জুলিয়া ক্যাপলেস : বাস্তবের ভ্যাম্পায়ার মানবী

সামনে বসা লোকটাকে দেখে বিচিত্র একটা হাসি ফুটে উঠলো জুলিয়ার মুখে। লোভে চকচক করে উঠলো তার চোখদুটো । খুব দ্রুতগতিতে নিজের জিভ বের শুকনো ঠোঁটটা ভিজিয়ে নিলো জুলিয়া। বেশ তরতাজা আর কমবয়সী এই লোকটা । দেহের চামড়াটাও বেশ টসটসে আর মসৃণ। দেখতেও বেশ সুন্দর!!

” মনে হয় এর রক্তটা বেশ সুস্বাদু হবে!” – আপনমনেই কথা বলে উঠলো জুলিয়া। তারপর অতি সাবধানে পকেট থেকে বের করে ফেললো তার শখের ছুরিটা। একটানে কেটে ফেললো সামনে বসা লোকটা ঘাড়ের নরম চামড়া। দ্রুতগতিতে বেরিয়ে এলো রক্তের ধারা। এবং সে রক্ত দেখে কেমন যেনো পাগলের মতো হয়ে গেলো জুলিয়া। ঝাঁপিয়ে পড়লো লোকটার ওপর।তারপর বিড়ালের মতো জিভ বের করে চেটেপুটে খেয়ে নিতে লাগলো তরল রক্ত।

উপরে বর্ণিত্ ঘটনাটি জুলিয়া ক্যাপলেস নামের এক ৪৫ বছর বয়সী নারীর বাস্তব ঘটনা।

image-mirror.co.uk

৩০ বছর ধরে মানুষের রক্ত পান করে আসছেন তিনি। রক্ত পান করা তার শখ এবং একমাত্র নেশা।জলের চেয়ে রক্তই বেশী পান করেন এই নারী। প্রতিমাসে অন্তত দু’লিটার রক্তপান না করলে তার একদমই চলে না।পার্টিতে গেলে তিনি মদ নয়,বরং রক্ত খেতেই বেশী পছন্দ করেন।থাকেন যুক্তরাষ্ট্রের পেনসিলভেনিয়া অঙ্গরাজ্যের উইলকিস নামক জায়গায়।

ইতোমধ্যেই ” ভ্যাম্পায়ার মানবী ” নামে বেশ খ্যাতি অর্জন করেছেন জুলিয়া। তবে গল্প কিংবা ছবির মতো তিনি চুপিচুপি রক্ত পান করেন না,বরং রক্তদাতাদের কাছ থেকে অনুমতি নিয়ে রক্তপান করেন এ ভ্যাম্পায়ার মানবী। রক্তের সন্ধানে জুলিয়া প্রতিনিয়ত ছুটে যান ভ্যাম্পায়ার প্রেমী বিভিন্ন সংগঠন, ব্যাক্তি কিংবা অদ্ভূত জিনিস কেনাবেচা করে, এমন সব দোকানের কাছে। তারা বেশ উৎসাহের সঙ্গে রক্তদান করেন জুলিয়াকে। উৎসাহী ব্যাক্তির গলার পাশ থেকে ছোট অথচ তীক্ষ্ণ ছুরি দিয়ে চামড়া কেটে রক্ত চুষে পান করেন জুলিয়া। মাঝে মাঝে তিনি নিজের ছেলে আলেক্সি (১১) এবং মেয়ে আ্যারিয়েলেরও (২৪)  রক্ত পান করেন। সন্তানরা ভীষণ রকমের ত্যাক্ত বিরক্ত তাদের মায়ের এহেন অদ্ভূত শখের ওপর।

জুলিয়ার ধারণা রক্ত পান করলে তার বয়স কমে যায়। তার সৌন্দর্য বেড়ে যায় কয়েকগুণ। শরীরের ভেতরে অনুভব করেন অদ্ভূতরকমের এক শক্তি। দূর হয়ে যায় তার সমস্ত শারীরিক দুর্বলতা, বিষন্নতা এবং মাথাব্যাথা।

খুব তরুন বয়স থেকেই গড়ে উঠেছিলো তার এ রক্তপানের অভ্যাস। ব্যাপারটার উৎপত্তি হয়েছিলো সেদিন,যখন তিনি তার বয়ফ্রেন্ড ডোনাল্ডকে ( বর্তমানে সাবেক স্বামী)প্রথম চুমো খেয়েছিলেন। চুমো খাবার সময় কামড়ে দিয়েছিলেন তিনি ডোনাল্ডের ঠোঁট। আর ঠিক তখনি তিনি টের পেয়েছিলেন মানুষের রক্তের স্বাদ । বুঝতে পেরেছিলেন কতটা সুস্বাদু রক্ত নামের এ তরল জিনিসটি!!!

প্রচন্ডরকমের ভ্যাম্পায়ার আসক্ত এ নারী বিয়েটাও করেছিলেন ভ্যাম্পায়ার সেজেই।বিয়ের সময় বর কনে দু’জনে একে অপরের রক্ত পান করে উদযাপন করেছিলেন বিয়ের উৎসব। এরপর ডোনাল্ড এবং জুলিয়া দু’জনেই রক্তপান করতেন প্রতিনিয়ত। তবে বড় সন্তানের জন্মের পর সন্তানের মঙ্গলের জন্য ডোনাল্ড রক্ত পান করা ছেড়ে দেন। কিন্তু জুলিয়া ছাড়তে পারেননি তার এ বিচিত্র নেশা।

সন্তানদের অনুরোধে এ অদ্ভূত শখ থেকে মুক্তি পাবার জন্য তিনি চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছিলেন। ডাক্তাররা তাকে সাবধান করেছেন যে- এভাবে রক্তপান করলে তিনি নানান রক্তবাহিত রোগে আক্রান্ত হতে পারেন। কিংবা হতে পারে ঘাতক ব্যাধি এইডস।কিন্তু জুলিয়া তাদের স্পষ্টভাবে বলে দিয়েছেন যে,রক্তপানের ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করেন। রক্তপানের আগে ভালোমতো পরীক্ষা করে নেন রক্তদাতার স্বাস্থ্য। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে তবেই তিনি রক্তপানের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন।

তথ্যসূত্রঃ মিরর