আর্সেন ওয়েঙ্গার: আর্সেনালের অস্থি-মজ্জায় মিশে আছে যে মানুষটি

এইতো যাচ্ছি মাত্র ৫ বছরের জন্য। কথা দিচ্ছি শুধু ৫ বছরই থাকব। তারপর সব ছেড়ে ছুড়ে অবসর নিয়ে চলে আসব, শুধুই তোমার কাছে।“- আর্সেনালের দায়িত্ব নেওয়ার আগে স্ত্রী অ্যানিকে এটাই বলেছিলেন ফুটবল ইতিহাসে অন্যতম প্রভাবশালী এবং কোন ক্লাবের হয়ে একটানা সর্ব্বোচ্চ দায়িত্ব পালন করা কোচ আর্সেন ওয়েঙ্গার। তিনি আর্সেনালের কোচ হবার আগেও আর্সেনাল ছিল ইউরোপের অন্যতম জায়ান্ট টিম। কিন্তু যখন থেকে আর্সেন ম্যানেজার হয়ে আর্সেনালের মাঠে, নিজের জাদুকরী ছোঁয়ায় আরও অনন্য উচ্চতায় নিয়ে গেলেন দলকে। অর্থনীতিতে স্নাতক এই মানুষটি শুধু দলকে শিরোপাই এনে দেননি, গড়ে দিয়েছেন এক শক্ত ভিত। শুধু ইংল্যান্ডের ফুটবলেই না, সমগ্র ফুটবলের ইতিহাসে বেশকিছু বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছেন আর্সেন ওয়েঙ্গার। ২২টি বছর তিলে তিলে গড়ে তোলার পর আজ অবশেষে অবসর এর গণ্ডির ভেতর নিজেকে নিলেন আর্সেন ওয়েঙ্গার। কেমন ছিল তাঁর এই ২২বছরের সফর। চলুন দেখা যাক।

সময়টা ১৯৯৬ সাল। ইউরোপের অন্যতম প্রভাবশালী দল আর্সেনালে আসবেন এক নতুন কোচ, প্রাক্তন কোচ গ্রাহামের অধীনে দল ভালো করলেও বোর্ডের সাথে বাক-বিতণ্ডার কারণে নতুন কোচের তলব। সবাই তখন ভাবছিল বার্সেলোনায় রেভুলেশন সৃষ্টিকারী ফুটবল ইতিহাসের অন্যতম লিজেন্ড ইয়োহান ডি ক্রুইফ হয়তো এবার ইংল্যান্ডকে শাসন করার জন্যে আর্সেনালকেই বেঁছে নিবেন। কিন্তু সবাইকে ভড়কে দিয়ে আর্সেনালের কোচ হয়ে আসলেন এক ফরাসি ভদ্রলোক। চোখে মোটা ফ্রেমের চশমা, সাদা-শুভ্র চুলের নিপাট ৪৭ বছর বয়সী লোকটি আগে কোচিং করাতেন মোনাকোতে সেখান থেকে সুদূর চায়না’য়। এর আগে কেউ তার না শুনেছে বলে মনে পড়ে না। সেই মানুষটি “আর্সেন ওয়েংগার পহেলা অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করার আগে যখন নতুন কোচকে উপস্থাপন করার জন্যে একটি সংবাদ সম্মেলন করা হয়, তখন একটি অদ্ভুত ক্লাব টাই এবং গাঢ় বাদামী ব্লেজার পরিহিত আর্সেনকে দেখে সবার মনে চলছিল একি প্রশ্ন, কে এই আর্সেন? তখনকার সময়ে ইংল্যান্ডে বিদেশি কোচ আনাটা খুব একটা কমন প্রাকটিস ছিল না। এজন্যে সবাই কিছুটা শকড ছিল তাঁর নিয়োগে। খোদ তৎকালীন ক্যাপ্টেন টনি অ্যাডামস তো সরাসরি প্রশ্ন করে বসলেন, “প্রথম দিকে, আমি ভাবলাম, এই ফরাসী কি ফুটবল সম্পর্কে জানেন কিছু? তাকে চশমাপরা একজন স্কুলমাস্টার এর মতন লাগছে, তিনি আদৌ কি সঠিকভাবেই ইংরেজি বলতে পারেন?”

আর্সেনালের নয়া ম্যানেজার হিসেবে আর্সেন ওয়েঙ্গার

নিজেকে নিয়ে এতো জল্পনা-কল্পনা কে পেছনে রেখে আর্সেন ঠিকই আপন করে নিলেন লন্ডনের এই ক্লাবটিকে। ক্লাবের দায়িত্ব নেওয়ার প্রথমেই তিনি ক্লাবের ট্রান্সফার , প্লেয়ারদের কন্ট্রাক এবং ট্রেনিং এর উপর সম্পূর্ণ কর্তৃত্ব আদায় করে নিলেন। আর্সেনাল বোর্ডও এই সিদ্ধান্ত নিল টিমের এই বিষয়গুলিতে তারা হস্তক্ষেপ করবেনা। অভিজ্ঞ প্লেয়ারদেরকে তিনি তাঁর প্ল্যানিং এ রাখলেন কারণ তিনি বুঝতে পেরেছেন টিমে তাদের প্রয়োজনীয়তা আছে। কিন্তু এটাও বলে দিলেন মূল একাদশে জায়গা পেতে হলে তরুণদের সাথে প্রতিযোগিতা করতে হবে। আর্সেনালের হয়ে প্রথম বছর তেমন কোন সাফল্য অর্জন না করতে পারলেও দলকে নিজের মতন করে তৈরি করে নেন। সাজিয়ে গুছিয়ে নেন পরবর্তী সিজনগুলোর জন্যে। যার ফলাফল আমারা সামনের সিজনগুলোতেই দেখতে পাই। আর্সেনালের হয়ে পরের বছরই ওয়েঙ্গার করলেন বাজিমাত। একই সাথে লিগ শিরোপা এবং এফএ কাপ ঘরে তুলে আর্সেনালকে আবার “বাজির ঘোড়া” বানালেন তিনি। এরপর আবারো ডাবল জিতেন ২০০১-২০০২ সিজনে । এরপরই আসে আর্সেনালের ইতিহাসে সবচেয় গৌরবময় বছর। ২০০৩-২০০৪ এই সিজন শুধু আর্সেনালের জন্যে না, সমগ্র ফুটবল ইতিহাসের জন্যে এক বিশেষ সিজন । এই সিজনে আর্সেনাল লীগ ম্যাচে একটিতেও না হেরে চ্যাম্পিয়ন হয়, যা আর্সেন এবং তার টিমকে “ইনভিসিবল” উপাধি দেয়। ইংলিশ প্রিমিয়ার লীগের মতন টাফ এন্ড টাইট কন্ডিশনের একটি লীগে এমন একটি রেকর্ড সত্যিই অকল্পনীয়। অপরাজেয় আর্সেনাল এই সিজনের ৪৯ ম্যাচের মধ্যে জিতেছে ৩৬ টিতে, আর বাকি ১৩ টি ড্র। ১১২ টি গোল করার বিপরীতে খেয়েছে মাত্র ৩৫ টি। ঘরে-মাঠে ২৫ ম্যাচ খেলে জিতেছেন ২০ টিতে, আর প্রতিপক্ষের মাঠে ২৪ ম্যাচে জয় ১৬ টিতে। ২০০৩-০৪ এ পুরো লীগ জুড়ে মাত্র চারটি ম্যাচে গোল করতে পারেনি আর্সেনাল, গোলশূন্য ড্র করে বার্মিংহাম, নিউক্যাসল, ফুলহাম ও ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের বিপক্ষে। যা ক্লাব ফুটবলের ইতিহাসে এক মাইলফলক।

blank
ইনভিসিবল টিমের যত অর্জন

এই সিজনে আর্সেনাল মূলত ৪-৪-২ ফোর্মেশন এ খেলেছে । গোলকিপার জেনস লেহমান পুরো মৌসুমের প্রত্যেকটি লীগ-খেলা খেলেছেন। ডিফেন্সের জন্যে ওয়েঙ্গার প্রথম পছন্দ ছিল এশলে কোল, কোলো তোরে, লোওরেন এবং সল ক্যাম্পবেল। প্যাট্রিক ভিয়েইরা, রবার্ট পেয়ার্স, ফ্রেডি লিজুনবার্গ এবং সিলভাের মতো খেলোয়াড়রা প্রথম দলটির মূল মিডফিল্ডের জাদুকর থাকলেও, মিডফিল্ডে রোটেশন পদ্ধতির বেশি ব্যবহার করতেন ওয়েঙ্গার। আর নিঃসন্দেহে আক্রমণে প্রথম পছন্দ হিসেবে ছিল আর্সেনাল লিজেন্ড থিয়েরি অরি এবং ডেনিশ বার্ক্যাম্প । এই মৌসুমেই ৩৭ ম্যাচে ৩০ গোল থিয়েরি অরি কে “প্রিমিয়ার লীগ প্লেয়ার অফ দ্য ইয়ার” পুরষ্কার এনে দেয়। আর আর্সেন পান “ম্যানেজার অফ দ্যা ইয়ার”-এর খেতাব। কিন্তু এর পর থেকেই কেমন জানি খেই হারিয়ে ফেলে আর্সেনাল। যেই টিমের এবার ইউরোপ শাসন করার কথা ছিল তারাই ২০০৫-০৬ মৌসুমে উয়েফা চ্যাম্পিয়নস লিগের ফাইনালে পৌঁছেও দুঃখজনক ভাবে বার্সেলোনার সাথে ২-১ গোলে হেরে প্রথমবারের মতো ইউরোপ সেরা হওয়া থেকে বঞ্চিত হয়।

২০০৬ সালের শুরুতে আর্সেনাল তাঁদের পুরনো ঘর হাইবুরি থেকে ৬৫,০০০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতাসম্পূর্ণ এমিরেটস স্টেডিয়ামে। এটি ইংল্যান্ডের তৃতীয় বৃহৎ স্টেডিয়াম। এই সমগ্র স্টেডিয়ামটি তৈরি করতে খরচ হয়েছে প্রায় ৩৯০মিলিওন ডলার। নতুন স্টেডিয়ামে স্থানান্তর আর্সেন এবং আর্সেনালকে নতুন চ্যালেঞ্জ এর মুখে ফেলে দেয়। অর্থনৈতিকভাবে আর্সেনাল কিছুটা বেসামাল হয়ে পড়ে। যার প্রভাব পরে আর্সেনালের ট্রান্সফার পলিসিতে। ওয়েঙ্গার ক্যাম্পবেল, লড়েন এবং পিয়ার্সের মত অভিজ্ঞ খেলোয়াড়দের বিক্রি করে তুলনামূলক কমদামে থিও ওয়ালকোট এবং অ্যালেক্স জয়েসের মতো তরুণ খেলোয়াড়দের দলে ভেড়ান।

blank
নির্মানাধিন “এমেরেটস” স্টেডিয়াম’এ দাঁড়িয়ে আর্সেন ওয়েঙ্গার

হাইবুরি থেকে নতুন স্টেডিয়ামে স্থানান্তর এর জন্যে,আর্সেনাল বোর্ডের অনেক ঋণ জমা হয়ে যায়। এজন্যে ট্রান্সফার এবং প্লেয়ারদের বেতনাদি সহ নানা খরচে লাগাম টানা হয়। এই স্ট্রিক্ট ট্রান্সফার লিমিটের মাঝে থেকেও আর্সেনাল সিজনের পর সিজন দলকে ইপিএল এর মতন “টাফ এন্ড টাইট” লীগে টপ ফোরে রেখেছেন। টানা দশ বছর কোয়ালিফাই করেছেন “ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়ন্স লিগ”এ। এর পিছনে যে মানুষটির অবদান সবথেকে বেশিই তিনি হলেন আর্সেন ওয়েঙ্গার। ইউরোপের বাকি দলগুলো যেখানে কাড়ি কাড়ি টাকা খরচ করেছে সাফল্যের জন্যে সেখানে তিনি বেশী জোড় দিয়েছেন তরুণ প্লেয়ারদের প্রতি। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি তুলে এনেছেন- ভ্যান পার্সি, সোং,থিও ওয়াল্কট, সেস ফ্যাব্রিগাস, সামি নাসরিদের মতন তরুণ তুর্কিদের।   ট্রান্সফার মার্কেট এ আর্সেন ওয়েঙ্গার সবসময় একটি নিদিষ্ট নীতি মেনে চলেন। আর্সেন ওয়েঙ্গার সবসময় মনে করেন যে একজন খেলোয়াড়ের মূল্য চারটি ফ্যাক্টর দ্বারা নির্ধারিত হয় : তাদের প্রতিভা,পার্শ্ববর্তী অবস্থার সাথে তাদের মানিয়ে নেওয়ার দক্ষতা, তাদের ভবিষ্যৎ মূল্য এবং তাদের বয়স। গত দুই দশক ধরে, তিনি এই নীতির মাধ্যমেই দলকে সাজিয়েছেন। কেবল স্বল্পমেয়াদি সমাধানের জন্যে নয় বরং দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করেই প্লেয়ার কেন-বেচা করেন তিনি। এত কিছুর পরো আর্সেন ওয়েঙ্গার এর বেশকিছু স্বল্পমেয়াদী ভক্তকুলকে অনেকবারই আশাহত করেছে। দলের গুরুত্বপূর্ণ প্লেয়ারদের ধরে রাখতে না-পারা ওয়েঙ্গার এর অন্যতম ব্যর্থতা বলা যেতে পারে। ইউরোপের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে খুঁজে খুঁজে পটেনশিয়াল প্লেয়ার বের করে তাঁদের ডেভেলপ করায় আর্সেন ওয়াঙ্গার এর জুড়ি নেই বলা যায়। কিন্তু ঠিক এই প্লেয়ারদের দীর্ঘসময়ের জন্য দলের সাথে যুক্ত রাখতে ব্যর্থ তিনি। প্লেয়ার কেনা-বেচাতেও একরকম কৃপণতা লক্ষ্য করা যায় আর্সেন ওয়েঙ্গার এর ট্রান্সফার পলিসিতে। যেখানে অন্যান্য দল কাড়ি-কাড়ি টাকা নিয়ে মাঠে নামে তাঁদের পছন্দের প্লেয়ারকে দলে ভেড়ানোর জন্য, সেখানে প্লেয়ারের গুনগত মান নির্ণয় করে তাঁর দাম নির্ধারণ করতেই বেশী পছন্দ করেন আর্সেন ওয়েঙ্গার। এজন্য অনেক সময় সমর্থক এবং মিডিয়ার সমালোচনা শুনতে হয়েছে তাঁকে। এছাড়া বছরের পর বছর একই ট্যাক্টিস ফলো করার কারণে “প্রেডিকটেবল আর্সেনালে” পরিণত হওয়া, প্লেয়ারের কম্ফোর্ট জোনে তাঁকে না খেলিয়ে ভিন্ন পজিশনে খেলানো সহ নানাবিধ কারণে অনেকবারই প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছেন তিনি।

এতশত সাফল্য-ব্যর্থতাকে পুঁজি করে অবশেষে আজ বিদায় নিচ্ছেন আর্সেন ওয়েঙ্গার। বিদায় নিচ্ছেন বললে হয়তো ভুল হবে, বিশ্রাম এ যাচ্ছেন তিনি। ২২টি বছরের পরিশ্রমে মধ্য দিয়ে দাঁড় করিয়েছেন তাঁর প্রিয় “আর্সেনাল”-কে।

শেষ বিদায়ে বলে গেলেন সবার উদ্দেশ্যে-

ধন্যবাদ, আপনাদের। শুরু করার আগে, আমি আমার সহকর্মী ম্যানেজার অ্যালেক্স ফার্গুসনকে শুভকামনা করতে চাই।দীর্ঘ সময়ের জন্য আমার সাথে এপথে চলার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ। আমি জানি এটা সহজ নয়। কিন্তু সর্বোপরি, আমি আপনাদের মতনই একজন আর্সেনালের ফ্যান। এটা শুধু ঘরে বসে ফুটবল দেখার চেয়ে আরও বেশি কিছু, এটি জীবনকে উপলব্ধি করার একটি নতুন উপায়।

আমরা যত্ন করি, আমরা চিন্তা করি, আমরা হতাশ হই, কিন্তু তারপরও আপনি এখানে আসেন, স্বপ্নের আঁতুড়ঘরে কারণ আমরা বুঝতে পারি এর অর্থ কি!

আমি ক্লাবের প্রত্যেককেই ধন্যবাদ জানাতে চাই বিশেষ করে, আমি আপনাকে আমন্ত্রণ জানাবো, এই খেলোয়াড়দের এবং আমার পিছনে থাকা সহকর্মীদের। শুধু পিচ নয়, কিন্তু পিচের বাইরেও যারা সমর্থন করেছেন, দয়া করে, আপনারা এই দলকে অনুসরণ করবেন, তাদের পরবর্তী সিজনকে সমর্থন করুন কারণ তারা এর যোগ্য।

আমি একটি সহজ বাক্য দিয়ে শেষ করতে চাই: আমি তোমাকে মিস করব। আমার জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হয়ে থাকার জন্য আপনাদেরকে ধন্যবাদ,বিদায়!

আর্সেন ওয়েঙ্গার এর বিদায় স্পিচ এর ভিডিও

blank
নিজের সাম্রাজ্যকে শেষবারের মতন বিদায় জানাচ্ছেন আর্সেন ওয়েঙ্গার

একনজরে আর্সেন ওয়েঙ্গারের আর্সেনালে হয়ে সাফল্য-

Matches 829
Wins 475
Draws 199
Losses 153
Goals For 1560
Goals Against 807

Manager of the Month:

MARCH 1998; APRIL 1990; OCTOBER 2000; APRIL 2002; SEPTEMBER 2002; AUGUST 2003; FEBRUARY 2004; AUGUST 2004; SEPTEMBER 2007; DECEMBER 2007; FEBRUARY 2011; FEBRUARY 2012; SEPTEMBER 2013; MARCH 2015; OCTOBER 20

Manager of the Season:

1997/98

2001/02

2003/04

Premier League Champion:

1997/98

2001/02

2003/04

FA Cup:

1997–98

2001–02

2002–03

2004–05

2013–14

2014–15

2016-17

আজ ২২টি বছরের পথ অতিক্রম করে এক সুন্দর সমাপ্তির পথে ল্যা-প্রফেসর আর্সেন ওয়েংার। হ্যাঁ তিনি অনেক কিছুই দিতে পারেননি দলকে। না কোন ইউরোপিয়ান শিরোপা, না কোন ট্রেবল, অনেকদিন ধরে লীগ শিরোপা জেতা হয় না আর্সেনালের। শেষ সিজনটাও যা-তা গেল, টেবিলে ষষ্ঠ পজিশনে আর্সেনাল। কিন্তু এত-শত বার্থটার মাঝে শ্রদ্ধার সাথে প্রতিটি গার্নার শরণ করবে এই মানুষটিকে। কারণ তিনি যা গড়ে দিয়ে গেছেন অনেক ম্যানেজারের পক্ষেই সম্ভব হবে না। তিল-তিল করে গড়ে তুলেছেন তারুণ্য নির্ভর একটি দল। ইংল্যান্ডের অন্যতম বৃহৎ স্টেডিয়াম “এমিরেটস” কে ঋণমুক্ত করার পিছনে তার কম খরুচে ট্রান্সফার বাজেট এবং ভালো-মানের মূল্যে প্লেয়ার কেনা-বেচা প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলেছে। হাজারো গার্নার তরুণ থেকে বৃদ্ধ হয়েছে তার আমলে, হাজারো গার্নার শিশু থেকে হয়েছে যুবক। হাজারো স্বপ্ন হাজারো সৃতিকে পুঁজি করে তারা হয়তো আগামিতেও সমর্থন করবে তাঁদের প্রিয় দল “আর্সেনাল”কে। কারন তারা বিশ্বাস করে আর্সেন ওয়েঙ্গার এর সেই অমর বাণী-

“IF YOU DO NOT BELIEVE YOU CAN DO IT, YOU HAVE NO CHANCE AT ALL”

blank
বিদায় বেলায় খেলোয়ারদের থেকে “গার্ড অফ অর্নার” নিচ্ছেন আর্সেন ওয়েঙ্গার