আপনি যদি কখনো কোনো ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস যেমনঃ রেডিও, টেলিভিশন, মনিটর, সিপিইউ এমনকি পুরোনো মোবাইল খুলে থাকেন তাহলে নিশ্চয়ই এর ভেতরের সার্কিট বোর্ডের কাজগুলো দেখেছেন! খেয়াল করলে দেখবেন ওইসবে কিছু চকচকে সোনালী রঙের প্লেট দেখা যায়। আসলে ওইসব উজ্জ্বল চকচকে সোনালি রঙয়ের প্লেটগুলো মূলত স্বর্ন’ই! জ্বি সত্যিকার স্বর্ণ, সত্যিকার গোল্ড!!
এসব ইলেক্ট্রনিক সার্কিট বোর্ডে স্বর্ণ কেনো ব্যবহার করা হয় জানেন? কারণ, স্বর্ণ বেশ শক্তিশালী অনুগ্রাহী কিংবা সহায়ক পদার্থ! এবং একই সাথে আমরা সবাই জানি যে স্বর্ণ তে সহজে মরিচা পড়ে না কিংবা ময়লা লেগে থাকে না। যদি আপনার কাছে এমন কিছু সার্কিট বোর্ড থেকে থাকে তাহলে স্বর্ণ খোঁড়া শুরু করে দিন!
আমরা মূলত দুটো মেথডে একটি সার্কিট বোর্ড থেকে স্বর্ণ বের করতে পারবো। একটা হচ্ছে (১) নাইট্রিক এসিড দ্বারা এবং দ্বিতীয়টি হচ্ছে (২) আগুন দ্বারা!
প্রথমে দেখি, নাইট্রিক এসিড এর সাহায্যে কিভাবে একটি সার্কিট বোর্ড থেকে স্বর্ণ মাইন করা যায়ঃ
ধাপ একঃ এসিডের সাথে খেলা নয়! তাই, নিজে প্রথমে সেইফ হোন। সেক্ষেত্রে সেইফ মাস্ক পড়তে পারেন। সেইফটি গ্লাস পড়তে পারেন চোখে। এবং কেমিস্টরা যেসব হাতমোজা পড়েন সেগুলো পড়তে পারেন। মনে রাখবেন, এসিড আপনার হাত ঝলসে এবং পুড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। আর এসিড এর ধোয়া থেকে আপনার চোখে এবং নাকে সমস্যা হতে পারে। তাই সেইফ হওয়াটা খুবই জরুরী।
ধাপ দুইঃ নাইট্রিক এসিড ক্রয় করুন। নাইত্রিক এসিড ঘরে তৈরী করা যায়। যদিও সেটা বেশি ব্যয়বহুল। তাই, কেমিক্যাল দোকান থেকে কিংবা স্কুল-কলেজের ল্যাবরেটরি থেকে নাইট্রিক এসিড নিয়ে আসতে পারেন। মনে রাখবেন, বাংলাদেশের এসিড নিয়ন্ত্রণ আইন অনুসারে আপনি এই এসিড ব্যবহার করতে পারবেন না। সেক্ষেত্রে ০০২ ধারায় আপনার বিরুদ্ধে মামলা করা হতে পারে। তাই, যদি ব্যবহার করতেই হয় নিজ দায়িত্বে ব্যবহার করুন।
ধাপ তিনঃ এবার যেই সার্কিট বোর্ড থেকে স্বর্ণ মাইন করবেন সেই সার্কিট বোর্ড টিকে একটি পাইরেক্স গ্লাসওয়ারে রাখবেন। অথবা আপনি চাইলে অন্য যেকোনো জায়গায় রেখে করতে পারেন কিন্তু মনে রাখবেন এমন কিছুর উপর রেখে করবেন যেটা এসিডের অতি উচ্চ তাপমাত্রা সহন করতে পারবে। এবার সার্কিট বোর্ডটিকে ছোটো ছোটো টুকরো করে গ্লাসওয়ারে রাখুন। কোনভাবেই প্লাস্টিক কনটেইনার ব্যবহার করবেন না। এতে এসিড আপনার প্লাস্টি কনটেইনার পুড়িয়ে ফেলতে পারে।
ধাপ চারঃ এবার গ্লাসওয়ারে আপনার সার্কিট বোর্ডের টুকর গুলো আছে এবং এখন আপনি সেই গ্লাস কনটেইনারে নাইত্রিক এসিড ঢেলে দিন। পোড়া গন্ধ পাবেন। এভাবে সম্পূর্ণ সার্কিট বোর্ডটিকে গলে যেতে দিন।
ধাপ পাঁচঃ এবার, একটি রডের জালি নিন আর সেই রডের জালিটার উপর আপনার এসিড ঢালুন। দেখবেন, রডের জালির উপর স্বর্ণ জমতে শুরু করেছে। এবার ধীরে ধীরে সেই রডের জালিটির উপরে থেকে আপনার গোল্ডগুলো সরিয়ে নিন। স্বর্ন গুলো ঠান্ডা হবার সময় দিন।
এবার দেখবেন আপনার কাছে একেবারে আসল স্বর্ণ রয়েছে। চাইলে সেগুলো স্বর্ণকারের কাছে দেখিয়ে পরিক্ষা করে নিতে পারেন!
এবার দেখি, আগুনের মাধ্যমে কিভাবে একটি সার্কিট বোর্ড থেকে স্বর্ণ আলাদা করা যায়ঃ
ধাপ একঃ আগুনের সাথে খেলা নয়! তাই, নিজে প্রথমে সেইফ হোন। সেক্ষেত্রে সেইফ মাস্ক পড়তে পারেন। সেইফটি গ্লাস পড়তে পারেন চোখে। এবং কেমিস্টরা যেসব হাতমোজা পড়েন সেগুলো পড়তে পারেন। মনে রাখবেন, আগুন আপনার হাত ঝলসে এবং পুড়িয়ে দেয়ার ক্ষমতা রাখে। আর আগুন থেকে সৃষ্ট ধোয়া আপনার চোখে এবং নাকে সমস্যা করতে পারে। তাই সেইফ হওয়াটা খুবই জরুরী।
ধাপ দুইঃ একটি উচ্চতাপ সহনকারী লৌহ বোর্ড নিন। এবং এর উপর সার্কিট বোর্ডগুলো ছোটো ছোট টুকরো করে রাখুন।
ধাপ তিনঃ এবার সেই সার্কিট বোর্ডে আগুন লাগিয়ে দিন। সার্কিট বোর্ড জ্বলতে জ্বলতে গলতে শুরু করবে এবং একসময় গলে যাবে। আগুন লাগানোর জন্যে কেরোসিন কিংবা অন্য যেকোনো কিছু ব্যবহার করে আগুন লাগাতে পারেন।
ধাপ চারঃ এবার, সেই গলে যাওয়া প্লাস্টিকগুলো গ্লাভসের মাধ্যমে ধরে হাত দিয়ে ছোটানোর চেষ্টা করুন। দেখবেন প্লাস্টিকগুলো উঠে আসছে এবং স্বর্ণগুলো দেখা যাচ্ছে।
এবার দেখবেন আপনার কাছে একেবারে আসল স্বর্ণ রয়েছে। চাইলে সেগুলো স্বর্ণকারের কাছে দেখিয়ে পরিক্ষা করে নিতে পারেন!