শীতে ত্বকের যত্ন :জানুন প্রাণবন্ত রূপের রহস্য!

হালকা হালকা শীত শুরু হয়ে গিয়েছে। সুতরাং শীতের শুরু থেকেই ত্বকের যত্ন করা উচিৎ যাতে ত্বকের দীর্ঘস্থায়ী কোন ক্ষতি না হতে পারে। কারণ এই সময়টা খুবই স্পর্শকাতর একটি সময়।
👉 শীতে ত্বকের যত্নের অতি সাধারণ কিন্তু জরুরী কিছু বিষয়:-

১. মুখ এবং শরীরে নারিকেল তেল অথবা অলিভ অয়েল অথবা সম্ভব হলে নারিকেলের পানি গোসলের দশ মিনিট আগে মাসাজ করুন। তারপর গোসল করে ফেলুন বেবী সোপ অথবা বেসন দিয়ে।
২. গোসলের কুসুম গরম পানিতে আরো ব্যবহার করতে পারেন পাতিলেবুর রস এবং লেবুর খোসা আর একটু নারিকেল তেল।
৩. গোসল শেষে গ্লিসারিন এবং গোলাপজল মিশিয়ে শরীরের ত্বকে লাগান।
৪. অতিরিক্ত শুষ্ক ত্বক হলে মাঝে মাঝে অলিভ অয়েল মালিশ করুন।
৫. আর ঘুমের সময় মুখ ধুয়ে বেবী ক্রিম লাগিয়ে নিন।
৬. সপ্তাহে তিন/চারদিন অবশ্য ভাল মানের নাইটক্রীম ব্যবহার করতে পারেন রাতে ঘুমোতে যাবার আগে।

👉 রুক্ষ ত্বককে উজ্জ্বল এবং চকচকে করতে:-

১. মসুর ডাল বাটা, কাঁচা দুধ, এক চামচ উষ্ণ অলিভ অয়েল মিশিয়ে ত্বকে লাগান। এটি সপ্তাহে তিন/চারদিন লাগান। ধুয়ে ফেলুন কুসুম গরম পানি দিয়ে। শুষ্ক ত্বকের জন্য খুবই উপকারী।
২. সব ধরণের ত্বকের জন্য তবে বিশেষতঃ তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেসন, লেবুর রস লাগালে ত্বক পরিষ্কার এবং সুন্দর হবে।
৩. শশা ও লেবুর রসও ভাল ফল দেয় তৈলাক্ত ত্বকে। এটিও সব ত্বকের জন্যই ভাল।
৪. ব্রনের কঠিণ দাগ দূর করতে ভাতের মাড়ের সাথে এক চিমটি হলুদ গুরো দিয়ে ত্বকে লাগান। নিয়মিত করে দেখুন ভাল কাজ হয়।
৫. এককাপ দুধ, এক চামচ মধু, এক চামচ গাজরের রস অথবা লেবুর রস মিশিয়ে ত্বকে লাগিয়ে দেখুন। ত্বক পরিষ্কার এবং উজ্জ্বল হবে। শুষ্ক এবং স্বাভাবিক ত্বকের জন্য।
৬. এক চামচ দই, অলিভ অয়েল, গোলাপজল দিয়ে মাসাজ করে গোসল করে দেখুন শরীরের চামড়া উজ্জ্বল এবং চকচকে হবে। শুষ্ক ত্বকের জন্য অনেক বেশি কার্যকর।
৭. একটি লেবু গোল করে কেটে তার উপরে চিনি ছিটিয়ে ত্বকে ঘষে স্বাভাবিক তাপমাত্রার পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের কালচে দাগ দূর করবে।

👉 ঘরে তৈরি খুবই কার্যকরী কিছু মাস্ক:-
সব থেকে নিরাপদ মাস্ক হল ঘরে তৈরি মাস্ক। কম বেশী সবাই জানেন যে মাস্ক বা ফেসপ্যাক দেবার পরে প্রথমে কুসুম গরম পানি পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলা উচিৎ।

blank

১. ভাতের মাড়ঃ ভাতের মাড়, এক টেবিল চামচ মধু, এক টেবিল চামচ দুধ মিশিয়ে ত্বকে লাগান। শুকিয়ে গেলে ধুয়ে ফেলুন। এটি ত্বকের বলিরেখা এবং বয়সের ছাঁপ পড়তে দেয়না। বলা যায় তারুণ্য ধরে রাখে।
২. ময়দা ও মধুঃ চার চামচ ছাঁকা ময়দা, দুই চামচ পানি, তিন চামচ মধু একসাথে মিশিয়ে লেই তৈরি করে তুলোর প্যাডের সাহায্যে মুখে লাগিয়ে বিশ কিন্তু ট অপেক্ষা করুন। তারপরে কুসুম গরম পানি ও পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৩. চন্দন ও গোলাপজলঃ ছয় চামচ সাদা চন্দন বাটা, দুই চামচ গোলাপজল মিশিয়ে তুলোর প্যাডের সাহায্যে মুখে লাগান এবং পনের মিনিট পরে ধুয়ে ফেলুন।
৪. দুধ ও ময়দারঃ চার চামচ দুধ, দুই চামচ ময়দা, এক চামচ পাতিলেবুর রস, তিন চামচ গোলাপজল মিশিয়ে লেই রৈরি করুন। মুখে লাগান বিশ মিনিট পরে কুসুম গরম পানি এবং ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৫. দুধের সর ও মধুঃ দুই চামচ মধু, দুই চামচ দুধের সর, এক চামচ গোলাপজল ভালভাবে মেশান তারপর পনের মিনিট ধরে মুখে লাগিয়ে অপেক্ষা করুন। ধুয়ে ফেলুন।
৬. বেসন ও মধুরঃ দুই চামচ বেসন, পাচঁ চামচ মধু, আধা চানচ পাকা পাতিলেবুর রস একসাথে মিশিয়ে মুখে লাগান। বিশমিনিট পরে কুসুম গরম পানি ও পরে ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৭. শশা ও মধুঃ চার চামচ শশা বাটা, চার চামচ মধু, এলচামচ পাকা পাতি লেবুর রস, এক চামচ গোলাপজল ভাল করে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। বিশ মিনিট পরে পানিতে ধুয়ে ফেলুন। তৈলাক্ত ত্বকের জন্য বেশী উপযোগী।
তবে শীতকাল অথবা গ্রীষ্মকাল যে ঋতুই হোক না কেন সুন্দর ত্বকের মূলমন্ত্র হল পর্যাপ্ত পানি পান, ফল এবং রঙিন সবজি খাওয়া। যাতে প্রচুর মিনারেলস রয়েছে। আর প্রতিদিন একটি আমলকি, গাজর খেলে আরো ভাল কাজ দেবে। সবাই সুন্দর থাকুন।
তথ্যসুত্র: অনলাইন।