কখনো কি ভেবে দেখেছেন, আপনার চারপাশের লোকজন তার চারপাশটাকে কিভাবে দেখে?
বাংলাহাব ইন্টারনেট ঘেঁটে একই ছবি বিভিন্ন বয়সের মানুষ ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে কিভাবে দেখে তা খুঁজে বের করেছে। চলুন জেনে আসা যাক, কে কিভাবে তার চারপাশটা দেখে…
একজন সুস্থ-স্বাভাবিক পূর্ণ বয়স্ক মানুষ ঠিক এভাবেই তার চারপাশটা দেখে। এখন চলুন দেখি এই ছবিটাই বাকিরা কিভাবে দেখে…
সাধারণত ধারণা করা হয়ে থাকে যে, ট্যারা চোখের লোকেরা নাকি কোন বস্তুকে দুইবার দেখে কিংবা উলটো করে দেখে। কিন্তু সত্যটা হচ্ছে এই ধরনের লোকের ক্ষেত্রে তার ব্রেন এক চোখে কি দেখছে তা উপেক্ষা করে, তাই তারা কোন বস্তু দুইবার দেখে না। আপনি একচোখ বন্ধ করে রাখলে যেভাবে দেখবেন, তারা তাদের চারপাশটা সেভাবেই দেখে।
ক্ষীন দৃষ্টি সম্পন্ন লোকেরা কাছের জিনিসকে স্বাভাবিক ভাবেই দেখে, কিন্তু দূরের জিনিস ঝাপসা দেখতে পায়।
দীর্ঘ দৃষ্টি সম্পন্ন লোকদের ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আবার উলটো। তারা দূরের জিনিস ঠিকঠাক মতই দেখতে পায়, কিন্তু কাছের জিনিস ঝাপসা দেখে।
চোখে ছানি পড়া লোকেরা এভাবেই দেখে। তারা বস্তুর আকৃতি, রঙ এবং আলোর পার্থক্য বুঝতে পারে। কিন্তু স্বাভাবিক ভাবে কিছু দেখতে পায় না বলে তাদের কন্ডিশনকে অন্ধত্ব বলে।
দৃষ্টি হারানোরা তাদের চারপাশকে দেখে এভাবে। তারা শুধু মাত্র আলো আর অন্ধকারের তফাৎটা বুঝতে পারে। দৃষ্টি হারানো বলতে যারা স্বাভাবিক হিসেবেই জন্মগ্রহণ করে কিন্তু পরে কোন দূর্ঘটনা কিংবা অসুখের কারণে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলে তাদেরকে বোঝায়।
পুরোপুরি অন্ধ যারা তারা চারপাশটা এইরকম অন্ধকারই দেখে। কিন্তু অন্ধকার বা কালো দেখতে কিরকম সেটা তারা জানে না বলে এটা তারা বোঝাতেও পারে না। এই ফাঁকে জানিয়ে রাখি, জন্মান্ধরা তাদের স্বপ্নেও কিছু দেখে না।
বর্ণান্ধ অনেক রকমের হয়ে থাকে। এর মাঝে সবচেয়ে কমন কন্ডিশন হল Deuteranomaly। এই ধরণের বর্ণান্ধরা উজ্জ্বল রঙ (বিশেষ করে লাল এবং সবুজ) ঝাপসা হিসেবে দেখে।
সদ্য জন্মানো শিশুরা চারপাশটা এভাবেই দেখে, প্রায়ই ঝাপসা। তারা শুধু আলো আর অন্ধকারের উপস্থিতিটা বুঝতে পারে।
জন্মানোর এক মাসের মাথায় বাচ্চারা বড় ধরনের আকৃতি আর চোখ থেকে ৮ ইঞ্চি (২০ সেমি) দূরের বস্তুর আকৃতি বুঝতে পারে। উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, দুধপান করানোর সময় মায়ের চেহারা।
জন্মানোর তিন মাসের মাথায় বাচ্চারা তাদের বাবা-মাকে চিনতে শুরু করে। ছয় মাসের মাথায় তারা রঙ বুঝতে শুরু করে, বিশেষ করে লাল আর হলুদ।
এক দুই গ্লাসে হবে না! চারপাশটা এমন দেখতে হলে আপনাকে পুরোপুরি মদ্যপ হতে হবে!
গাঁজা সেবনের পর আপনার দৃষ্টিশক্তিও খানিকটা মদ্যপদের মতই হবে।
এলএসডিকে পৃথিবীর সবচেয়ে ভয়ানক ড্রাগগুলোর একটা হিসাবে বিবেচনা করা হয়। এলএসডি নেয়ার পরে চারপাশটা কেমন দেখায় সেটা যদি আপনি সত্যি সত্যি জানতে চান, তবে এই ভিডিওটা দেখুন (এই ভিডিও লেখায় ক্লিক করুন)। ফুল স্ক্রিণে দেখতে হবে, দেখার সময় কেন্দ্রে থাকা বর্ণগুলো পড়ার চেষ্টা করুন। তাহলে খানিকটা এলএসডির স্বাদ পাবেন!
এই শর্টফিল্মটাও দেখতে পারেন (শর্টফিল্ম লেখায় ক্লিক করুন)। এলএসডি নেয়ার পরবর্তী ঘোরটুকু এইখানে দেখানো হয়েছে।
কোকেনের প্রভাব জানতে হলে আপনি হলিউডি মুভি Limitless দেখতে পারেন। কোকেন সেবনের পর আপনি চারপাশটা আরো পরিপূর্ণ, আরো উজ্জ্বল এবং কিঞ্চিত বিকৃত ভাবে দেখবেন।
ভিজ্যুয়েল ইফেক্টটা এখানে খুব একটা গুরত্বপূর্ণ নয়, কারণ হেরোইন সেবনের পরে আপনি হঠাৎ করে জীবনের সব অর্থ হারিয়ে ফেলবেন আর আপনার মনটা অহেতুক আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে। তবুও কিছুটা ধারণা পেতে চাইলে এই ভিডিওটা দেখতে পারেন (এই ভিডিও লেখায় ক্লিক করুন)।
তথ্যসুত্রঃ ব্রাইট সাইড।