মানুষের মনের অবস্থা সবসময় একরকম থাকেনা। কখনো কখনো অবসর সময়ে ইচ্ছে করে নির্ঝঞ্ঝাট কিছু মুভি দেখে সময় পার করতে। তাই আপনাদের জন্য এমন কয়েকটি হলিউড মুভির একটি লিস্ট নিয়ে এসেছি যা আপনার মনে এনে দেবে নির্মল প্রশান্তি, ঠোঁটে রেখে যবে হাসির রেশ।
দ্য হলিডে
দুইজন মহিলা, একজন আরেকজনের চেয়ে ১০ হাজার কিলোমিটার দূরত্বে থাকেন। কিন্তু দুজনের মধ্যে মিল একটাই, তারা দুজনই চরম মাত্রায় অসুখী। ইন্টারনেটের মাধ্যমে তাদের পরিচয় হয় এবং তারা সিদ্ধান্ত নেয় যে সামনের ক্রিসমাসের ছুটিতে তারা বাড়ি এক্সচেঞ্জ করবে, অর্থাৎ একজন আরেকজনের বাড়িতে থাকবে। ব্যস, এই সিদ্ধান্তেই বদলে যায় তাদের জীবন। জীবনের জীর্ণতা কাটিয়ে সুখ খুঁজে পাওয়ার, নিজেকে নতুন করে গড়ে তোলার এই গল্প ভাসিয়ে নিয়ে যাবে আপনাকে প্রশান্তির স্রোতে। ছবিটিতে অভিনয় করেছেন ক্যামেরন দিয়াজ, কেট উইন্সলেট, জুড ল, জ্যাক ব্ল্যাকের মতো তারকারা।
হি ইজ জাস্ট নট দ্যাট ইনটু ইউ
ছবিটা দেখার পর যে প্রথম কথাটা আমার এসেছিলো, তা হচ্ছে, “Self-Help বই থেকেও এত সুন্দর মুভি বানানো যায়!” পৃথিবীতে বিভিন্ন মানুষ বিভিন্ন সম্পর্কে জড়িত, তাদের জীবনের গল্পগুলোও আলাদা। নিজেদের সমস্যাগুলো থেকে বের হয়ে নতুন করে জীবন সাজিয়ে নেয়া এবং পুরনো জীবনটাকে ঝেড়েমুছে ঝকঝকে করে তোলা, দুটোই দেখতে পাবেন এই ছবিতে। এই তারকাখচিত চলচ্চিত্রটিতে রয়েছেন ব্র্যাডলি কুপার, স্কারলেট ইয়োহানসন, জেনিফার আ্যনিস্টোন, বেন আ্যফ্লেক সহ আরো অনেকে।
দ্য ডেভিল ওয়্যারস প্রাডা
বাবার প্রবল আপত্তি থাকা সত্ত্বেও ল’ কলেজ ছেড়ে জার্নালিজমে ক্যারিয়ার গড়তে চলেছে আ্যন্ডি স্যাকস। আ্যন্ডি একেবারেই সাধারণ মেয়ে, ফ্যাশন সেন্স নেই বলতে গেলে। কিন্তু পাকেচক্রে পরে সেই ফ্যাশন ইন্ড্রাস্টিতেই চাকরি জোটে। তাও আবার তার বস কিনা এমন একজন, যাকে গোটা ফ্যাশন দুনিয়া এক নামে চেনে! চাকরির জগতে টিকে থাকার লড়াই আর নিজের স্বপ্নের ক্যারিয়ার গড়া মাঝখানে পিষতে থাকা আ্যন্ডি আর মাথার উপর তার বস মিরান্ডা, এদের কাজকারবার দেখতে দেখতে সময় কেটে যাবে আপনার। আ্যন্ডির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন আ্যন হ্যাথওয়ে এবং মিরান্ডা প্রিস্টলির ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মেরিল স্ট্রিপ।
উই আর দ্য মিলার’স
ছোটখাটো ড্রাগ ডিলার ডেভিড একদল ছিনতাইকারীর হাতে তার সব ড্রাগ আর টাকা খুইয়ে বসে। তার বস তাকে কাজ দেয় মেক্সিকো থেকে ড্রাগ স্মাগল করে আনার, এছাড়া ডেভিডের কোন উপায় নেই। শেষমেষ সে বুদ্ধি বের করে টুরিস্ট সেজে ফ্যামিলি ট্যুরের আড়ালে ড্রাগ স্মাগল করার। বউ হিসেবে ভাড়া করে এক স্ট্রিপারকে, মেয়ে হিসেবে এক হোমলেস পাংক এবং ছেলে হিসেবে নেয় পাশের ফ্ল্যাটের নিরীহ এক ছেলেকে। কমেডি মুভি হলেও খুব সুন্দর সিনেমাটোগ্রাফি, ছোট ছোট টুইস্ট আর অভিনেতাদের অভিনয় মুভিটিকে দিয়েছে এক অন্য মাত্রা। অভিনেতাদের মধ্যে রয়েছেন জেনিফার আ্যনিস্টোন, এমিলি রবার্টস, জেসন সাডকিস এর মতো তারকারা।
নিউ ইয়ার্স ইভ
প্রিটি উম্যান খ্যাত ডিরেক্টর গ্যারি মার্শালের একটি স্পেশাল ডে ফ্র্যাঞ্চাইজি রয়েছে, যদিও সেটি আনঅফিশিয়াল। প্রথম মুভিটি ভ্যালেন্টাইন’স ডে, দ্বিতীয়টি নিউ ইয়ার্স ইভ এবং তৃতীয়টি মাদার্স ডে। এই মুভিটি ৩১শে ডিসেম্বরের নিউ ইয়ার্স ইভকে ঘিরে একদল নিউ ইয়র্কবাসীর গল্প। মুভির প্রত্যেকটি চরিত্র একজন আরেকজনের সাথে সম্পর্কিত। ভিন্ন ভিন্ন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন জীবনের গল্পগুলো দেখতে বেশ লাগে। ছবির শেষের ছোট্ট টুইস্টটিও বেশ মজার। এই তারকাখচিত ছবিতে অভিনয় করেছেন সারাহ জেসিকা পার্কার, ক্যাথরিন হাইগেল, জ্যাক এফ্রন, আ্যশটন কুচার, জেসিকা বেল, হ্যালি বেরি, র্যাপার লুদাক্রিস, গায়িকা লিয়া মিশেল, জশ ডুহামেল এমনকি বিশ্বখ্যাত রকস্টার জন বন জোভি!
দ্য এজ অব আ্যডালাইন
ফ্লোরেন্স ফস্টার জেনকিন্স
১৯৪০ দশকের পটভূমির এক সত্য কাহিনী অবলম্বনে এই চলচ্চিত্রটি তৈরী করা হয়েছে। সে সময়কার নিউইয়র্ক এর বিখ্যাত সোশ্যালাইট, ভার্ডি ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা এবং শখের অপেরা সিংগার ফ্লোরেন্স জেনকিন্সের জীবনের উপর ভিত্তি করে এই চলচ্চিত্র নির্মিত হয়েছে। ফ্লোরেন্স জেনকিন্স মিউজিকের প্রতি অগাধ ভালোবাসা নিয়ে জন্মেছিলেন, কিন্তু ঈশ্বর তার গলায় সুর দেননি। তারপরের তিনি উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া সম্পদ খরচ করছেন গান শিখতে, গানের আয়োজন করতে। গান গাইতে ভাড়া করেছেন কার্নেগী হল। কিন্তু বিনিময়ে পেয়েছেন সবচেয়ে বাজে অপেরা সিঙ্গারের খেতাব। তবুও আজ মানুষের মাঝে তিনি অপেরা সিংগার হিসেবেই অম্লান রয়ে গেছেন। কেন? তা জানার জন্যই নাহয় মুভিটি দেখুন! মুভিটি কখনো আপনাকে হাসাবে, কখনো মনে দুঃখ দেবে। আর আপনি মুগ্ধ হবেন অভিনেতাদের অভিনয় আর সিনেমাটোগ্রাফিতে। এই হিস্টোরিকাল-বায়োপিক-কমেডি মুভিতে ফ্লোরেন্সের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন মেরিল স্ট্রিপ, তার স্বামীর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন হিউ গ্র্যান্ট।