ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ভবিষৎ উত্তরাধিকারী

ব্রিটিশ সাম্রাজ্য নিয়ে আমাদের প্রায় সকলের একটা আগ্রহ আছে। আরও যদি হয় তা রাজ পরিবারের সম্পর্কে তবে তো কথাই নেই। ব্রিটিশ সামাজ্য প্রায় বারশো বছরের পুরানো। এই সাম্রাজ্যের যেমন উথান হয়েছে তেমনি সময়ের সাথে সাথে এর পতন হয়েছে। একসময় বিশাল সাম্রাজ্য ছিল এখন ছোট দ্বীপ পুঞ্জে পরিনত হয়েছে।সেযাই হোক, এই পুরনো ইতিহাস আজও মাথা উচু করে দাঁড়িয়ে আছে কালের সাক্ষী হয়ে। বিভিন্ন সময় অনুযায়ী বিভিন্ন রাজা-রানী শাসন করেছে এই সাম্রাজ্য। একসময় আমাদের বাংলাদেশ ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের শাসনের অন্তর্ভুক্ত ছিল।

সময়ের পরিক্রমায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের শাসন ভার বিভিন্ন উওরাধিকারের কাছে ন্যস্ত হয়েছে। আজ আমাদের জানার বিষয় হল ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের উওরাধিকার ভবিষৎতে কারা হবেন। কারা ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের দায়িত্ব নিতে প্রস্তুত করছেন নিজেদের। তবে আসুন জেনে নেই।

রাজা  আলফ্রেড দ্য গ্রেট

ইংলিশ স্যাক্সন বংশের প্রথম রাজা ছিলেন আলফ্রেড দ্য গ্রেট যার মাদ্যমে এই ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের শুরু হয়। রাজা আলফ্রেড দ্য গ্রেট এর শাসনামল ছিল ৮৭১ থেকে ৮৯৯ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত। এরপর সময়ের সাথে সাথে বছরের পর বছর এই ব্রিটিশ রাজ সিংহাসনে বিভিন্ন রাজা রানী বসেছেন যারা প্রায় সকলেই ইংলিশ স্যাক্সন বংশের ছিলেন। রানী ভিক্টোরিয়ার সময় সবচেয়ে বেশি বিস্তার লাভ করেছিল ব্রিটিশ সাম্রাজ্য। তবে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের বিস্তারতা কমতে থাকে রাজা ষষ্ঠ জর্জ এবং তার মেয়ে দ্বিতীয় এলিজাবেথের শাসনামলে। লন্ডনের ওয়েস্টমিনস্টার শহরের ‘বাকিংহাম প্যালেস’ ব্রিটেনের রাজতন্ত্র ও রাজকীয় আভিজাত্যের প্রতীক। আনুষ্ঠানিকভাবে যুক্তরাজ্যের রাজপরিবার তথা রাজার বাসভবন বাকিংহাম প্যালেস, বিশ্বের সবচেয়ে পরিচিত অন্যতম বিলাসবহুল এবং গুরুত্বপূর্ণ একটি ভবন।ব্রিটেনের সকল রাষ্ট্রীয় এবং রাজকীয় অনুষ্ঠান বাকিংহাম প্যালেস এ হয়ে থাকে। রাজবংশের আভিজাত্যের প্রতীক এই প্রাসাদের বর্তমান রানী এলিজাবেথ দ্বিতীয়। সাধারণ মানুষের মনে প্রশ্ন উঠতেই পারে রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ মারা গেলে কী ঘটতে পারে অথবা কিভাবেই বা সারা হবে আনুষ্ঠানিকতাগুলো? আর উত্তরাধিকারীই বা নির্বাচন করা হবে কিভাবে?

blank
রানী এলিজাবেথ দ্বিতীয়

রানীর মৃত্যুর পর বিষয়টি যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হবে এবং তা করা হবে গোপনীয়তার সাথে নির্দিষ্ট একটি সংকেতের মাধ্যমে। রানীর মৃত্যু হলে লন্ডনে পররাষ্ট্র দফতরের গ্লোবাল রেসপন্স সেন্টার থেকে এ খবর যুক্তরাজ্যের বাইরে ১৫টি দেশের সরকারের কাছে পাঠানো হবে। যুক্তরাজ্যের রানীই অন্তর্ভুক্ত দেশের রাষ্ট্রপ্রধান। এ ছাড়া রানীর প্রভাব রয়েছে কমনওয়েলথভুক্ত এমন ৩৬টি দেশেও খবরটি পাঠানো হবে। এসব  দেশের প্রধানমন্ত্রী, গভর্নর জেনারেল ও রাষ্ট্রদূতরা শোক প্রকাশ করতে হাতের বাহুতে কালো ব্যাজ পরবেন। বাকিংহাম প্যালেসের ফটকে কালো নোটিশ টাঙানো হবে। আর রানীর মৃত্যু সংবাদ সর্বপ্রথম বিবিসি জানাতে পারবে।পার্লামেন্টের উভয়কক্ষের অধিবেশন ডাকা হবে এবং সাধারণ মানুষকে কাজ থেকে দ্রুত ছুটি দিয়ে বাড়ি পাঠানো হবে। আকাশপথে উড়োজাহাজের পাইলটরা যাত্রীদের সংবাদটি জানাবেন। এসব অনুষ্ঠানিকতা যখন চলতে থাকবে তখন দরজার পেছনে গোপনে সেন্ট জেমস প্যালেসে গঠিত হবে একটি উত্তরাধিকার কাউন্সিল, যারা ঠিক করবে এরপর রাজমুকুটটি কে পরতে যাচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে, রানী এলিজাবেথের পুত্র প্রিন্স চার্লস হবেন পরবর্তী রাজশাসক।

blank
রানী এলিজাবেথের পুত্র প্রিন্স চার্লস হবেন পরবর্তী রাজশাসক

রানীর মৃত্যুর পর মুহূর্ত থেকেই প্রিন্স চার্লস ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের সম্রাট। এ সময় প্রিন্স চার্লসের উপাধি পরিবর্তন হবে। প্রিন্স চার্লসের বর্তমান বয়স ৬৮ হওয়ার আগে তিনি পাচ্ছেন না সিংহাসন। কাউন্সিলে নতুন সম্রাট পার্লামেন্ট এবং চার্চ অব ইংল্যান্ডের কাছে তার আনুগত্য প্রকাশ করবেন। এরপর তিনিই হবেন চার্চের নতুন সুপ্রিম গভর্নর। তিনি চাইলেই তখন তার খ্রিস্টান নাম থেকে একটা নাম পছন্দ করতে পারবেন। তার পুরো নাম প্রিন্স চার্লস ফিলিপ আর্থার জর্জ। তিনি চাইলেই তার পছন্দ মত যেকোন একটা নাম নির্বাচন করতে পারবেন।

blank
স্ত্রী কেটের সাথে প্রিন্স উইলিয়াম

প্রিন্স চার্লসের পর প্রিন্স উইলিয়াম বসবেন সিংহাসনে। এরপর প্রিন্স উইলিয়ামের ছেলে প্রিন্স জর্জ বসবেন এবং তার পর প্রিন্স জর্জের পর প্রিন্সেস শার্লট বসবেন। আর এই দুইজনের অবর্তমানে সাম্রাজ্যের মুকুট যেতে পারে সদ্য জন্ম নেওয়া প্রিন্স লুইয়ের কাছে। আর তারপরই পাবেন প্রিন্স হ্যারি।

blank
স্ত্রী মেগানের সাথে প্রিন্স হ্যারি

কি বিষয় গুলো আপনাকে অবাক করছে তো!এটাই রাজবংশের রীতি।তাদের ভবিষৎ উওরাধিকার নির্বাচনের প্রক্রিয়া জটিল হলেও তারা এসব নিয়ম রীতি মেনে নিয়েই জীবন অতিবাহিত করছে।যার মাধ্যমে এখনও তারা সাধারন জনগনের মাঝে জনপ্রিয় হয়ে আছে।