দেশে দেশে সকালের বিভিন্ন নাস্তা এবং জনপ্রিয় খাবার

ভোজন প্রিয় মানুষেরা নানা ধরনের খাবারের স্বাদ নিতে অতি আগ্রহী। আর যেকোনো খাবারই ভালোমতো রান্না করা হলে তা খেতে মুখরোচক হয়। তবে কোনো কোনো খাবার স্বাদের কারণেই হয়ে ওঠে বিশ্বখ্যাত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রান্ত থেকে উঠে আসা খাবার একে অপরের সঙ্গে পাল্লা দেয়।পৃথিবীর প্রতিটি অঞ্চলের, প্রতিটি জনপদেরই থাকে বিশেষ বৈশিষ্ট্য, ঐতিহ্য ও খাবার। তবে দেশ-কাল যাই হোক না কেন; স্বভাবতই বাইরে থেকে কোথাও গিয়ে ওই অঞ্চলের খাবারের প্রতি বিশেষ আকর্ষণ থাকে যে কারোই।তবে জেনে নেওয়া যাক বিভিন্ন দেশের সকালের নাস্তা এবং জনপ্রিয় খাবার সম্পর্কে।

বাংলাদেশ:

বাংলাদেশের প্রকৃতির সাথে মানুষের নাস্তারও পরিবর্তন হয়। যেমন গ্রীষ্মে একরকম, শীতে একরকম, বর্ষায় আরেক রকম। তবে সবচেয়ে মজা শীতের নাস্তা। এসময় নাস্তায় থাকে হরেক রকমের পিঠা।ভাপা পিঠা,খেঁজুর রসে ভাপা পিঠা,খোলা চিতুই, দুধ চিতুই,দুধপুলি,বিবিখানা পিঠা এরকম হাজারো পিঠা দিয়ে নাস্তা করা হয়।

blank

ভারত:

ইডলি দিয়ে নাস্তা করতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে৷ ইডলি তৈরি হয় সেদ্ধ চালের আটা দিয়ে। আরও বেশি ভালো ইডলির সাথে নারকেলের দুধ থাকে৷ দক্ষিণ ভারতের প্রচণ্ড গরমে এই নাস্তা ভালোভাবে দিন কাটাতে সাহায্য করে৷আর শীতকালে কাশ্মীরীদের কাছে সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার ‘হারিসা’। একে মশলাযুক্ত মাংসের জাউও বলা চলে। মাংসের সঙ্গে বিশ্বখ্যাত কাশ্মীরি জাফরান, চাল ও হরেক রকম মসলা দিয়ে তৈরি করা হয় এই মুখরোচক খাবারটি। শীতকালে হারিসার চাহিদা বৃদ্ধি পায় কয়েকগুণ। শীতের তীব্রতার থেকে বাঁচতে হারিসাকে অন্যতম নিয়ামক মানেন কাশ্মীরবাসী।উচ্চমাত্রায় ক্যালরি এবং প্রোটিন সমৃদ্ধ হওয়ায় শীতকালে শরীরের তাপমাত্রা সমন্বয় করতে হারিসা খুবই উপকারী।

সিরিয়া:

ঘরে তৈরি রুটি, জলপাই, টমেটো, শসা এবং ধনে পাতা, পুদিনা পাতার মতো বিভিন্ন পাতা মসলা দিয়ে খায়৷ তাছাড়া নাস্তার টেবিলে থাকে বিভিন্ন রকমের তাজা ফল৷মুরগির মাংসের সঙ্গে মটরশুঁটি ও সুগন্ধিজাতীয় গুল্ম মিশিয়ে এ খাবার তৈরি হয়। দেখতে অনেকটা আলু চপ ও বড়ার মতো।এটি সিরিয়ার একটি জনপ্রিয় খাবার। তবে অনেকে একে ভারতীয় খাবার দাবি করেন।

blank

মিশর:

এখানকার মানুষের দিন শুরু হয় ফল, সবজি, শিম, দই, মিষ্টি আলু, রুটি আর কফি পান করে৷হুম্মাস মিসরের ঐতিহ্যবাহী খাবার এটি। বড় ফুলে ওঠা গোলাকার রুটির ওপর ছড়ানো সেদ্ধু আলু ও মসলার মিশেলে তৈরি হয় হুম্মাস। এটা তৈরিতে ব্যবহৃত হয় সেদ্ধ ও ভর্তা করা মুরগির মাংস, মটরশুঁটির সঙ্গে তেহানি, অলিভ অয়েল ও লেবুর রস, রসুন ও লবনের মিশ্রণ।

ইন্দোনেশিয়া:

ইন্দোনেশিয়ার বালি দ্বীপের লাল চালের ভাত দিয়েই নাস্তা করেন স্থানীয়রা।ইন্দোনেশিয়ান খাবার এর মধ্যে সব চেয়ে জনপ্রিয় হলো নাসী গরেং যেটা হলো বাসী ভাত ভাঁজি ঝাল দিয়ে। ছোট ছোট বাটি তে অল্প করে অনেক কিছু একবারে পরিবেশন করে । তারা অনেক নারিকেল ব্যবহার করে তাদের খাবারে । কোনো আইটেম নারিকেল এর গন্ধে , কোনো আইটেম অনেক ঝাল, কোনো টা আবার মিষ্টি। SERUNDENG নামে একটা সাইড ডিশ থাকে যেটা কি না নারিকেলই কুচি কুচি করে কেটে ঝাল দিয়ে ভাঁজে। অন্যান্য খাবারে মিশিয়ে খাবার জন্য।

থাইল্যান্ড:

এখানকার মানুষের দিন শুরু হয় থাই চালের ভাত খেয়ে৷ সাথে এক বাটি মাছের স্যুপ, ডিম ভাজি এবং চিংড়ির সাথে সবজি ভাজি৷সেরা খাবারে নাম “টম ইয়াম গুং” (tom yam goong)। এটি হচ্ছে থাইল্যান্ডের খাবার। এটা তৈরি হয় চিংড়ি, মাশরুম, টমেটো, লেমনগ্রাস সহকারে। সাথে মেশানো হয় নারকেল দুধ আর ক্রিম। এটি টক, লবণাক্ত, ঝাল, মিষ্টি–বিভিন্ন স্বাদে তৈরি করা হয়

ঘানা:

ঘানার বেশির ভাগ মানুষ সকালের নাস্তা সারেন শুধু একটি ডিম আর সাথে এক কাপ কাকাউ দিয়ে৷

প্যারাগুয়ে:

ঘরে তৈরি খৈ, চিড়া এবং বিভিন্ন ধরনের শস্যদানা মিশিয়ে দই ও দুধ দিয়ে খান প্যারাগুয়েবাসী৷ সাথে থাকে ফল এবং চা৷ চা পাতা (বিশেষ রকমের চা) একটি বিশেষ ধরনের কাপে রেখে গরম পানি ঢেলে দিতে হয়৷ এই চায়ের পুরো স্বাদ পেতে বিশেষ ধরনের ‘বমবিলা’ নামক অ্যালুমিনিয়ামের স্ট্র দিয়ে পান করতে হয়৷

blank

রাশিয়া:

এখানে সকালের নাস্তায় থাকে ঘরে তৈরি রুটি, চকলেট দুধ এবং চা ও মধু৷পেলমেনি এটা অনেকটা পুডিং এর মতো। এটা পূর্ব ইউরোপের ঐতিহ্যবাহী খাবার যা কিনা মাংসের কিমা দিয়ে তৈরি করা হয়। একইরকমের খাবারে একটু ভিন্নমাত্রা যোগ করে একে খাদ্য তুর্কী, তিব্বত এবং কোরিয়াতে পাওয়া যায়।

অস্ট্রেলিয়া:

পাউরুটির ওপর এক ধরনের নোনতা জেলি, যেটাতে যথেষ্ট ভিটামিন বি রয়েছে৷ তবে এ দেশের নাগরিকরা সবচেয়ে পছন্দ সকরেন গরম গরম পাউরুটিতে মাখন আর এই জেলি মিশিয়ে খেতে৷ সেই সাথে অবশ্যই এক কাপ চা৷

ফ্রান্স:

পট –এইউ- ফেউ প্রথাগতভাবে এটা একটা শীতকালীন খাবার। এটা সারা ঋতু জুরে ভাপে সিদ্ধ করা হয়, পট-এইউ-ফেউ একটি গরম খাবার যেটার মধ্যে দিয়ে সবজি, মসলার সুগ্রান বের হয়।

স্পেন:

পায়েল্লা রেসিপি মুলত এসেছে বিভিন্ন রকমের সামুদ্রিক খাদ্য, মাংস, সসেজ, সবজি এবং বিভিন্ন রকম সিজনিং থেকে। কিন্তু এখন সবচেয়ে জনপ্রিয় খাবার হল সামুদ্রিক খাদ্য পায়েল্লা।

জার্মানি:

সাউরব্রাতেন জার্মানির পট রোস্ট-সাউরব্রাতেনকে এই দেশের অন্যতম জাতীয় খাদ্য হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সাধারনত এটা ঘোড়ার মাংস দিয়ে তৈরি, যার সাথে যুক্ত আছে ওয়াইন, ভিনেগার, মশলা, ওষুধি এবং সিজনিং করে রাখা ১০ দিনের জন্য। এটা সাধারনত সিদ্ধ আলু এবং লাল বাঁধাকপির সঙ্গে পরিবেশন করা হয়।

ব্রাজিল:
ফেইজয়াদাতা সাধারনত পর্তুগাল থেকে উৎপত্তি হয়েছে। এটা প্রাথমিকভাবে ভাবে সিদ্ধ করা মটরশুঁটি সাথে গরুর মাংস এবং শুয়োরের মাংস।

তথ্য: ইন্টারনেট ভিত্তিক