একজনের কাছে বিক্রি করে দেয়।

 

 

জোলিয়ট 

blank

জোলিয়্ট নামের একটি পুতুল একই পরিবারে অনেকদিন ধরেই ছিল।বর্তমানে যার কাছে আছে তার দাদির মায়ের পুতুল ছিল এটি। জোলিয়্টকে উপহার দিয়েছিল তার বান্ধবী।কিন্তু জোলিয়ট একটি ভয়ানক অভিশাপ নিয়ে এসেছে এই পরিবারে।এই পরিবারে  প্রতিটি প্রজন্মে ২ টি করে সন্তান জন্ম নেয়।একটি ছেলে একটি মেয়ে।কিন্তু প্রতিটি ছেলেই রহস্যজনকভাবে মারা গেছে।বর্তমানে পরিবারের সদস্যরা রাতে কান্না এবং চিৎকার শুনতে পায়।একই সময়ে অনেকগুলি চিৎকার  শোনা যাচ্ছে।তারা ভাবছে এগুলো মৃত ছেলেদের চিৎকার।

পোপা


blank

পোপা নামের পুতুলটি তৈরি করা হয়েছিল ১৯২০ সালে।তার মালিক ছিল একজন ইতালীয় মহিলা।২০০৫ সালে তার মালিকের মৃত্য হয়। পোপাটির মালিক পুতুল সম্পর্কে অনেক গল্প লিখেছিলেন ।একবার নাকি তার জীবনকে রক্ষা করেছিল পুতুলটি।পোপাটি দেখতে ছিল তার ইতালীয় মালিকের অনুরূপ।তার মত পোশাক,চুলের ডিজাইন।এর মালিক প্রায়ই দাবি করেন যে পোপা তার সাথে  কথা বলতে পারে।তার মালিকের মৃত্যুর পর তাকে কাচের শোকেসে বন্দি করে রেখেছিল।কিন্তু কয়েকদিন পর পরিবারের সদস্যরা দেখে পোপা স্থান পরিবর্তন করে।

 

পলু উবিনের বার্বি

blank

১৯১৪ সালে ব্রিটিশ সেনাবাহিনী জার্মানিতে বসবাসকারী একটি জার্মান দম্পতির খোঁজ করে। স্ত্রী ও স্বামী সেনাবাহিনীর হাতে ধরা পড়েছিল কিন্তু তাদের ছোট মেয়ে পালাতে সক্ষম হয়েছিল। দুর্ভাগ্যবশত মেয়েটি বাঁধের মুখে পরে মারা  গেছে ।পলু উবিনের স্থানীয়রা একটি স্মৃতিস্তম্ভ নির্মাণ করে।  বেদিটি মেয়েটির চুলের দ্বারা  লক এবং ক্রুশবিদ্ধ করা হয়। এমন সময়ে একজন লোক একটি ছোট্ট মেয়ে সম্পর্কে  স্বপ্ন দেখে।স্বপ্নে  তাকে  একটি নির্দিষ্ট খেলনার দোকানের দিকে নিয়ে যায়। তিনি দেখে একটি বার্বি পুতুল তার খুব পরিচিত।সে তাকিয়ে ছিলেন।বার্বি পুতুলটি  দোকানের উইন্ডোতে প্রদর্শনীর জন্য স্থাপন করা হয়েছিল। বার বার সে স্বপ্ন দেখতে থাকে। পরে তিনি পুতুলটি কিনেছিলেন এবং এটিকে একটি  মন্দিরের মধ্যে স্থাপন করেছিলেন। এ মুহূর্তে তিনি অনুভব করেছিলেন যে মেয়েটির আত্মা পুতুলের কাছে হস্তান্তর করে এবং অবশেষে শান্তি লাভ করে।আজ বিশ্বজুড়ে স্থানীয় মানুষ এবং পর্যটকরা পুতুলটি দেখতে আসে।