=============================
আপনার দাঁতের যে কোন অসুবিধায় পাশে আছে “প্যানাসীয়া ডেন্টাল পয়েন্ট”। বাংলাহাবের লেখক, সদস্য ও ভিজিটরদের জন্য সুখবর হলো “প্যানাসীয়া ডেন্টাল পয়েন্ট” দিচ্ছে আপনাদের সবার জন্য ১০% ছাড়। ফোন করে অথবা “প্যানাসীয়া ডেন্টাল পয়েন্ট” – এ গিয়ে বাংলাহাব এর নাম বললেই পেয়ে যাবেন এই সুযোগ।
সরাসরি যোগাযোগ – ০১৭১৯-৯৭৯৮৯৮
==============================
মানুষের চেহারা এবং ব্যক্তিত্বের অন্যতম আকর্ষণীয় অনুষঙ্গ হচ্ছে একটি মনখোলা হাসি। প্রথম সাক্ষাতেই মানুষের মনে ইতিবাচক ছাপ ফেলতে আন্তরিক হাসির কোন বিকল্প নেই। আর হাসির সৌন্দর্য অনেকটাই নির্ভর করে ঝকঝকে সাদা পরিস্কার দু’পাটি দাঁতের ওপর। শুধুমাত্র দাঁতের স্বাভাবিক রং নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে অনেকের মধ্যেই আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি দেখা দেয়।
বিভিন্ন কারণে দাঁতের রং পরিবর্তন হয়ে তা হলুদ, লাল, বাদামী, ধূসর, কালো প্রভৃতি রং ধারণ করতে পারে। আজকের এই লেখায় মূলত দাঁত হলদে রং ধারণ করার ব্যাপারে আলোকপাত করা হলো।
মানুষের দাঁতের স্বাভাবিক রং কেমন?
মানুষের দাঁত স্বাভাবিকভাবে কখনোই সম্পূর্ণ সাদা হয় না। শিশুদের দুধ দাঁতের রং হয় নীলচে সাদা। আর প্রাপ্তবয়স্কদের দাঁত সাধারণত ধূসর সাদা, ধূসর হলুদ বা হলদে সাদা হয়ে থাকে।
যেসব কারণে দাঁতে হলদে ভাব দেখা দিতে পারেঃ
১) দাঁতের প্লাক পরিস্কার না করা:
দাঁত পরিস্কার করার ঠিক পরপরই মুখের লালা দ্বারা দাঁতগুলো আবৃত হয়। পরে এই লালার ওপর ব্যাকটেরিয়া জমা হয়ে তৈরি করে ডেন্টাল প্লাক। প্রাথমিক পর্যায়ে এটি বর্ণহীন, আঠালো একটি পরত হিসেবে দাঁতে লেগে থাকে। পরে সময়ের সাথে এটি হালকা হলুদ রং ধারণ করে। তাই নিয়মিত সঠিকভাবে দাঁত পরিস্কার না করা হলে প্লাক জমে দাঁত হলুদ দেখায় এবং দীর্ঘসময় প্লাক জমে থাকলে দাঁত ও মাড়ির অন্যান্য রোগবালাই দেখা দিতে পারে।
২) নির্দিষ্ট কিছু খাবার ও পানীয়
● অতিরিক্ত চা, কফি, কোলা-জাতীয় পানীয় পান করা
● ঝোলজাতীয় খাবার, যেসব প্রক্রিয়াজাত খাবারে অ্যাসিডের পরিমাণ বেশি, সেসব বেশি খাওয়া।
৩) তামাক সেবন করা
নিকোটিন বাতাসের অক্সিজেনের সংস্পর্শে আসলে হলুদ বা বাদামী রং ধারণ করে। এটি দাঁতের এনামেলের ফাঁকফোকরে প্রবেশ করে থাকলে ধীরেধীরে দাঁত হলদে, বাদামী বা কালো রং ধারণ করে।
৪) বয়সজনিত কারণ
বয়স বাড়ার সাথে সাথে দাঁতের এনামেল পাতলা ও অনুজ্জ্বল হয়ে আসে। তখন এনামেলের ঠিক নিচে থাকা ডেন্টিনের হলুদ রংটিই এনামেলের ওপর থেকে দেখা যায়। ফলে দাঁতগুলো হলদে মনে হয়।
৫) ঔষধ ও চিকিৎসাপদ্ধতি:
● নির্দিষ্ট কিছু অ্যান্টিবায়োটিক, অ্যান্টিহিস্টামিন, অ্যান্টিসাইকোটিক ঔষধ, উচ্চ রক্তচাপ কমানোর ঔষধ এবং মাউথওয়াস ব্যবহারের ফলে দাঁতের রং পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ইচ্ছেমত ঔষধ সেবন করা পরিহার করা উচিত। একজন চিকিৎসকই রোগীর সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে তাঁর জন্যে উপযুক্ত ঔষধটি বাছাই করতে পারেন।
● মাথা, গলা এবং ঘাড়- এসব এলাকায় ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্যে কেমোথেরাপি নেওয়া হলে রোগীর দাঁত হলুদ হয়ে যেতে পারে।
● মুখে লালা নিঃসরণ কম হওয়া- লালা কম পরিমাণে নিঃসৃত হলে এনামেল অরক্ষিত অবস্থায় থাকে। ফলে এনামেল ক্ষয় হয়ে পাতলা হয়ে যায় এবং দাঁত দেখতে হলদে মনে হয়।
● যেসব রোগী নাক বন্ধ থাকার কারণে মুখ দিয়ে নিঃশ্বাস নেন, তাঁদেরও দাঁতে হলদে ভাব হতে পারে।
এছাড়া বংশগত কারণে এনামেল পাতলা হলে দাঁত হলুদ দেখাতে পারে।
চিকিৎসা:
দাঁতের স্বাভাবিক রং ফিরিয়ে আনার জন্যে বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি প্রয়োগ করা যায়। যেমন- ভিনিয়ার, কম্পোজিট রেস্টোরেশান, আর্টিফিসিয়াল ক্রাউন, ব্লিচিং প্রভৃতি। একজন দন্তচিকিৎসক রোগীর সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে তাঁর জন্যে উপযুক্ত চিকিৎসাপদ্ধতিটি নির্বাচন করে থাকেন।
এর পাশাপাশি দাঁতের রং স্বাভাবিক করার জন্যে রোগী নিজে যা করতে পারেন-
১) যেসব খাবার ও পানীয় দাঁতে হলদে ভাব তৈরি করে, সেগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা।
২) কিছু খাবারকে বলা হয় ডিটারজেন্ট ফুড, কারণ এগুলো রান্না না করা অবস্থায় চিবিয়ে খেলে দাঁতের ফাঁকে আটকে থাকা খাদ্যকণা বেরিয়ে আসে এবং দাঁত পরিস্কার হয়। আপেল, আখ, গাজর, পেয়ারা, সেলেরি এ জাতীয় খাবারের মধ্যে পড়ে। সুতরাং খাওয়া শেষে এরকম কোন একটি ডিটারজেন্ট ফুড খেয়ে নিতে পারলে ভাল হয়।
৩) বিভিন্ন ঘরোয়া উপাদান ব্যবহার করে দাঁতের হলদে ভাব কিছুটা কমিয়ে আনা যেতে পারে। যেমন-
(ক) বেকিং সোডা: এটি দাঁতে জমে থাকা প্লাক দূর করে দাঁতকে ঝকঝকে সাদা করে তোলে।
১/৪ চা চামচ বেকিং সোডা টুথপেস্টের সাথে মিশিয়ে সেই মিশ্রণটি দিয়ে দাঁত ব্রাশ করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে টুথপেস্টের বদলে লেবুর রস বা সাদা সিরকাও ব্যবহার করা যায়। ব্রাশিং এর পর ঈষদুষ্ণ পানি দিয়ে মুখ কুলকুচি করতে হবে। সপ্তাহে এক বা দুইবার এটি করা যাবে। মনে রাখা দরকার, বেকিং সোডা অতিরিক্ত ব্যবহারের ফলে দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।
(খ) লেবুর রস: লেবুর ব্লিচিং ক্ষমতা দাঁতের হলুদ ভাব দূর করতে কার্যকর।
কয়েক ফোঁটা লেবুর রসের সাথে সামান্য লবণ মিশিয়ে নিতে হবে। এরপর মাড়ি ও হলুদ হয়ে যাওয়া দাঁতের ওপর টুথব্রাসের সাহায্যে মিশ্রণটিকে প্রয়োগ করতে হবে। কয়েক মিনিট রাখার পর ভালভাবে কুলি করে মুখ ধুয়ে ফেলতে হবে। প্রতিদিন দু’বার করে পরপর দুই সপ্তাহ এটি ব্যবহার করলে দাঁতের হলদে ভাব কমে আসতে পারে।
(গ) লবণ: এটি দাঁতের খনিজ উপাদানগুলোর ক্ষয় পূরণ করে এবং দাঁতের সাদা রং ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে।
মাঝেমাঝে টুথপেস্টের পরিবর্তে লবণ ব্যবহার করতে পারেন। তবে এক্ষেত্রে অতিরিক্ত সাবধানতা অবলম্বন করা প্রয়োজন কারণ, এটি বেশি রুক্ষভাবে ব্যবহার করলে দাঁতের এনামেল ও মাড়ির ক্ষতি হতে পারে।
(ঘ) কমলার খোসা: এতে বিদ্যমান ভিটামিন সি ও বিভিন্ন খনিজ উপাদান দাঁতে জীবাণুর আক্রমণ প্রতিহত করে।
প্রতি রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে তাজা কমলার খোসা দাঁতের ওপর ঘষে নিন। প্রতিবার তাজা খোসা সংগ্রহ করা সম্ভব না হলে কমলার খোসা শুকিয়ে গুঁড়ো করে নিয়ে সেটিও ব্যবহার করা যাবে। কয়েক সপ্তাহ নিয়মিত ব্যবহারে দাঁতের রংয়ে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন চোখে পড়বে।
৪) দাঁতের হলদে ভাব দূর করতে অ্যালকোহল মুক্ত এবং হাইড্রোজেন পারঅক্সাইড সমৃদ্ধ মাউথওয়াস বেছে নিতে পারেন।
৫) প্রসাধনী ব্যবহারের ক্ষেত্রে কিছুটা কৌশলী হলেও দাঁতের হলুদ রং কিছুটা আড়াল করা সম্ভব। গাঢ় রংয়ের লিপস্টিক ব্যবহারে দাঁত কিছুটা কম হলুদ দেখায়। অপরদিকে হালকা রংয়ের লিপস্টিক ব্যবহারে দাঁতের হলুদ রং আরো প্রকটভাবে ফুটে ওঠে।
দাঁত ও মুখ পরিস্কার রাখার ব্যাপারে কিছু সাধারণ নির্দেশনা:
● দাঁত ব্রাশ করতে হবে দিনে দুই বার- রাতে ঘুমানোর আগে এবং সকালে নাশতা খাওয়ার পর।
● টুথব্রাশের ব্রিসল বাঁকা হতে শুরু করলেই সেটি পরিবর্তন করুন। ব্রিসল দাঁতের ফাঁকে ঠিকমত পৌঁছতে না পারলে দাঁত ভালভাবে পরিস্কার হবে না। ফলে দাঁত হলুদ হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। দীর্ঘদিন একই টুথব্রাশ ব্যবহারের ফলে জীবাণু সংক্রমণেরও ঝুঁকি বেড়ে যায়।
● বারবার, বেশি সময় ধরে, খুব জোরে চাপ দিয়ে দাঁত ব্রাশ করলেই দাঁত সাদা হবে, এমন ধারণা ভুল। ভাল টুথপেস্ট ও টুথব্রাশ দিয়ে, সঠিক পদ্ধতি মেনে দিনে দুই বেলা দেড় থেকে দুই মিনিট দাঁত ব্রাশ করাই যথেষ্ট।
● জিহ্বায় রয়েছে অসংখ্য ব্যাকটেরিয়া বসবাস। তাই মুখের স্বাস্থ্য রক্ষায় জিহ্বা পরিস্কার রাখা খুব জরুরী। দুই বেলা দাঁত ব্রাসের সাথেসাথে টাং স্ক্রেপারের সাহায্যে জিহ্বাটাও পরিস্কার করে নেবেন।
● প্রতিবার খাওয়া শেষে মুখ কুলকুচি করে ফেলতে হবে।
● মাউথওয়াস ও ডেন্টাল ফ্লস ব্যবহারের অভ্যাস করুন।
● ছয় মাস পরপর একজন বিশেষজ্ঞ দন্তচিকিৎসকের কাছে দাঁত ও মুখের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত। কারণ যে কোন রোগ যত দ্রুত সনাক্ত হবে, তার চিকিৎসা তত সহজ, সাশ্রয়ী এবং কম সময়সাপেক্ষ হবে।
লেখিকাঃ ইফফাত সামরিন মুনা, বিডিএস শিক্ষার্থী, ইউনিভার্সিটি ডেন্টাল কলেজ এন্ড হসপিটাল
লেখা সম্পাদনাঃ তাসনিয়া আজমী, সহ-সম্পাদক, বাংলাহাব ও এমবিবিএস শিক্ষার্থী, নর্দার্ন ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ
=============================
আপনার দাঁতের যে কোন অসুবিধায় পাশে আছে “প্যানাসীয়া ডেন্টাল পয়েন্ট”। বাংলাহাবের লেখক, সদস্য ও ভিজিটরদের জন্য সুখবর হলো “প্যানাসীয়া ডেন্টাল পয়েন্ট” দিচ্ছে আপনাদের সবার জন্য ১০% ছাড়। ফোন করে অথবা “প্যানাসীয়া ডেন্টাল পয়েন্ট” – এ আপনাকে বাংলাহাব এর নাম বললেই পেয়ে যাবের এই সুযোগ।
সরাসরি যোগাযোগ – ০১৭১৯-৯৭৯৮৯৮
==============================