সারাদিন ক্লাস করে ক্লান্ত হয়ে দুপুরে ঘরে ফেরার পর ক্লান্ত শরীর আর চলতেই চায় না! সেই ক্লান্ত-বিধ্বস্ত শরীরটাকেই টেনে টেনে নিয়ে চলতে হয় কোচিং কিংবা প্রাইভেট টিউটরের বাড়ির দিকে। তারপর সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে হাতমুখ ধুয়ে কিছু একটা মুখে দিয়েই আবার হোমওয়ার্ক, অ্যাসাইনমেন্ট নামের বিভিন্ন যন্ত্রণা! রাতের খাবারের পর বিধ্বস্ত দেহটাকে বিছানায় এলিয়ে দিয়ে আবার স্মার্টফোনের স্ক্রিনে চোখ রেখে টেপাটেপি…
এভাবেই চলছে আমাদের কিশোর-কিশোরীদের অধিকাংশের জীবন। অথচ এই সময়ে তাদের মাঠে ছোটাছুটি করে খেলাধুলা করার কথা ছিল, বন্ধুদের সাথে আড্ডায় প্রাণখুলে হেসে ওঠার কথা ছিল,ঝুম বৃষ্টিতে ভিজে সর্দি-জ্বর বাঁধাবার কথা ছিল,পড়ার বইয়ের নিচে গল্পের বই লুকিয়ে রেখে ধরা খাওয়ার পর পিঠে দুমদাম কিল খাওয়ার কথা ছিল!
গল্পের বই পড়তে গিয়ে ধরা খাওয়া! ছেলেবেলায় কতবার এজন্য পিঠে ডালঘুটনি ভাঙা হয়েছে তার কোন হিসেব নেই! কত কত রাত কাঁথামুড়ি দিয়ে বই পড়তে পড়তে ঘুমিয়ে গেছি,মাথার পাশে পড়ে থেকেছে প্রিয় বই! অথচ আজকাল মেসেঞ্জার-হোয়াটসঅ্যাপে চ্যাটিং করতে করতে রাত গভীর হয় সবার।
তিন দাদা ছিল ছেলেবেলার তিন হিরো! কত কত সময় কাটিয়েছি এদের কাহিনি পড়ে, সেসবের হিসেব রাখা মুশকিল!
তিন দাদাকে চিনতে পারছেন তো? হু হু! ফেলুদা, ঘনাদা, টেনিদা! বাংলা কিশোর সাহিত্যের তিন কালজয়ী চরিত্র! সত্যজিৎ রায়, প্রেমেন্দ্র মিত্র আর নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের রেখে যাওয়া তিন অমর কীর্তি! চলুন, সংক্ষেপে জেনে নেওয়া যাক এদের সম্পর্কে!
- ফেলুদা
ছোট বড় সবার প্রিয় গোয়েন্দা ফেলুদা ওরফে প্রদোষচন্দ্র মিত্র বাংলা সাহিত্যে ও বাংলা চলচ্চিত্রে সুপার-ডুপার হিট।বাংলা সাহিত্যের অন্যতম সেরা গোয়েন্দা মনে করা হয় ফেলুদাকে। এই ফেলুদার স্রষ্টা সত্যজিৎ রায়। জনপ্রিয় এই কাল্পনিক চরিত্রটির আসল নাম প্রদোষ চন্দ্র মিত্র। তবে কারো কারো ক্ষেত্রে আসল নামের চেয়ে ডাকনামটাই হয়ে ওঠে বিখ্যাত। ফেলুদা তাদেরই একজন! এই চরিত্রটি প্রথমে মানুষের সামনে আসে ১৯৬৫ সালের ডিসেম্বর মাসে। পশ্চিম বাংলার জনপ্রিয় সাহিত্যপত্রিকা ‘সন্দেশ’ এর ডিসেম্বর সংখ্যায় সত্যজিৎ রায়ের লেখা ফেলুদা সিরিজের প্রথম গল্প ‘ফেলুদার গোয়েন্দাগিরি’ প্রকাশিত হয়। সেই শুরু। এরপর দিনকে দিন চরিত্রের জনপ্রিয়তা আর বিস্তৃতি বেড়েই চলেছে। এ যাত্রাপথে কখনো পিছুটান আসেনি।
ফেলুদা ২৭ বছর বয়সী ৬’২” উচ্চতার এক যুবক, মার্শাল আর্টে দক্ষ, আগ্নেয়াস্ত্রের চেয়েও বেশি ব্যবহার করেন ‘মগজাস্ত্র’। শরীরচর্চা আর যোগব্যায়াম তার নিয়মিত রুটিনের অংশ। চারমিনার ব্র্যান্ডের সিগারেটের ভক্ত ফেলুদার প্রচুর বই পড়ার অভ্যাস তার মগজাস্ত্রকে আরো ক্ষুরধার করে তোলে নিঃসন্দেহে!
ফেলুদার প্রধান সহকারী তপেশরঞ্জন মিত্র ওরফে তোপসে ও লেখক লালমোহন গাঙ্গুলি । তপেশরঞ্জন মিত্র তার খুড়তুতো ভাই , ফেলুদার দেওয়া তোপসে নামেই সে সবচেয়ে বেশি পরিচিত।
লালমোহন গাঙ্গুলি ফেলুদার বন্ধু। তিনি একজন লেখক। ‘জটায়ু’ ছদ্মনামে রহস্য- রোমাঞ্চ উপন্যাস লেখেন। লালমোহন বাবু বাংলায় রহস্য-রোমাঞ্চ সিরিজের একজন জনপ্রিয় লেখক এবং তার নিজের মতে সারা ভারতে তার অনুগামীরা ছড়িয়ে আছে ।
ফেলুদার সাথে অনেকেই স্যার আর্থার কোনান ডায়েলের সৃষ্ট অমর চরিত্র শার্লক হোমসের মিল খুঁজে পান। জন ওয়াটসন যেমন শার্লক হোমসের সবসময়ের সঙ্গী তেমনিভাবে তোপসেও ফেলুদার ছায়াসঙ্গী। ফেলুদার সব অভিযান তোপসের লেখনীতেই প্রকাশ পায়, ঠিক শার্লক হোমসের ওয়াটসনের মতোই।শার্লক হোমসের সেই বিখ্যাত ঠিকানা, ২২১-বি বেকার স্ট্রিট, যে অস্তিত্বহীন ঠিকানায় আজও শার্লক হোমসকে উদ্দেশ্য করে শত শত চিঠি পাঠানো হয়! তেমনিভাবে ফেলুদাও তোপসেদের সঙ্গে ২১, রজনী সেন রোডের বাড়িটিতে থাকেন। দক্ষিণ কলকাতায় রজনী সেন রোড থাকলেও ২১ নম্বর বাড়িটি অস্তিত্বহীন!
১৯৬৫ থেকে ১৯৯৭ পর্যন্ত ফেলুদা সিরিজের মোট ৩৫টি সম্পূর্ণ ও চারটি অসম্পূর্ণ গল্প ও উপন্যাস প্রকাশিত হয়েছে।এ পর্যন্ত ফেলুদার ১১টি কাহিনি চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে। এর মধ্যে ‘সোনার কেল্লা’ ও ‘জয়বাবা ফেলুনাথ’ চলচ্চিত্র দুটি সত্যজিৎ রায় নিজে পরিচালনা করেন।এছাড়াও হিন্দি টিভি সিরিজ হিসেবে ‘যত কাণ্ড কাঠমাণ্ডুতে’ কাহিনিটি প্রচারিত হয়েছে।
ফেলুদাকে নিয়ে অনেক আলোচনা-সমালোচনা আছে, থাকবে। তবে যে খাঁটি বাঙালিয়ানার ধাঁচে গড়া হয়েছে গোয়েন্দা ফেলুদাকে, সেই ধাঁচে অন্যকোন চরিত্রকেই গড়ে তোলা সম্ভব নয়, আর এ কারণেই ফেলুদা অমর!
- ঘনাদা
১৯৪৫ সালের আগস্ট মাস। পারমাণবিক বোমার আঘাতে বিধ্বস্ত জাপানের ক্রন্দনধ্বনি বাংলাকে স্পর্শ করতে পারেনি মোটেও! করবে কী করে? পূজো যে এসে গেল! সেই সঙ্গে দেব সাহিত্য কুটিরের ১৩৫২ বঙ্গাব্দের পূজাবার্ষিকী আলপনা থেকে বেরিয়ে এলেন ঘনশ্যামদা! কি, নামটা বিদঘুটে লাগছে? তাহলে আপনি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতেই পারেন, নামটা ঘনশ্যামদা হলেও সংক্ষেপে সেটা ঘনাদা!
সেই পূজা বার্ষিকীতে প্রকাশিত মশা গল্পটি থেকেই ঘনাদার ইতিহাস শুরু। কিশোরগল্প হিসেবে লেখা হলেও প্রকাশের সাথে সাথে সব বয়সী পাঠকসমাজে সাড়া পড়ে যায়। ব্যাপক পাঠকপ্রিয়তা পাওয়ায় এরপর থেকে প্রতিবছরই পূজাবার্ষিকীতে প্রকাশ পেতে থাকে ঘনাদার একটা করে গল্প। অন্নদাশঙ্কর রায় লিখেছেন, “ঘনাদার জন্য তাঁর স্রষ্টার নাম চিরস্থায়ী হবে।”
ঘনাদা ফেলুদার মতো কোন গোয়েন্দা চরিত্র নয়।ঘনাদার কাহিনিকে চাইলে সায়েন্স ফিকশন বা এডভেঞ্চারের সাথেও তুলনা করা যায়, তবে সবটাই ঘনাদার চাপার জোরে! বাহাত্তর নম্বর বনমালি নস্কর লেনের বাসিন্দা ঘনাদা। মেসের আরো চার বাসিন্দা শিবু, গৌর, শিশির আর গল্পকথক তথা “আমি”, যার নাম লেখক খোলাসা করেছেন অনেক দেরিতে। ঘনাদা কথাপ্রসঙ্গে নিজের বিভিন্ন বাহাদুরির বানোয়াট গল্প বলেন তার সঙ্গীদের, ‘ঘনাদা গপ্পো ছাড়ছেন’ এ কথা সহজেই বুঝতে পারলেও অসাধারণ সেই ‘গপ্পো’গুলোর লোভ সামলাতে পারে না ঘনাদার সঙ্গীরাও,বরং কোন কারণে ঘনাদা অভিমান করলে ‘গপ্পো’র লোভেই তার অভিমান ভাঙাতে নানা কায়দাকানুন করতে হয় ওদের।
তবে ঘনাদার বাহাদুরি নিছক কাল্পনিক তত্ত্ব-তথ্যের উপর ভিত্তি করে নয়! কাহিনিগুলোকে লেখকের কল্পিত বা বিরচিত মনে হলেও আসলে সেগুলো সত্যই!আশ্চর্য কল্পনার জটিল স্রোতে ভাসিয়ে দেওয়া অজস্র জ্ঞাতব্য বিষয়,এটাই লেখকের গল্পগুলো বলার জন্য ভেবে ঠিক করা কায়দা বা ধরন।নতুন প্রজন্মকে বিজ্ঞানমনস্ক ও জ্ঞানমুখী করে গড়ে তোলাই ছিল প্রেমেন্দ্রর জীবনের সাধনা, আর ঘনাদার গল্পগুলোকে তিনি ব্যবহার করেছেন সে সাধনা বাস্তবায়নের এক বিরাট প্ল্যাটফর্ম রূপে।
ঘনাদার গল্প, যেগুলো আপাতদৃষ্টিতে লম্বা লম্বা গুল, সেগুলোকে আষাঢ়ে গল্প ভাবা ঠিক হবে না মোটেও। স্বয়ং প্রেমেন্দ্র মিত্র ১৯৭৪ এ SPAN পত্রিকার সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, “Ghana-da is a teller of tall tales, but the tales always have a scientific basis. I try to keep them as factually correct and as authentic as possible.”
ঘনাদার গল্পে ইতিহাস,ভূগোল,পদার্থ,রসায়ন,জীববিদ্যা ইত্যাদির সমন্বয়ে ঘনাদার বাহাদুরিকে যেমন নিতান্তই জ্ঞানগর্ভ করে তোলা হয়েছে, তেমনি সেসবের বিপরীতে মেসের বাসিন্দাদের হাস্যরসাত্মক কার্যকলাপ কাহিনিকে করে তুলেছে আরো উপভোগ্য। গৌরের বাঁদরামি, শিবুর কাশি আর শিশিরের সিগারেটের টিন থেকে প্রতিবার সিগারেট বের করার সময় কততম সিগারেট ধার নিলেন সেটা গুণে দেখা, এসবই বাড়িয়েছে ঘনাদার নির্মল আনন্দের উপকরণকে। তাই আজও পাঠকহৃদয়ে ঘনাদা অমর হয়েই আছেন।
- টেনিদা
নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় রচিত আরেক কিংবদন্তি টেনিদা। নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের লেখা কিশোরসাহিত্য মানেই দারুণ উপভোগ্য, তবে টেনিদার ক্ষেত্রে তার মাত্রা যেন সীমাহীন! ছেলে থেকে বুড়ো সব বয়সের পাঠকদেরই আনন্দ দেয় টেনিদা। বয়স ভোলানো-প্রজন্ম পেরুনো অবাক করা টেনিদার পাঠকপ্রিয়তা। ফেলুদা বা ঘনাদার সাথে কোনভাবেই মেলানো যায় না টেনিদাকে,বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য চরিত্র এই ভজহরি মুখার্জী ওরফে টেনিদা।
“টেনিদাকে চেনো না?পৃথিবীর প্রচণ্ডতম বিভীষিকা,আমাদের পটলডাঙার টেনিদা। পুরো ছ হাত লম্বা,গণ্ডারের খাঁড়ার মতো খাড়া নাক,খটখটে জোয়ান। গড়ের মাঠে গোরা ঠেঙিয়ে স্বনামধন্য। হাত তুললেই মনে হবে রদ্দা মারলো, দাঁত বার করলেই বোধ হবে কামড়ে দিলো বোধহয়!”… এভাবেই নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায় পরিচয় করাতেন টেনিদার সাথে।
টেনিদার কাহিনি যত এগিয়েছে, ততই তাতে যুক্ত হয়েছে কৌতুকের নতুন নতুন মাত্রা। শুরুতে টেনিদা কেবল ‘মেলা বকিসনি ’ থেমে গেছেন। এরপর একে একে যুক্ত হয়েছে নিত্যনতুন ‘প্রবচন’। কুরুবকের মতো বকবক করা, এক চড়ে কান কানপুরে পাঠানো, নাক নাসিকে পাঠানো, ঘুষি মেরে ঘুষুড়িতে ওড়ানো, চাঁটি মেরে চাঁদি চাঁদপুরে পাঠানো… তারপরে পুঁদিচ্চেরি মানে ব্যাপার অত্যন্ত ঘোরালো, এইরকম বহু চিরকালীন কৌতুকময় সংলাপ। আর টেনিদার সেই অবিস্মরণীয় চিৎকার “ডি-লা-গ্র্যান্ডি মেফিস্টোফিলিস”, সেই সাথে বাকি তিনমূর্তির “ইয়াক ইয়াক” বলে তাল মিলানো, এর চেয়ে জনপ্রিয় প্রবচন বাংলা সাহিত্যে আর নেই!
টেনিদার স্বভাব চরিত্র আড্ডাবাজ ধরনের। ম্যাট্রিকে সাত সাতবার ফেল করেছেন, যদিও শেষমেশ ‘চারমূর্তির অভিযান’ উপন্যাসে বলা হয়েছে টেনিদা এবারে থার্ড ডিভিশন পেয়ে পাশ করে গেছেন! পটলডাঙার টেনিদা আর তার তিনসঙ্গী মেধাবী ক্যাবলা, ঢাকাইয়া কাঠবাঙাল হাবুল সেন আর গল্পের কথক প্যালারাম, এই নিয়ে বিখ্যাত চারমূর্তি। চারমূর্তি চাটুজ্যেদের রোয়াকে বসে বিস্তর আড্ডা দেয়, সেই আড্ডায় নানারকম চালবাজি আর গালগল্প শুনিয়ে মাতিয়ে রাখেন টেনিদা, আর বাকি তিন মূর্তির পকেট হাতিয়ে দিব্যি চপ-কাটলেট-ডালমুট-তেলেভাজা মেরে দেন! খাওয়ার বেলায় টেনিদা ওস্তাদ, দু সের রসগোল্লা তিন মিনিটে ফুঁকে দেয়া কোন ব্যাপার না!আবার স্বভাবত বড্ড বেশি ভীরু টেনিদা, চারমূর্তিতে ভুতুড়ে হাসির শব্দ শুনেই ভয়ে খাটের নিচে লুকিয়ে গিয়েছিলেন, চারমূর্তির অভিযান এ বাঘ শিকারে যেতে হবে শুনে বাথরুমে গিয়ে লম্বা সময় লুকিয়ে ছিলেন!আবার বিভিন্ন সময়ে এই আলসে অকর্মণ্য চারমূর্তির লিডার টেনিদাই হয়ে ওঠেন সত্যিকারের নেতা, মার্শাল আর্ট আর জুডোয় পারদর্শী সুপুরুষ,ত্রাণকর্তা। প্যালার ভাষায়, “যেমন চওড়া বুক-তেমন চওড়া মন। হাবুল সেবার যখন টাইফয়েড হয়ে মরো মরো তখন টেনিদাই তাকে নার্স করেছে, পাড়ার কারো বিপদ আপদ হলে টেনিদাই গিয়েছে সবার আগে।ফুটবলের মাঠে সেরা খেলোয়াড়,ক্রিকেটের ক্যাপ্টেন। আর গল্পের রাজা।এমন করে গল্প বলতে কেউ জানে না!”
বাকি তিন মূর্তিও কম কৌতুহলোদ্দীপক নয়। গল্পকথক প্যালারামের মুখ দিয়ে লেখকের নিজেকে নিয়েই ঠাট্টা, আমি রোগা ডিগডিগে প্যালারাম,পালাজ্বরে ভুগি আর বাসক পাতার রস খাই।পটল দিয়ে শিঙিমাছের ঝোল আর আতপ চাল আমার নিত্য বরাদ্দ, একটুখানি চানাচুর খেয়েছি তো পেটের গোলমালে আমার পটল তুলবার জো! হাবুল সেনের ঢাকাইয়া ভাষা আর ক্যাবলার জ্ঞানী জ্ঞানী কথা হাসির খোরাক জুগিয়েছে প্রায়ই!
টেনিদাকে নিয়ে ৫টি উপন্যাস, ৩২টি গল্প আর ১টি নাটিকা লেখা হয়েছে। এর মধ্যে পাঠকদের অনুরোধে বেশ কিছু লেখা নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের মৃত্যুর পর তার স্ত্রী আশাদেবী লিখেছেন।টেনিদার উপন্যাসগুলো এডভেঞ্চার ধাঁচের,ছোট গল্পগুলো বেশিরভাগই টেনিদার চালিয়াতি আর গুলবাজির কাহিনি। টেনিদা সিরিজ নিখাঁদ হাস্যরসাত্মক, সেই সাথে পাওয়া যায় এডভেঞ্চারে স্বাদ! টেনিদাকে নিয়ে বলতে গেলে শেষ হবে না, আজ নাহয় এতটুকুই থাক!
সবশেষে এ-ই বলবো যে, ফেলুদা-ঘনাদা-টেনিদা না পড়লে আপনার ছেলেবেলাই বৃথা! আপনি পড়তে পারেন আর নাই পারেন, অন্তত কিশোর বয়সীদের পড়তে বলুন, দরকার হলে একটা করে ফেলুদা সমগ্র,ঘনাদা সমগ্র আর টেনিদা সমগ্র উপহার দিন! আর জানেনই তো,বই কিনে কেউ কখনো দেউলিয়া হয় না!
কখনোই না!