ছবিতে সুন্দর দেখাতে সবাই চায়। অঙ্গভঙ্গী,আলোকসজ্জা, মানসিক অবস্থা -সবকিছু মিলিয়ে নির্ধারিত হয় ছবির সুন্দর মুহূর্ত। বয়স ৮ হোক কিংবা ৮০, ক্যামেরা ক্লিকের আগে একটি বিশুদ্ধ আজ্ঞা সকলকে শুনতে হয়, “বলো চিজ “।বস্তুত, প্রতিত্তুরে একটি কৃত্রিম হাসি মুখে এনে বলতে হয়, “চিজ “।
এজন্য, সুস্বাদু”মাখনের ” সাথে ছবি তোলা-তার মাঝখানের হাসির কোন কারণ নেই। তাহলে আমরা প্রথম অনুচ্ছেদে এই “বাক্যটি ” কেন ব্যবহার করলাম?
“টুডেআইফাউন্ড” অনুসারে ছবিতে “চিজি” এর আইডিয়া প্রথম সামনে আসে ১৯৪০ সালে। “দা বিগ স্প্রিং হেরাল্ড” নামে একটি স্থানীয় পত্রিকা ১৯৪৩ সালে “চিজিং” এর উল্লেখ করে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে।কে প্রথম এই শব্দটি ব্যবহার করেছিলো বা কেন করেছিলো সবার অজানা থাকলেও এই শব্দটি নিজেই সকলকে বাধ্য করতো মুখে হাসি আঁকতে।
“চি” শব্দটি উচ্চারণের সময় আমাদের দাঁত শক্তভাবে চেপে ধরতে হয় এবং “ইই” শব্দটি দীর্ঘসময় ধরে উচ্চারণ করতে হলে ঠোঁট দুটো আলাদা থাকে যেটি মুখে একটি হাসিখুশি ভাবের সৃষ্টি করে।
নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে, আমরা ক্যামেরার ক্লিকের জন্য সর্বদা আমাদের মুক্তাময় দন্তপাটি খুলে রাখিনা। উনিশ শতকে ফিরে গেলে দেখা যাবে, সেইসময় শুধুমাত্র শিশু, গেঁয়োলোক আর মাতাল লোকেরা ছবিতে হাসতো আর বাকিদের মুখচ্ছবি থাকতো ভাবলেশহীন যেটি আকর্ষনীয় ও তাৎপর্যপূর্ণ হিসেবে বিবেচিত হতো।যদিও এটি ছবিতে না হাসার একমাত্র কারণ ছিলোনা। প্রথমদিকে, একটি ছবি ক্যামেরায় ধারণ হতে অনেক ঘন্টা সময় লাগতো এমনকি দিনও।এখন নিশ্চয় অনুধাবন করা যাচ্ছে যে, এত দীর্ঘসময় ধরে দাঁত বের করে থাকা সত্যি কষ্টদায়ক।
তাছাড়া, তখনকার দিনে দাঁতের সুস্থতা গুরত্বের সাথে বিবেচনা করা হতোনা তাই অধিকাংশ মানুষ তাদের ভাঙা দাঁত দেখাতে চাইতোনা। ফটোগ্রাফার এতটাই ব্যয়বহুল ছিলো ছিলো যে, একজন ব্যক্তি তার জীবনকালে সর্বোচ্চ এক কিংবা দুইবার ছবি তুলতে পারতেন। কারণ, এটি ছিলো একটি গুরত্বপূর্ণ উপলক্ষ্য যেখানে সবাই তাদের ভালো আচরণ প্রদর্শন করে অথবা মলিন ভাব।
ছবি তোলার সময় মলিন থাকার কারণ যায় হোকনা কেন এই রীতির স্থায়িত্ব খুব বেশি সময়কাল ছিলোনা।
হলিউডের মুভির অভ্যুত্থানের সাথে, কোডাকের এক ডলারের বিনিময়ে ক্যামেরা আবিষ্কার প্রতিদিনকার মুহূর্তগুলো বন্দীর কাজ অনেকটা সহজ করে দিয়েছিলো।এইভাবে ছবিতে হাসা একটি প্রথাসিদ্ধ আচরণে পরিণত হয়েছিলো।
বর্তমান সময়ে, পরবর্তীতে আই ফোন তার সেলফিতে কি ফিল্টার যোগ করবে আমরা সেটা নিয়ে চিন্তিত থাকি।
হাস্যকরভাবে বলতে হয়, বিশেষজ্ঞদের মতে ছবিতে অতি সুন্দর দেখানোর গোপন কোন রহস্য নেই।
তাই “চিজ” বলা থেকে বিরত থাকুন। 😆