বলা হয়ে থাকে পৃথিবীতে নারী এবং পুরুষদের অরিজিন নাকি ভিন্ন ভিন্ন গ্রহ থেকে এসেছিল, কারণ তারা সব কাজই ভিন্ন ভিন্ন ভাবে করে! হাই তোলা থেকে চুল ঠিক করা পর্যন্ত- সব কাজেই তাদের এত পার্থক্য! দৈনন্দিন জীবনের খুব স্বাভাবিক কাজগুলোকে নারী ও পুরুষরা কতটা ভিন্ন ভাবে করে তা খুঁজে বের করতে ইন্টারনেট ভিত্তিক ব্লগ সাইট Bright Side একটা টেস্টের আয়োজন করেছিল। চলুন দেখা যাক তাদের সেই টেস্টের ফলাফল কি এসেছিল!
মার্ক এবং জুলিয়া– অনেক পুরানো বন্ধু তারা। একে অন্যকে অনেকদিন থেকে চিনে তারা এবং একে অন্যকে খুব ভালোভাবে জানে। এদের উপরেই Bright Side-এর পরীক্ষাটি করা হয়েছিল।
পরীক্ষাটি খুব কঠিন কিছু ছিল না। তাদের দুজনকেই কিছু টাস্ক দেয়া হয় এবং সে কাজগুলো তারা কিভাবে করে তা ফ্রেমবন্দী করা হয়। Bright Side কর্তৃপক্ষ নিশ্চিত করে যে, দুজনকেই একই সময়ে একই টাস্ক দেয়া হয়, কিন্তু দুটো ভিন্ন ভিন্ন জায়গায়, যাতে তারা জানতে না পারে যে অন্যজন সে কাজটি কিভাবে করছে। চলুন দেখা যাক, তাদের দেয়া টাস্কগুলো তারা কতটা ভিন্ন ভাবে পারফর্ম করেছিল!
ছবির জন্য পোজ দেয়া
মার্ক এবং জুলিয়াকে ছবি তোলার জন্য পোজ দিতে বলা হয়েছিল। এভাবেই তাদেরকে ক্যামেরার সামনে দাঁড়াতে দেখা যায়।
পুরুষরা চায় ছবিতে তাদের যথাসম্ভব বড় দেখাক! তারা ফ্রেমের অনেকটুকু জায়গা নিতে চায়, যাতে তারা তাদের শরীরের ভাঁজগুলো ঠিকঠাক মত ফুটিয়ে তুলতে পারে। অন্যদিকে নারীরা চায় ছবিতে তাদের ছোটখাটো এবং আদুরে দেখাক! তারা তাদের হাত এবং পায়ের ব্যাপারে যথেষ্ট সংবেদনশীল।
কিছু ধরতে বলা হলে
বোতল হাতে তারা এভাবেই ক্যামেরাবন্দী হন।
বেশিরভাগ সময়ই মেয়েদেরকে দুহাতে বস্তু ধরতে দেখা যায়, সেটা হালকা হোক কিংবা ভারী- তা ব্যাপার না। অন্যদিকে ছেলেরা সাধারণত এক হাতেই কোন কিছু ধরে, যদি সেটা ভারী হয়, তবুও। এতে করে তারা বোঝাতে পারে যে তারা আসলে কতটা শক্তিশালী!
হাত দেখাও
হুম…
বেশির ভাগ নারীই এমন ক্ষেত্রে হাতের উল্টো পিঠ দেখায়, এতে করে তাদের মেনিকিউর করা হাতের সৌন্দর্য সঠিক ভাবে ফুটে ওঠে! পুরুষেরা আবার এইক্ষেত্রে সৌন্দর্যের ধার ধারে না, সাইজটাই তাদের কাছে বড়। আর অবশ্যই বাঁকা করে দেখানোর চেয়ে তালু দেখালে হাতকে বড় দেখায়!
ঘুরে তাকানো
‘পেছন থেকে কেউ আপনাদের ডাকলে কিভাবে তার দিকে ফিরবেন’– এই প্রশ্নের উত্তর।
পেছন ফিরে তাকানো ব্যাপারটা নারী ও পুরুষদের ক্ষেত্রে ভিন্ন। পুরুষরা সাধারণত তাদের পুরো শরীর বাঁকিয়ে পেছনে ফেরে, অন্যদিকে নারীরা কেবল তাদের ঘাড় বাঁকায়।
আরাম করে বসুন
মার্ক বসে দু’পা ছড়িয়ে আর জুলিয়া ক্রস করে।
দুটো কারণে এই ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়।
প্রথমত, নারী ও পুরুষের কোমরের নিচের অংশের (Pelvis) অস্থির গড়ন ভিন্ন, যার কারণে তারা বসে ভিন্ন ভাবে।
দ্বিতীয় কারণটি মূলত সাইকোলজিক্যাল। দু’পা ছড়িয়ে বসার মাধ্যমে পুরুষরা তাদের আধিপত্য বুঝায়, আর পা ক্রস করার মাধ্যমে নারীরা বোঝায় তাদের রক্ষণশীলতা/নম্রতা।
গোলক নিক্ষেপ
মার্ক ও জুলিয়াকে বলা হয়েছিল বল ছুড়তে।
কোন কিছু ছুড়ে মারার ক্ষেত্রে পুরুষরা সাধারণত এক হাতে ধরে মাথার পেছন থেকে ছুড়ে মারতে বেশি পছন্দ করে, এতে জোর বেশি পাওয়া যায়। কিন্তু কাজটি নারীরা করে সম্পূর্ণ ভিন্ন ভাবে। দু’হাতে সে বস্তুটি ধরে গায়ের সমস্ত শক্তি এক করে লাফিয়ে সামনে ছুড়ে মারে, কারণ ব্যাপারটি কিউট!
কাশি দেয়া
এহেম…
পুরুষদের যখন কাশি পায়, তারা হাতের মুষ্টি পাকিয়ে তার ভেতরে কাশে! অন্যদিকে নারীরা হাতের পৃষ্ঠ ব্যবহার করে মাথা খানিকটা ঝুঁকিয়ে কাশে।
হাই তোলা
হাই তোলার ব্যাপারটিও নারী ও পুরুষদের ক্ষেত্রে ভিন্ন!
পুরুষরা যখন হাই তোলে, সাধারণত এক হাতে তাদের মুখ ঢেকে রাখে। অন্যদিকে মুখ ঢাকতে নারীরা তাদের দুই হাত ব্যবহার করে। দুটো কারণে এটা হতে পারে- প্রথমত, পুরুষের হাতের তুলনায় নারীদের হাত কিছুটা ছোট। দ্বিতীয়ত, ব্যাপারটি কিউট!
চুল ঠিক করা
‘চুল তো আউলা হয়ে আছে’– কথার প্রত্তুত্তরে…
কারণটি খুব সাধারণ- পুরুষদের চুল সাধারণত ছোট করে ছাঁটা থাকে, তাই তারা এক হাতে চুল ঠিক করে। অন্যদিকে নারীদের চুল বড় থাকায় তারা দু’হাত ব্যবহার করে।
জামা খোলা
‘বাসায় থাকলে কিভাবে পোশাক বদলান’– এই প্রশ্নের জবাবে…
টি শার্ট খোলার সময় পুরুষরা সাধারণত কলার কিংবা উপরের অংশ ধরে টেনে খোলার চেষ্টা করে আর নারীরা নিচ থেকে খোলে। কারণ হিসাবে বলা যায়, এই কাজে পুরুষেরা তাদের শরীরের সবচেয়ে শক্তিশালী অংশ, তাদের হাত ব্যবহার করে। অন্যদিকে নারীরা তাদের তাদের পুরো শরীরই এই কাজে ব্যবহার করে।
পোস্ট কৃতজ্ঞতাঃ Bright Side