জরুরী মিটিং ডেকেছে রবার্ট। ওদের বাড়ির আপেল গাছটার নিচে। আপেল গাছের নিচে মিটিং হলে জ্যাকের খুব রাগ হয়। ওখানে মিটিং হলে সবাইকে একটা করে আপেল খেতে হয়। কী বিরক্তিকর! জ্যাক আপেল একদম পছন্দ করে না। তারচেয়ে মিটিংটা চেরীদের চিলেকোঠায় কিংবা অ্যালিসদের বেজমেন্টে হলেও পারতো। কিংবা ওর নিজের খেলাঘরে; তাও চলতো। অন্তত ওই বিদঘুটে আপেল তো খাওয়া লাগতো না। কিন্তু রবার্টদের আপেল তলাতেই হবে মিটিং। কারণ, রবার্ট বলেছে এবারের হ্যালোয়িন পার্টি নিয়ে নাকি তার মাথায় দারুণ এক আইডিয়া এসেছে।
আজ সাতাশে অক্টোবর। আর তিন দিন পরেই হ্যালোয়িন। প্রত্যেকবারের হ্যালোয়িনে ওরা নতুন নতুন সেগমেন্ট বের করে। ওদের সেগমেন্ট আশেপাশের সবাই খুব পছন্দ করে। তাই যেন তেন সেগমেন্ট হলে চলবে না।
ওরা মানে, কমরেডস গ্রুপ। জ্যাক, রবার্ট, চেরী, অ্যালিস আর নিককে নিয়ে ওদের এই ফ্রেন্ডস গ্রুপ। যেকোনও পার্টির আগেই মিটিং বসে ওদের। হ্যালোয়িন পার্টি নিয়েও কদিন ধরে কল্পনা জল্পনা চলছে। কিন্তু কারোর বুদ্ধিই মনমতো হচ্ছে না। কস্টিউম নিয়ে বলতে চেয়েছিলো জ্যাক। পুরোটা বলার আগেই নিক উড়িয়ে দিয়েছে ওর কথা। জ্যাকের কথার বিপরীতে নিক বলেছে, ‘সবাইই প্রত্যেকবার কস্টিউম নিয়েই মাতামাতি করে। আমরা একেকজন একেকটা ভূত প্রেতের সাজ তো নেবোই, কিন্তু ওটাই যেন একমাত্র টার্গেট না হয়। ওয়ান্না সামথিং স্পেশাল!’
তো রবার্টের ভাষ্যমতে নিকের “স্পেশাল” প্ল্যানই নাকি এঁটেছে সে। তাই এখন সেখানেই যাবে জ্যাক। হ্যাঙ্গার থেকে ওভারকোটটা নিয়ে গায়ে জড়াতে জড়াতেই বেরিয়ে পড়লো ও। পিছন থেকে মা মাফলার নিতে বলছে, পাত্তা দিলো না।
জ্যাকের বাড়ি থেকে রবার্টের বাড়ি খুব দূরে নয়। হাঁটাপথে দশমিনিট লাগে। কিন্তু খানিক আগেই সকাল হলেও, রাস্তা থেকে এখনো তুষার সরাতে আসেনি সিটি কর্পোরেশনের লোকেরা। তুষারে পা ডেবে ডেবে যাচ্ছে। অবশ্য তুষারের উপর হাঁটতে খারাপ লাগে না জ্যাকের। তবে পরে পা একদম নিঃসাড় হয়ে যায়, ওটাই সমস্যা।
রাস্তা থেকেই রবার্টদের বাসার পিছনে আড়ম্বরে দাঁড়িয়ে থাকা আপেল গাছটা দেখা যায়। ওদের আঙ্গিনায় পড়ে থাকা তুষারে অনেকগুলো পায়ের ছাপ দেখা যাচ্ছে। তারমানে ওরা সবাই চলে এসেছে। জ্যাকই দেরি করে ফেলেছে।
আঙ্গিনা পেরোনোর আগেই জ্যাকের চারজন বন্ধু একযোগে বলে উঠলো, ‘স্বাগতম, লেটলতিফ!’ সাথে সাথে মুখটা কালো হয়ে গেলো জ্যাকের। সবসময় দেরি করে বলে এটা বলেই খেপায় ওরা। আজও দেরি হয়ে গেল। উঠোনটা পেরিয়ে আপেল গাছের কাছে যেতেই রবার্ট ওর হাতে একটা আপেল ধরিয়ে দিলো। তারপর নিক বললো, ‘তুমি আলোচনা মিস করেছ। সব ফিক্সড হয়ে গিয়েছে।’
নিকের মুখ থেকে কথা কেড়ে নিলো চেরি, ‘আমরা এবছর জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্ন বানাব! নিজে নিজে!’
‘আর হ্যালোয়িনের রাতে দেখা হবে, কার জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্ন সবচেয়ে ভালো হয়েছে। যারটা সবচেয়ে সুন্দর হবে, তাকে পুরস্কার দেওয়া হবে!’ অ্যালিসের গলায়ও উচ্ছ্বাস ঝরে পড়ছে। পড়বেই না কেন? যেকোন হ্যান্ডমেইড জিনিস বানাতে ওর জুড়ি নেই। ও আগে থেকেই জানে ও ই জিতবে। তাই এতো খুশি।
এতোক্ষণে জ্যাক কিছু বলার সুযোগ পেল। ‘পুরোটাই রবার্টের প্ল্যান?’
‘নাহ,’ মাথা নাড়লো রবার্ট। ‘আমি শুধু জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্ন বানানোর বুদ্ধিটা দিয়েছিলাম। বাকিটা আলোচনা সাপেক্ষে হয়েছে। পুরস্কার কী, জানো? চেরির মায়ের বানানো স্পেশাল কেক!’
সবাই কেন এত উচ্ছ্বসিত, এবারে বোঝা গেল। এই ব্লকে চেরির মায়ের কেক খুবই বিখ্যাত।
মন খারাপ করে আজকের মিটিং থেকে ফিরলো জ্যাক। ওর মধ্যে কোনো ক্রিয়েটিভিটি নেই। খুব ভালো করেই জানে, যতোই চেষ্টা করুক ভালো কিছু বানাতে পারবে না। তবুও নিজের সর্বোচ্চটা দিয়ে জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্ন বানাবে জ্যাক। বাসায় ফিরেই মা কে বললো, ‘মা, আমাদের বাসায় পাঁকা কুমড়ো আছে?’
মা কাজে ব্যস্ত ছিলেন, অন্যমনস্ক গলায় বললেন, ‘আছে তো স্টোররুমে।’
‘আমার জন্য তিনটে আলাদা করে রেখ তো,’ বলে আর দাঁড়ালো না সেখানে, নিজের উপরতলায় নিজের ঘরের দিকে পা বাড়ালো। ওদিকে মা অবাক হয়ে তাকিয়ে আছেন ছেলের গমন পথের দিকে। তিন তিনটে কুমড়ো দিয়ে তার ছেলে কী করবে বুঝতে পারছেন না। আপনমনে বিড়বিড় করলেন কী যেন!
পরের দুটো দিন কুমড়ো নিয়েই পড়ে রইলো জ্যাক। বাসা থেকেই বের হলো না। বন্ধুদের সাথে দেখাও করতে গেল না। কে কেমন বানাচ্ছে, সেসবের প্রতি কোন আগ্রহও নেই। কিন্তু কিছুতেই কিছু হলো না। জ্যাকের কুমড়োগুলো যেন ইচ্ছে করেই ওর হাতে জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্ন হতে চাইছে না। ওটার আকৃতিই এলো না ঠিকমতো, নাক মুখ বানানো তো বহু দূরের কথা।
একত্রিশে অক্টোবর দুপুরের দিকে বাসার পিছনের জঙ্গলে কুমড়োগুলো সব ফেলে দিয়ে এলো জ্যাক। মন ভেঙে গেছে ওর। মনে মনে ঠিক করেছে সন্ধ্যায় বেরুবে না। সারাটা বিকেল নিজের ঘরে মন খারাপ করে শুয়ে রইলো। এতো খারাপ লাগছে নিজের কাছে! কেন ও কিছু করতে পারে না? কেন?
সন্ধ্যে নাগাদ আর ঘরে থাকতে মন চাইলো না জ্যাকের। ইচ্ছে করছে দৌড়ে ছুটে যায় বন্ধুদের কাছে। ওরা কতো মজা করছে! নাহ, এভাবে লুকিয়ে থাকা কোনও কাজের কথা হবে না। উঠে আলমারি থেকে গতবছরের হ্যালোয়িন কস্টিউমটা বের করে নিলো। জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্ন বানানোর চিন্তায় নতুন করে কোনো কস্টিউমও বানায়নি সে। সমস্যা নেই, গত বছরেরটাও খারাপ নয়। জম্বির সাজ নিয়েছিলো সেবার। পোশাকটা গায়ে চড়িয়ে মুখোশ পরে নিলো সে। কী ভেবে, বাসার পিছনের জঙ্গলের দিকে রওনা দিলো আলো হাতে নিয়ে। ওর বানানো জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্ন গুলোর একটা একটু কোনোরকম হয়েছিল। ওটাই তুলে নেবে জঙ্গল থেকে। ওতে আলো রেখে দিলে খুব বেশি বাজে দেখাবে না মনে হয়। অন্তত খালি হাতে যাওয়ার চেয়ে তো ভালো।
আজ শুল্কপক্ষ। চাঁদের আলোয় দুনিয়া ভেসে যাচ্ছে। জঙ্গলের গাছগুলোর উপরে সে আলো পড়ে কেমন আলো আঁধারিয়া সৃষ্টি হয়েছে। জ্যাক ভূত প্রেত বিশ্বাস করে না। তাই একটুও ভয় না পেয়ে যেখানে কুমড়োগুলো ফেলেছিলো, সেখানে এগিয়ে গেল। টর্চের আলোয় জায়গাটায় পৌঁছাতে সময় লাগলো না জ্যাকের। অবাক হয়ে দেখলো, দুপুরে ফেলে রেখে যাওয়া কুমড়োগুলো নেই ওখানে! কে নিয়ে গেল? আশেপাশে তাকালো ছেলেটা। ভুল জায়গায় এসেছে নাকি? বুঝতে পারছে না। পিছনে ঘুরেই চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল ওর। ওর হাতের আলোটুকু ছাড়া সারা শহরের আর কোথাও আলো জ্বলছে না! লোডশেডিং হলো নাকি? হ্যালোয়িনের রাতে লোডশেডিং?
টর্চ ঘুরিয়ে আশেপাশে দেখছে জ্যাক। কোন পথে যেন এসেছিলো? বনের একধারে একটা হলদে আলো দেখা যাচ্ছে। দুলতে দুলতে ওর কাছ থেকে দূরে সরে যাচ্ছে আলোটা। দ্রুতপায়ে সেদিকে পা বাড়ালো ও। কেউ আছে ওখানে। লোকটা হয়তো বলতে পারবে, আলো চলে গেল কেন। কাছাকাছি গিয়ে বুঝতে পারলো লোকটার হাতে যে আলোটা আছে, ওটা একটা জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্ন। কী সুন্দর কাঠামো ওটার! আর ভিতরে রাখা আলোটা এমনভাবে জ্বলছে, মনে হচ্ছে ওতে যেন প্রাণ আছে! পিছন ফিরে রয়েছে জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্নধারী। গলা উঁচিয়ে ডাকলো জ্যাক, ‘শুনছেন? একটু দাঁড়ান!’
লোকটা ঘুরে দাঁড়ালো। মাঝবয়সী একটা লোক। উনিও হ্যালোয়িনের কস্টিউম পরেছেন। কিন্তু ঠিক কী সাজতে চেয়েছেন, বুঝতে পারলো না জ্যাক। মনে হচ্ছে, মধ্যযুগীয় কোনো পোশাক। লোকটার পাশাপাশি হাঁটতে গিয়ে রীতিমতো হাঁফ ধরে যাচ্ছে ওর। হাঁফাতে হাঁফাতে বললো, ‘আপনি কী সেজেছেন?’
‘জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্ন, মৃত আত্মার প্রতিনিধিত্বকারী হ্যালোইনের প্রতীক!’ লোকটা কেমন রহস্যময় গলায় উত্তর দিলো। চোখ পিটপিট করলো জ্যাক। ওর দিকে একনজর তাকিয়ে সে বললো, ‘গল্পটা তুমি জানো না?’
মৃত আত্মার প্রতিনিধিত্বকারী হ্যালোইনের প্রতীক
‘কোন গল্প?’ অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলো জ্যাক। আর মনে মনে ভাবছে, লোকটাকে অনুরোধ করবে জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্নটা যেন ওকে ধার দেয়। এটা কি সুন্দর দেখাচ্ছে! অ্যালিসও নিশ্চয়ই এটার মতো সুন্দর জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্ন বানাতে পারবে না! জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্নএর চিন্তায় এতোই বুঁদ হয়ে আছে ছেলেটা যে, পুরো শহর কেন আলোশূন্য হয়ে আছে, এটা জিজ্ঞেস করতেই ভুলে গেছে!
লোকটার গলার আওয়াজে নিজের ভাবনা থেকে বাস্তবে ফিরলো জ্যাক। গল্পটা বলতে শুরু করেছে সে। ‘কাহিনীটা হচ্ছে জ্যাক নামের এক কৃপণ ব্যক্তি আর শয়তানকে নিয়ে।’ নিজের নাম শুনে চমকে উঠলো ছেলেটা। কিন্তু গল্পের মেজাজে থাকায় ওর চমকে যাওয়া নজরে পড়লো না অদ্ভুত লোকটার। সে বলে চলেছে, ‘জ্যাক একবার মদ খাওয়ার জন্য শয়তানকে আমন্ত্রন জানায়। আমন্ত্রন গ্রহণ করে শয়তান মদ খেতে আসে। কিন্তু কৃপণ জ্যাকের এক কথা, শয়তানের মদ কেনার জন্য সে কোন পয়সা খরচ করতে পারবে না। তার বদলে সে শয়তানকে ফন্দি দেয়, শয়তান যেন কয়েন হয়ে যায় আর এই কয়েন দিয়ে জ্যাক তার জন্য মদ কিনবে। যেই বলা সেই কাজ। শয়তান কয়েন হয়ে গেলে জ্যাক সেটা লুফে নিয়ে তার পকেটে রেখে দেয়, যেখানে আগে থেকেই একটা রুপালি ক্রুশ ছিল।’
এটুকু বলে হাসলো লোকটা। জ্যাকও গল্পে আগ্রহ পাচ্ছে। ও বলল, ‘তারপর?’
‘রুপালি ক্রুশের উপস্থিতির কারনে শয়তান তার স্বাভাবিক আকৃতিতে ফিরে যেতে পারছে না। শয়তানকে কায়দামতো পেয়ে জ্যাক দুটো প্রতিজ্ঞা করতে বলে। তার একটি ছিলো, “পরবর্তী এক বছর শয়তান তাকে কোনোরকম বিরক্ত করবে না।” নাটকীয় ভাবে থামলো লোকটা। জ্যাক গলায় কৌতূহল ঢেলে জিজ্ঞেস করলো, ‘আর দ্বিতীয় শর্ত? শয়তান কি মুক্তি পেয়েছিল?!’
জ্যাকের কৌতূহল দেখে আবারোও হাসলো লোকটা। ‘দ্বিতীয় শর্ত হলো, জ্যাকের মৃত্যুর পর তার আত্মাকে যেন শয়তান দাবী না করে। জানো তো, ভালো মানুষের আত্মা নিয়ে নেয় ঈশ্বর আর মন্দ মানুষের আত্মা নেয় শয়তান। ঈশ্বর স্বর্গের রাজা আর শয়তান নরকের।’
‘হ্যাঁ, জানিই তো! তারপর কী হলো?’
‘এক বছর পর শয়তান জ্যাকের কাছে আসলে জ্যাক তাকে আবারো বোকা বানালো। এবার জ্যাক শয়তানকে একটা গাছে উঠে ফল পেড়ে আনতে বলে। ফল আনতে শয়তান গাছে ওঠা মাত্রই জ্যাক গাছের ডালে একটা ক্রুশ খোদাই করে। ফলে শয়তান আর গাছ থেকে নামতে পারেনা। জ্যাক শয়তানকে দিয়ে এবার প্রতিজ্ঞা করায়, আগামী দশ বছর যেন জ্যাককে সে বিরক্ত না করে।’
হাঁটতে হাঁটতে কতোদূর চলে এসেছে ওরা, খবরই নেই জ্যাকের। সে তন্ময় হয়ে গল্প শুনছে। লোকটা বলে চলেছে, ‘জ্যাক মারা গেল একদিন। জ্যাকের মতো ত্যাঁদড় আর পাপী আত্মাকে ঈশ্বর গ্রহন করতে রাজি না। ওদিকে শয়তানও জ্যাকের আত্মা গ্রহণ করে নরকে নিয়ে আসতে পারছে না। কারণ সে জ্যাকের কাছে প্রতিজ্ঞা করেছিল, জ্যাকের মৃত্যুর পর তার আত্মাকে সে দাবী করবেনা।
এই যখন অবস্থা শয়তান তখন জ্যাককে একখণ্ড প্রজ্বলিত কয়লা দিয়ে পৃথিবীর গভীর অন্ধাকারাচ্ছন্ন কোন এক রাস্তায় ছেড়ে দেয়। অন্ধাকারাচ্ছন্ন রাস্তায় জ্যাক হাঁটতে থাকুক অনন্তকাল।
শয়তানের কাছ থেকে সেই প্রজ্বলিত কয়লা নিয়ে জ্যাক সেটাকে মানুষের চেহারার আকৃতিতে খোদাই করা কুমড়ার খোলসের ভিতর রাখে। সেই খোদাইকৃত কুমড়ার খোলসের ভেতর আলো নিয়ে জ্যাক পৃথিবীতে এখনও হেঁটে বেড়াচ্ছে।’ গল্প বলা শেষ করে লোকটা চুপ মেরে গেলো।
‘সত্যি?’ জ্যাক যেন ভাবছে, এটা সত্যি নাকি গল্প।
‘সত্যি নয়তো কী?’ লোকটা কড়া গলায় বলল।
হঠাৎ দাঁড়িয়ে পড়লো জ্যাক। বললো, ‘আমাকে এখন ফিরতে হবে। আমার বন্ধুরা আমার জন্য অপেক্ষা করছে। আচ্ছা, আপনাকে যদি অনুরোধ করি, আপনার হাতের এই জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্ন এর সাথে আমার টর্চটা বদলাতে, আপনি বদলাবেন? আমার না একটা জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্ন লাগবে। আমার বন্ধুরা …’
জ্যাকের কথা শেষ হবার আগেই লোকটা জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্নটা বাড়িয়ে দিলো। এতো অল্পতেই ওটা পেয়ে যাওয়ায় খুব অবাক হলো জ্যাক। হাত বাড়িয়ে ওটা নিতে নিতে বললো, ‘অদ্ভুত ব্যাপার কি, জানেন? আমার নামও জ্যাক। অথচ আমি এই অভূতপূর্ব গল্পটা জানতামই না।’
লোকটা গলায় রহস্য ঢেলে দিয়ে বললো, ‘তোমার সাথে কথা বলে ভালো লাগলো জ্যাক। জ্যাক-ও’-ল্যান্টার্নটা নিজের হাতে তুলে নেওয়ায় ধন্যবাদ। আমার পৃথিবীতে হাঁটার জন্য আরোও একজনকে পাওয়া গেল। বাই দ্য ওয়ে, আমার নামও জ্যাক।’