অনেকেই বলে থাকেন গাড়ি রাখা আর হাতি পালা সমান কথা। শুধু খরচ আর খরচ! বাড়তি খরচের ভয়ে অনেকেই গাড়ি কিনতে ভয় পাচ্ছেন। প্রতিদিন তেলের খরচ তো আছেই, এর উপর রয়েছে সময় সময় গাড়ি পরিষ্কার করা, টুকটাক মেরামতির কাজ, ড্রাইভারের থাকলে ড্রাইভারের খরচ। তবে কয়েকটি বিষয়ের দিকে লক্ষ্য রাখলে গাড়ির তেলের খরচ তো বটেই, রক্ষনা-বেক্ষনের খরচও কমানো সম্ভব।
পেডাল হুট করে চেপে ধরা যাবে না। গাড়ির গতি বাড়ানোর জন্য আমাদের (ড্রাইভারদের) প্রবণতা হল চট করে পেডাল চেপে ধরা। কিন্তু এটা ঠিক নয়। ধীরে ধীরে গাড়ির গতি বাড়ালে এবং শক্তভাবে ব্রেক না করলে তুলনামূলক তেলের খরচ কম হয়। যখন হুট করে পেডাল পুরো চেপে ধরা হয় তখন গতি বাড়াতে বেশি বেশি তেল ইঞ্জিনে প্রবেশ করে।
গাড়ির গতি সীমার মধ্যে রাখতে হবে। গতি যত বাড়াবেন জ্বালানি খরচ তত লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়বে। ৯০ কিলোমিটার/ঘন্টায় চলন্ত গাড়ি যে জ্বালানি ব্যবহার করে ১১০ কিলোমিটার/ঘন্টায় চলন্ত গাড়ি তার চেয়ে ২০ শতাংশ বেশি জ্বালানি ব্যবহার করে।
নিয়মিত সার্ভিসিং করতে হবে। প্রতি ৪৫০০ কিলোমিটার চলার পর গাড়ির অয়েল ফিল্টার এবং লুব্রিক্যাটিং অয়েল পরিবর্তন করতে হবে। বাড়তি ঝামেলা এবং খরচ বাঁচাতে এই কাজ সময়মত করতে হবে। দেরি করলে ইঞ্জিন বিকলও হয়ে যেতে পারে। বলাই বাহুল্য সেই ইঞ্জিন ঠিক করতে অনেক পয়সা খরচ হয়ে যাবে।
সঠিকভাবে সারাদিনের চলাচলের পরিকল্পনা করতে হবে। কোথায় কোথায় যেতে হবে, কতক্ষন সময় সেখানে থাকতে হবে- সেগুলো গাড়িতে উঠার আগেই ঠিক করতে নিতে হবে। কোন রাস্তা দিয়ে কিভাবে গেলে স্বল্প সময়ের মধ্যে সবগুলো জায়গায় যাওয়া যাবে সেটা আগেভাগেই ঠিক করে রাখতে হবে। বিশেষ করে শীতকালে গাড়ির প্রথম পাঁচ মাইলে তেল বেশি খরচ হয়। কারন ঠান্ডা ইঞ্জিন গরম হতে অতিরিক্ত তাপশক্তি ব্যয় হয়ে যায়। তাই সারাদিনে যদি বার বার ইঞ্জিন ঠাণ্ডা হয় তাহলে অতিরিক্ত খরচ আপনার দুঃশ্চিন্তার কারন হতে পারে।
বৃষ্টির মধ্যে গাড়ি চালালে তেলের খরচ বাড়বে। আর এক্সিডেন্টের সম্ভবনাতো আছেই। রৌদ্রজ্জ্বল দিনে বাতাসের সাথে যুদ্ধ করতে গাড়ির ভাল পরিমান শক্তি খরচ হয়। কাজেই বৃষ্টির সময় বৃষ্টির সাথে যুদ্ধটা আরও শক্তভাবে করতে অতিরিক্ত জ্বালানি পুড়তে থাকে।
চাকার হাওয়া ঠিক আছে তো? যদি না থাকে তাহলে ঠিক করে নিতে হবে জলদি। কারনে চাকায় হাওয়া কম থাকলে গাড়ির ব্রেক সঠিকভাবে কাজ করবে না। আর যদি হাওয়া যে পরিমান থাকার কথা তারচেয়ে 0.1 atmও কম থাকে তাহলে জ্বালানী খরচ ২~৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেতে পারে।
বাড়তি জিনিস গাড়িতে রাখা যাবে না। গাড়ির ওজন যত বেশি হবে, তেলের খরচ তত বাড়বে। সহজ হিসেব। কাজেই বাড়তি জিনিস গাড়ি থেকে সরিয়ে গাড়িকে হালকা করতে হবে।
অনেকে মনে করেন গাড়ির এয়ার কুলার চালু করা থাকলে তেলে বেশি লাগে। আসলে ধারনাটি ঠিক নয়। কারন এখনকার গাড়ির ইঞ্জিনের ডিজাইন অনেক আধুনিক ও বাস্তবসম্মত। কাজেই তেলের খরচের চিন্তা না করে এসি চালাতে পারেন। তবে এসির উপর চাপ কমাতে যখন গাড়ির গতি কম থাকে তখন এসি চালাতে পারেন আর হাইওয়েতে অধিক গতিতে চালানোর সময় জানালা বন্ধ করে দিয়ে এসি চালিয়ে দিন।
তথ্যসূত্রঃ ইন্টারনেট।