বনের মাঝে বেড়ে ওঠা সত্যিকারের “মোগলী” মেয়েটিকে চেনেন তো?

image source-http://www.pagalparrot.com

দুই পা-দুই হাত ব্যবহার করে হাঁটা , কর্কশ শব্দ করে ভাব প্রকাশ করা , বানর দলের সাথে বড় হওয়া “বালিকা মোগলীর” খোঁজ মিললো ভারতের ইউপি অভয়ারণ্যে ।

শিশুটির বয়স বড়জোর আট বছর ,বানর দল দ্বারা রক্ষিত থাকায় বালিকাটিকে হাসপাতাল নিয়ে আসাকালীন পুলিশকে তাদের প্রতিহিত করতে হয়েছিল । কর্তৃপক্ষ এখন তার বাবা-মায়ের খোঁজ চালাচ্ছে ।

মেয়েটির বয়স সম্ভবত আট বছর , হাত-পায়ের উপর ভর দিয়ে চলাফেরা করে এবং কর্কশ শব্দ করে নিজের মনের ভাব প্রকাশ করে – অনেকটা বানরের মতো । উদ্ধারের আগ পর্যন্ত শিশুটির বেড়ে উঠা উত্তর প্রদেশের কাটারনিয়াঘাট বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্যে ।

বাহরাইচ জেলা হাসপাতাল , যেখানে শিশুটিকে স্বাভাবিক মানুষ হওয়ার শিক্ষা প্রদান করে হচ্ছে ,সবার কাছে সে “ বালিকা মোগলী “ হিসেবে পরিচিত – অনেকটাই আরাধিত , নেকড়ে দ্বারা পালিত রুডায়ার্ড কিপ্লিং এর বিখ্যাত শিশুতোষ রূপকথা “ দ্যা জঙ্গল বুক ‘’ এর নায়কের মতো ।

জানুয়ারিতে , মতিপুর অভয়ারণ্যে প্রথম এই শিশু বালিকাটির গতিবিধি টের পায় স্থানীয় গ্রামবাসীরা । শিশুটি ছিল নগ্ন , মাথার চুল জট পাকানো , হিংস্র জন্তুর মতো লম্বা নখ । সে একটি বানর দলের সাথে ছিল এবং তার এই বন্য পরিবারের সাথে খুব স্বাচ্ছন্দ্যে ছিল ।

স্থানীয় লোকজন পুলিশকে এই অদ্ভুত ঘটনার কথা জানায় । পরবর্তিতে একটি দল এসে তাকে লকালয়ে নিয়ে যায় ।কিন্তু তাকে উদ্ধার করা এতো সহজ ছিলোনা কারণ বানর দল শক্ত বাধা দিয়ে রেখেছিল বালিকাটিও মানুষ দেখে ভয় পাচ্ছিলো ও কেউ তার কাছে আসলেই চিৎকার করছিলো ।

অতিরক্ত পুলিশ সুপার দীনেশ ত্রিপাঠি জানান , “ মেয়েটির শরীরে অনেক ক্ষত রয়েছে । আমাদের প্রথম কাজ হল তাকে চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে তোলা এবং তার বাবা-মায়ের সন্ধান করা ‘’। বাহরাইচ হাসপাতালের দুই মাসের চিকিৎসা মেয়েটির ভয় কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করেছে ।

হাসপাতালের সুপার ডি কে সিং জানান , “ মেয়েটি কোন ভাষা বলতে বা বুঝতে পারছিলোনা । সে অনেক বছর পশুদের সাথে কাটিয়েছে এবং তাদের মতোই আচরণ করছে ‘’। “ “ এখন সে ইশারা- ইঙ্গিত বুঝতে পারছে ও হাসপাতালের ওয়ার্ড বয় , নার্স ও অন্যান্য স্টাফদের চিনতে পারছে’’। মনে করা হচ্ছে জন্মের পর থেকে বাচ্চাটি ওই জঙ্গলে রয়েছে । সিং আরো জানান , মানুষের মতো আচরণ করতে পারবে বা ভাষা শিখতে পারবে এমন একটি প্রতিষ্ঠানে পাঠানোর প্রস্থাব তিনি রেখেছিলেন কিন্তু ঊর্ধ্বতন কতৃপক্ষ তা মঞ্জুর করেননি ।যদিও ওয়ার্ড এ হাঁটার সময় সে হাত- পা একত্রিত করে হাঁটে ,তবুও শিশুটি দ্রুত নতুন পরিবেশের সাথে খাপ খাইয়ে নিচ্ছে ।

মোগলীর দেখাশোনায় নিয়োজিত রেণু দেবী নামের এক স্বাস্থ্য কর্মী জানান , “ বালিকাটি এখন হাতের ইশারা বুঝতে পারে “।
কিপ্লিং এর গল্পের মতো বাস্তব কাহিনী গুলো আমাদের চারপাশেই ছড়িয়ে আছে । গত বছর ইংল্যান্ডের এক মহিলা জানান শিশু পাচারকারীদের হাতে পতিত হওয়ায় সে দক্ষিণ আমেরিকার বানর দলের সাথে একটি জঙ্গলে বেড়ে উঠেছে ।

ইউক্রেন এর একজন মহিলা , অক্সানা মালায়া যাকে উদ্ধার করা হয় একটি কুঁড়ে ঘর থেকে কারণ তার মদ্যপ পিতা মাতা তাকে ত্যাগ করার পর সে বেড়ে উঠে একটি কুকুর দলের সাথে