চাকরির ইন্টারভিউতে হোন জয়ীঃ কৌশল, কমন প্রশ্ন-উত্তর ও অনলাইন ইন্টারভিউ টিপস

BanglaHub- Win your job interview

শিক্ষার হার যেভাবে বেড়েছে, সেভাবে বাড়েনি চাকরিক্ষেত্র। যার ফলে চাকরির বাজারে বেড়েছে প্রতিযোগিতা। আপনি হয়তো আপনার নিজের কাজে দক্ষ। তারপরেও আপনাকে অনেকগুলো বিষয় মাথায় রেখে ইন্টারভিউ বোর্ডে যেতে হবে।

[lwptoc hierarchical=”1″ numeration=”none”]

বাংলাহাবের আজকের আয়োজনে আমরা নিয়ে এসেছি ইন্টারভিউ টিপস। চাকরির ইন্টারভিউ প্রস্তুতি নিতে যা যা করতে হবে, তা সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা পাবেন এখান থেকে।

                                    আরো পড়ুন- ক্যারিয়ারের শুরুটা হোক সফলতার বুনিয়াদ

কীভাবে ইন্টারভিউ দিতে হয় কিংবা কীভাবে ইন্টারভিউ দিতে যেতে হয়, তা সম্পর্কে নতুনদের ধারণা কম থাকে। চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার কৌশলগুলো তাই আত্মস্থ করতে হবে যথাযথভাবে।

প্রথমেই জেনে নিন চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার কৌশলগুলো

চাকরির ইন্টারভিউতে কল পেলেই তো শুধু হবে না, পেতে হবে আরাধ্য সোনার হরিণ চাকরিও। তাই চাকরির ইন্টারভিউ দেয়ার কৌশলগুলো সঠিকভাবে অনুসরণ করা খুবই দরকার।

চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার কৌশলগুলো

১. নির্ধারিত সময়ের আগেই ইন্টারভিউর জন্য পৌঁছে যাওয়া

কখনোই ইন্টারভিউ দিতে গেলে দেরিতে পৌঁছানো যাবে না। ইন্টারভিউ দেওয়ার সময় যদি নির্দিষ্ট অফিসে তাড়াহুড়ো করে পৌঁছানো লাগে, তাহলে এই ছটফটে ভাবটা পুরো সময়ই তাকে আচ্ছন্ন করে রাখবে। ফলে নার্ভাসনেস কাটবে না। তাছাড়া যথাসময়ে ইন্টারভিউ বোর্ডে না পৌঁছাতে পারলে প্রথমেই একটা নেগেটিভ প্রভাব পড়বে। তাই ইন্টারভিউ এর দিন নির্ধারিত সময়ের আগেই পৌঁছে যাওয়া উচিত।

২. নিজের পোশাকের ব্যপারে সচেতন থাকা

পোশাক অবশ্যই ফরমাল হতে হবে। মেয়েদের ক্ষেত্রে সালোয়ার কামিজ বা কুর্তি; যেটাই পরিধান করা হোক না কেন, তা যেন হালকা রঙের হয়। হাতের নখ পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে। চুল বাঁধা থাকবে। কানে খুব ছোটো কোনো টপ পরবে, বড় কোনো দুল পরা যাবে না।

                                     আরো পড়ুন নিজেকে স্মার্ট দেখানোর কিছু সহজ কৌশল

ছেলেরা হালকা এক রঙা শার্ট পরবে। প্যান্ট হবে গাঢ় রঙের। প্যান্টের পকেট জিনিসপত্র দিয়ে ভারি করা যাবে না। চাবির রিং প্যান্টের সাথে ঝোলাবে না। বেল্ট ও জুতোর রঙ হতে হবে একই রঙা।

ছেলে ও মেয়ে দুজনের ক্ষেত্রেই জুতো হবে পা ঢাকা জুতো। মানে পা দেখা যাবে না, এমন জুতো। মোট কথা, মার্জিত পোশাক পরিধান করে যেতে হবে ইন্টারভিউ বোর্ডে।

৩. মোবাইল ফোন সাইলেন্ট ও পকেটে রাখা

অনেকেই মোবাইল হাতে নিয়ে ঢোকে, তারপর সেটা টেবিলের উপরে রাখে। এটা কখনোই করা যাবে না। মোবাইল পুরোপুরি সাইলেন্ট কিংবা সুইচ অফ করে ব্যাগে বা পকেটে রেখে দিতে হবে। টেবিলে তো মোবাইল রাখা যাবেই না, নিজের হাতজোড়াকেও টেবিলের উপরে রাখা যাবে না। হাত দুটো রাখতে হবে কোলের উপরে।

৪. ব্যাগ একপাশে রাখা

ইন্টারভিউ রুমে গিয়ে ব্যাগটাকে কোথায় রাখবেন, অনেকেই তা খুঁজে পান না। কেউ চট করে টেবিলের উপরে রাখেন, কেউ বা রাখেন কোলে। এই দুটোর কোনোটাই করা যাবে না। ব্যাগ রাখতে হবে চেয়ারের পাশে।

৫. প্রশ্নের উত্তর যেন হয় আত্মবিশ্বাস ও ইতিবাচক মনোভাবে পূর্ণ

যেকোনো প্রশ্নই করা হোক না কেন, কনফিডেন্টলি পজেটিভ উত্তর দেওয়ার চেষ্টা করতে হবে। কথা বলার সময় যেন জড়তা কাজ না করে, সেদিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। প্রশ্নকর্তার দিকে তাকিয়ে উত্তর দিতে হবে। চোখমুখ শক্ত করে উত্তর না দিয়ে হাসিমুখে ও এনার্জিটিকভাবে উত্তর দিতে হবে। প্রশ্নকর্তার সাথে আই কন্টাক্ট করার চেষ্টা থাকতে হবে। কিছুতেই নার্ভাস হয়ে পড়া যাবে না।

৬. আগের কোম্পানি সম্পর্কে খারাপ কথা না বলা

আপনাকে বাজিয়ে দেখার জন্য কিংবা অন্য যে কারণেই হোক, আগের কোম্পানি সম্পর্কিত প্রশ্ন করতে পারে। সেক্ষেত্রে আপনি কিছুতেই আগের কোম্পানির কোনো বদনাম করবেন না। আগের কোম্পানির কোনো দোষ ত্রুটি ইন্টারভিউতে তুলে ধরবেন না। কারণ এতে আপনার প্রতি একটা নেগেটিভ ধারণা চলে আসবে ইন্টারভিউয়ারের মধ্যে।

৭. কোম্পানি সম্পর্কে ওয়েবসাইট ও অফিসিয়াল পেইজ/গ্রুপ থেকে খুঁটিনাটি জেনে নেয়া

যে কোম্পানিতে ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন, আগেই আপনি সেই কোম্পানির সম্পর্কে খোঁজখবর নিন। ইন্টারনেটে কোম্পানির সম্পর্কে যথেষ্ট রিসার্চ করুন, যাতে করে আপনাকে বিড়ম্বনার সম্মুখীন না হতে হয়। কোম্পানির ওয়েবসাইট থেকে প্রয়োজনীয় তথ্য জেনে নিন। ওয়েবসাইটে “our goal” অংশটুকু পড়ে নিন ভালোভাবে৷ কোম্পানি একজন এমপ্লয়ির কাছে কী কী আশা করে, সেই সম্পর্কে ধারণা পেয়ে যাবেন। ওয়েবসাইট ছাড়াও কোম্পানির ফেইসবুক পেইজ ও লিংকড ইন থেকে অনেক তথ্য জেনে নিতে পারবেন আপনি। কারণ ইন্টারভিউতে কমন একটা প্রশ্ন থাকবেই, সেটা হচ্ছে-

                                              আমাদের কোম্পানি সম্পর্কে আপনি কী জানেন?

এই প্রশ্নটির মুখোমুখি আপনাকে যেকোনো ইন্টারভিউতে হতে হবে। প্রশ্নকর্তা এই প্রশ্নের মাধ্যমে জানতে চান, এই চাকরির ব্যাপারে আপনি কতটা আগ্রহী।

৮. রিজিউমি পরিচ্ছন্ন ও নিভাঁজ রাখা

অনেকেই নিজের সিভি বা রিজিউমি রোল করে কিংবা ভাঁজ করে খামে ঢুকিয়ে সাবমিট করে। এটা কখনোই করবেন না। ইন্টারভিউ বোর্ডে আপনার যে রিজিউমি আপনি জমা দেবেন, সেটি যেন হয় একদম ফ্রেশ। নতুনের মতো, নিভাঁজ। রিজিউমিতে যেন ভাঁজ না পড়ে৷ সেজন্য আপনি ফাইল ব্যবহার করতে পারেন।

চাকরির ইন্টারভিউয়ের কমন প্রশ্ন ও উত্তর

এবার আসি, ইন্টারভিউতে আপনাকে কোন কোন প্রশ্নের সম্মুখীন হতে হবে, সেই প্রশ্নগুলো নিয়ে। চাকরির ইন্টারভিউতে প্রশ্ন উত্তর পর্বটাই আসল। এখানে আপনি যদি আত্মবিশ্বাসী হতে পারেন, তাহলে কেউই আপনাকে ঠেকাতে পারবে না।

সাধারণত প্রাথমিকভাবে যে প্রশ্নগুলো করা হয় ইন্টারভিউতে সেগুলো জেনে নেওয়া উচিত। প্রশ্নের উত্তরগুলো যথাযথভাবে সাজাতে পারলে, তবেই ইন্টারভিউ দিতে যান, নচেত নয়। কারণ ক্যাজুয়ালি ইন্টারভিউ দিতে যাওয়া মানে আপনার ও আপনার ইন্টারভিউয়ার; দুজনেরই সময় নষ্ট করা।
চলুন দেখে নিই প্রশ্নগুলো।

১. আপনার নিজের সম্পর্কে কিছু বলুন

ইন্টারভিউর শুরুতেই আপনি এই প্রশ্নটির সম্মুখীন হতে পারেন, আর তা হচ্ছে চাকরির ইন্টারভিউতে নিজের সম্পর্কে কিছু বলা। ইংরেজি বা বাংকা, দুইভাবেই প্রশ্নটা করা হতে পারে। ইংরেজিতে করা হলে উত্তরটা ইংরেজিতেই দিতে হবে৷ আর বাংলায় করা হলে উত্তর বাংলায়। তাই দুটো ভাষাই আত্মস্থ করতে পারলে ভালো হয়।

এ প্রশ্নটি করার প্রধান উদ্দেশ্য হলো আপনার আত্মবিশ্বাস, আগ্রহ এবং নিজের সম্পর্কে প্যাশন (Passion)-এর সম্পর্কে জেনে নেওয়া। এই প্রশ্নটির মাধ্যমে ইন্টারভিউয়ার আপনার কমিউনিকেশন স্কিল সম্পর্কে ধারণা পাবে। ক্যাজুয়ালি জবাব দেবেন না এক্ষেত্রে। উত্তর দেবেন আপনার শিক্ষাগত যোগ্যতা, আপনার যাবতীয় দক্ষতা, পরিবার সম্পর্কে সাধারন কিছু তথ্য এবং পূর্ববর্তী কাজের অভিজ্ঞতা সম্পর্কে বর্ণনা দিয়ে। পরিবার সম্পর্কে বলতে গেলে ইমোশনাল কথাবার্তা বলতে শুরু করবেন না কিছুতেই। আপনাকে যা জিজ্ঞেস করা হচ্ছে, ঠিক তার উত্তরই দেবেন।

কথার মাঝে কিছুতেই তোতলানো যাবে না। কথা যেন জড়িয়ে না যায়। এই সমস্যাগুলো এড়াতে দুটো বাক্যের মাঝে স্বল্প সময়ের বিরতি নিন। সেই বিরতিতেই গুছিয়ে নিন পরবর্তী বাক্যটা কী বলবেন। তাড়াহুড়ো করার কিছু নেই, শান্ত থাকুন।

২. কোন বিষয়গুলোতে আপনি দক্ষ?

নিজের দক্ষতা ও কাজ সম্পর্কে কতটুকু পজিটিভ, তা যাচাই করার জন্য এই প্রশ্ন করা হয়। জবাব দেওয়ার সময় চেষ্টা করুন একটি বাক্যেই নিজের গুণ সম্পর্কে বলে ফেলবেন না। বরং সংক্ষেপে তা নিয়ে আলোচনা করুন। যেমন-

“আমার সবচেয়ে সেরা গুণ হচ্ছে আমি যেকোনো কাজ নির্ধারিত সময়ে সম্পন্ন করার চেষ্টা করি। কাজগুলো নিখুঁতভাবে সম্পন্ন করার জন্য পরিকল্পনার মাধ্যমে ধাপে ধাপে সামনে এগোই। আমার মিশুক স্বভাবের কারণে অনেকেই এটা মনে করেন যে আমি সহজেই মানুষের সঙ্গে মিশতে পারি।”

৩. আপনার দুর্বল দিকগুলো কী কী?

নিজের দুর্বল দিক জানতে চেয়েছে বলেই তা সরাসরি বলে দেবেন না। বরং দুর্বলতাটাকে অন্য একটি ভালো গুণের মোড়কে উপস্থাপন করুন। যেমন:

আমার সবচেয়ে বড় দুর্বলতা হলো- আমি যথাসময়ে কাজ জমা দিতে পছন্দ করি। অনেক ক্ষেত্রেই নির্ধারিত সময়টা কাজের জন্য যথাযথ হয় না। সেসব ক্ষেত্রে কাজটা অল্প সময়ে শেষ করতে গিয়ে পার্ফেক্টলি করা হয় না। ফলে অনেক ক্ষেত্রে প্রজেক্ট নির্ধারিত সময়ে জমা দেওয়া হয়ে গেলেও কাজটায় আমার সর্বোচ্চ এফোর্ট দেওয়া সম্ভব হয় না। আমার মতে, এটিই আমার দুর্বল দিক।

৪. আগামী পাঁচ বছরে আপনি নিজেকে কোথায় দেখতে চান?

নিজের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আপনার দূরদর্শিতা কতখানি, তা দেখার জন্য প্রশ্নটি করা হয়। অনেকেই এর জবাব দিতে গিয়ে একটু অপ্রস্তুত হয়ে পড়েন, কারণ ভবিষ্যতে কী হবে, তা কেউই জানেন না। অর্থাৎ, আগামী পাঁচ বছরে আমি নিজেকে ম্যানেজমেন্ট (ব্যবস্থাপনা) পজিশনে দেখতে চাই। তবে এর মধ্যবর্তী সময়ে আমি বাস্তবিক কর্মক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা অর্জন করতে চাই। আমি আমার দলের সদস্যদের সঙ্গে কাজ করে নতুন নতুন বিষয় শিখতে ও জানতে চাই এবং তাদের সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করতে চাই।

৬. পরিবর্তনের সঙ্গে আপনার মানিয়ে নেওয়ার ক্ষমতা কতখানি?

কর্মক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আসতে পারে। এই ধরনের পরিবর্তন একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। অনেকেই এই পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে নিজেকে বদলে নিতে পারেন না। এই ব্যাপারটাই নিশ্চিত করে জানার জন্য এই ধরনের প্রশ্ন করা হতে পারে। প্রশ্নের জবাবে আপনি যে পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে সক্ষম, তা বলার সঙ্গে সঙ্গে চাইলে আপনার আগের কর্মক্ষেত্রে ঘটে যাওয়া এই সংশ্লিষ্ট কোনো ঘটনা নিয়েও বলতে পারেন। আপনি জানিয়ে দিতে পারেন, যেকোনো পরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে আপনি সক্ষম এবং আপনি পরিশ্রমী।

৭. আপনি কতখানি কাজের চাপ নিতে সক্ষম?

মাঝেমধ্যেই কোম্পানিগুলোতে কাজের চাপ বেড়ে যায়। সেই অতিরিক্ত কাজের চাপ নিতে আপনি উপযুক্ত কি না, সেটা জানতে এই প্রশ্ন করা হয়। এই প্রশ্নের জবাবে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই দৃঢ়ভাবে জানিয়ে দিন কাজের চাপ থাকুক অথবা না থাকুক, দুই ক্ষেত্রেই আপনি মানিয়ে নিতে সক্ষম এবং অতিরিক্ত কাজের চাপ আপনাকে প্রভাবিত করে না।

৮. গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষেত্রে আপনি কতটা বিচক্ষণ?

কর্মক্ষেত্রে অনেক সময়ই আপনাকে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। সেসব সিদ্ধান্তের সঙ্গে জড়িত থাকে কোম্পানির ভবিষ্যৎ এবং লাভ-ক্ষতি। এমন প্রশ্নের জবাবে জানান, আপনি আপনার অভিজ্ঞতার ওপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত নিতে চেষ্টা করবেন। আপনি যে পুরো বিষয়টির খুঁটিনাটি যাচাই করে, টিম মেম্বারদের সঙ্গে আলোচনা করা সাপেক্ষে কোম্পানির জন্য মঙ্গলজনক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবেন, সেটাও জানিয়ে দিতে ভুলবেন না।

ইন্টারভিউ দেওয়ার সময়ে মাথায় রাখতে হবে, এক শব্দে বা এক লাইনে জবাব দেওয়ার পরিবর্তে সময় নিয়ে জবাব দিতে। শব্দচয়ন, উচ্চারণের মতন ব্যাপারগুলোর প্রতি বিশেষ খেয়াল রাখুন। উচ্চারণে কিছুতেই যেন আঞ্চলিকতা চলে না আসে। ইন্টারভিউর আগের রাতেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুছিয়ে তৈরি থাকুন।

অনলাইনে চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার কিছু টিপস

অনলাইনে চাকরির ইন্টারভিউ দেওয়ার টিপস

বর্তমান পরিস্থিতিতে মহামারীর প্রকোপ এড়িয়ে নিরাপদ দুরত্ব বজায় রাখার জন্য চাকরির ইন্টারভিউও অনলাইনে হচ্ছে। সাধারণত যেভাবে ইন্টারভিউ নেওয়া বা দেওয়া হয়, তার সাথে অনলাইনের ইন্টারভিউ এর কিছু পার্থক্য রয়েছে। যে ব্যাপারগুলো একদমই নতুন। সেসব নিয়ে খানিকটা আলোচনা করা যাক।

ইন্টারভিউর জন্য সেই জায়গা নির্ধারণ করুন, যেখানে হৈচৈ নেই। সেই সাথে শক্তিশালী নিরবচ্ছিন্ন ইন্টারনেট সংযোগ আছে তেমন ওয়েবক্যামযুক্ত কম্পিউটার/ল্যাপটপ বা স্মার্টফোন সামনে নিয়ে বসুন। ইন্টারভিউতে কথা বলার সময় আপনার ডিভাইসের ক্যামেরার দিকে চোখ রেখে কথা বলুন, যাতে ইন্টারভিউয়ারের চোখে চোখ রেখে সরাসরি কথা বলতে পারেন।

নিজের নিরবিচ্ছিন্ন ইন্টারনেট কানেকশন তো নিশ্চিত করলেন, কিন্তু যিনি আপনার ইন্টারভিউ নিচ্ছেন, তার কানেকশনে সমস্যা হতেই পারে। সেক্ষেত্রে নেটের সমস্যা বা কারিগরি সমস্যার কারণে ওপাশের কোনো কথা স্পষ্ট শুনতে না পারলে, কথা ভেঙে ভেঙে এলে, বিনীতভাবে কথাটি পুনরায় বলতে অনুরোধ করুন। কোনো কথা স্পষ্ট না বুঝে আন্দাজে উত্তর দিতে যাবেন না কিছুতেই। তাতে ভুল হওয়ার আশঙ্কা থাকবে।

অনলাইনে ইন্টারভিউ প্রচলিত ইন্টারভিউর তুলনায় কম সময়ে হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। তাই প্রশ্নের প্রাসঙ্গিক উত্তর যথাযথভাবে সংক্ষেপে দেওয়া ভালো।

সভচেয়ে ভালো হয়, আগেই পরিচিত কারো সঙ্গে ভিডিও কলে নমুনা ইন্টারভিউর প্রস্তুতি নিতে পারেন। এতে নিজের ভুলত্রুটিগুলো শনাক্ত করতে পারবেন। অন্য কোনো সমস্যা থাকলে, তাও আপনার সঙ্গী ধরিয়ে দিতে পারবে।
সবমিলিয়ে, কিছুতেই নার্ভাস হওয়া যাবে না।

যদি কয়েকবার চেষ্টার পরেও বিফল হয়ে ফিরে আসতে হয়, সেক্ষেত্রে ভাবুন, কেন আপনি বার বার বাদ পড়ছেন। নিজেকে প্রশ্ন করুন। উত্তরগুলো নিজেই পেয়ে যাবেন।

যদি আপনি আপনার কাজের সেরা দিকগুলো উপস্থাপন করতে পারেন, তাহলে অবশ্যই আপনি আপনার কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্যে পৌঁছুতে পারবেন।

 

বাংলাহাব প্রশ্ন-উত্তর ভিত্তিক কমিউনিটি ওয়েবসাইট বাংলাহাব Answers থেকে পাঠকের কিছু প্রশ্ন ও তার উত্তর। আপনিও ভিজিট করুন ও প্রশ্ন-উত্তর দিন। 

প্রশ্ন- ক্যারিয়ার গড়তে কি করণীয় ?
উত্তর- ক্যারিয়ার গড়তে অবশ্যই সবার আগে প্রয়োজন সঠিক পরিকল্পনা। আপনার আগ্রহের বিষয়, দক্ষতা ও অন্যান্য বিষয় বিবেচনা করে আপনার ক্যারিয়ারের পরিকল্পনা নির্ধারণ করবেন। এ বিষয়ে বাংলাহাবের ক্যারিয়ার বিভাগের লেখাগুলো পড়তে পারেন, জানাতে পারেন আপনাদের মতামত। 

প্রশ্ন- আপনি কোন ধরণের চাকরির জন্য চেষ্টা করবেন?
উত্তরসবার আগে নিজের দক্ষতা ও আগ্রহ সম্পর্কে জানুন। এরপর তার সাথে সম্পর্কত জব সেক্টর নিয়ে অনলাইনে জানুন, জব সাইটে দেখুন সেই জব সেক্টরে নিয়োগ পেতে প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো কি, এরপর নির্ধারণ করুন আপনি কোন ধরণের চাকরি করবেন।