“ফুটবলটি একটি সহজ খেলা; যেখানে ২২জন পুরুষ ৯০মিনিট ধরে একটি বলের পিছনে ছুটে আর দিনশেষে জার্মানরাই জয়লাভ করে।”- গ্যারি লিনয়কার।
বিশ্বকাপ ফুটবলের ইতিহাসের দিকে যদি আমরা তাকাই, তাহলে সবচেয় সফল দল হিসেবে যার নাম আগে আসবে সেটা অবশ্যই ব্রাজিল, এর সাথে আর্জেন্টিনা,জার্মানি,ইতালি,ফ্রান্স এদের নামও আসবে। তবে আমার মতে সবথেকে সফল দল, প্রতি আসরেই দাপটের সাথে বিচরণ করা দল হল-“জার্মানি”। এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত ২০টি আসরের মধ্যে সর্বোচ্চ সংখ্যক ১৮বার বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছে জার্মান দলটি। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪বার জিতেছে শিরোপা(ইতালিও ৪বার জিতেছে বিশ্বকাপ)। দুর্ভাগ্যজনকভাবে সর্বোচ্চ ৪বার হতে হয়েছে রানার্স-আপ। ১৩বার খেলেছে সেমিফাইনাল। সর্বোচ্চ ৪বার তৃতীয় স্থান । সর্বোচ্চ ১৬ বার কোয়ার্টার ফাইনাল। এগুলো তো গেল দলগত অর্জন। এবার দেখা যাক ব্যক্তিগত অর্জনের দিকে- এক আসরে সর্বোচ্চ গোল এবং ব্যক্তিগত সর্বোচ্চ গোল এই দুই রেকর্ডের মালিক জার্মান লিজেন্ড মিরোস্লাভ ক্লোসা। গতবারের বিশ্বকাপের কথাই ধরুন না, পুরো টুর্নামেন্ট দাপটের সাথে খেলেছিল জার্মানরা। সেমি-ফাইনালে পরাশক্তি ব্রাজিল কে ৭-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে তারা। আর ফাইনালে একদঅম শেষ দিকে মারিও গোতজের গোলের শিরোপা নিজেদের করে নেয়।
যেই বিশ্বকাপের আসরে এত এত কিছু করে দেখিয়েছে জার্মান ফুটবল দল, তাদেরকে কিভাবে আপনি শিরোপা প্রত্যাশীদের নাম থেকে বাদ দিবেন। এবারের ২০১৮ বিশ্বকাপের জন্যে ঘোষিত জার্মান দলটিও যেকোনো দিনে যেকোনো দলকে চ্যালেঞ্জ করতে সক্ষম।
এবারের “রাশিয়া বিশ্বকাপ ২০১৮”র কোয়ালিফাইং এ বলতে গেলে একদম রাজার হালে হেসে-খেলে বিশ্বকাপের টিকিট নিশ্চিত করেছে জার্মান দল। ১০টি ম্যাচের মধ্যে ১০টিতেই তাঁরা জিতেছে, নেই কোন ড্র বা পরাজয়ের স্বাদ। ৪৩টি গোলের পরিবর্তে গোল হজম করেছে মাত্র ৪টি। বিশাল ব্যবধানে কোন দলকে হারানো যেন জার্মানির অভ্যাস হয়ে দাঁড়িয়েছে। কোচ জোয়াকিম লো কোয়ালিফাইং এ মোট ৩৭জন খেলোয়াড়কে অদল-বদল করে খেলিয়ে পরখ করে নিয়েছেন।
বাছাই পর্বে জার্মানির করা সবগুলো গোল দেখতে এখানে ক্লিক করুন
এক নজরে দেখে নেয়া যাক বিশ্বকাপে অংশ নেওয়া জার্মানি দলটিকে-
দল: জার্মানি
ডাক নাম: ডাই ম্যানশ্যাফট (দ্য টিম)
অধিনায়ক: ম্যানুয়েল নয়্যার
ম্যানেজার: জোয়াকিম লো
ফিফা র্যাংকিংঃ ১ম
গোলকিপার: ম্যানুয়েল নয়্যার(বায়ার্ন), মার্ক আন্দ্রে টের স্টেগান(বার্সা), কেভিন ট্রাপ(পিএসজি)
ডিফেন্ডার: জশুয়া কিমিচ(বায়ার্ন), নিকলাস সুলে(বায়ার্ন), জেরোম বোয়েটাং(বায়ার্ন), ম্যাটস হামেলস(বায়ার্ন), আন্তোনিও রুডিগার(চেলসি), মাথিয়াস গিন্টার(মনশেনগ্লাডবাচ), জোনাস হেক্টর(কোলন), মারভিন প্ল্যাটেনহার্ডট(বার্লিন)
মিডফিল্ডার: স্যামি খেদিরা(জুভেন্টাস), টনি ক্রস(রিয়াল), মেসুত ওজিল(আর্সেনাল), লিওন গোরেটজকা(বায়ার্ন), সেবাস্তিয়ান রুডি(বায়ার্ন), ইকায় গুন্ডগান(ম্যান সিটি)
ফরওয়ার্ড: জুলিয়ান ড্রাক্সলার(পিএসজি), মার্কো রিউস(ডর্টমুন্ড), থমাস মুলার(বায়ার্ন), টিমো ওয়ের্নার(লিপজিগ), মারিও গোমেজ(স্টুটগার্ট), জুলিয়ান ব্রান্ডট(লেভারকুসেন)
২০১৪’র ব্রাজিল বিশ্বকাপ জয়ী জার্মানি দলের মূল শক্তি হলো, তাঁরা একটা দল হিসেবে খেলে। একাদশের প্রত্যেকটি প্লেয়ার জানে তাঁর কি দায়িত্ব। ব্যক্তিগত নৈপুণ্যের চাইতে এখানে দলগত আক্রমণের প্রভাব বেশী লক্ষ্য করা যায়। এবারের বিশ্বকাপে জার্মানির ঠাই হয়েছে গ্রুপ “এফ” এ, যেখানে তাঁদের প্রতিপক্ষ মেক্সিকো,সুইডেন এবং দক্ষিণ কোরিয়া। সকলে বরাবরই শক্ত প্রতিপক্ষ হলেও ধরে নেওয়া যায়, জার্মানি গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয়েই সামনের রাউন্ডে যেতে পারে। এই গ্রুপে জার্মানির সাথে কে পরবর্তী রাউন্ডে যাবে সেটা নিয়েই লড়াই হবে।
জার্মানির খেলার সময়সূচি :
রবিবার, ১৭ জুন: জার্মানি বনাম মেক্সিকো
শনিবার, ২৩শে জুন: জার্মানি বনাম সুইডেন
বুধবার, ২৭ জুন: দক্ষিণ কোরিয়া বনাম জার্মানি
কোচ “জোয়াকিম লো” সেই ২০০৬ থেকে দলের সাথেই আছেন। সে বছর বিশ্বকাপে তৃতীয় স্থান অধিকার করলেও, তাঁর উপর আস্থা রাখে জার্মান ফুটবল এ্যাসোসিয়েশন। আস্থার প্রতিদানও দিয়েছেন জোয়াকিল লো, ২০১৪তে দলকে জিতিয়েছেন বিশ্বকাপের শিরোপা। ২০১৭তে জিতেছেন “কনফারেডেশন্স কাপ”। যদিও ইউরোপের শ্রেষ্ঠত্বের মুকুট আজো পরা হয়নি। তাতে কি জার্মানির অন্যতম সফল কোচ তাকেই বলা হয়। তরুণদের বরাবরই সুযোগ করে দেওয়া লো’র পছন্দের ফর্মেশন ৪-২-৩-১।
গোলবারের নিচে বরাবরের মতোই লো’র প্রথম পছন্দ বায়ার্ন ও জার্মান অধিনায়ক ম্যানুয়েল নয়্যার। যদি প্রায় নয় মাস ইনজুরির কারণে তার ফিটনেস ও পারফরম্যান্স নিয়ে কিছুটা সংশয় আছে। কিন্তু তার উপরেই ভরসা রাখছেন লো। “সুইপার কিপার” হিসেবে খ্যাত এই গোলকিপার গোল ঠেকাতে যেমন ওস্তাদ, তেমনি গোলে সহযোগিতা করতেও পটু। রাইট ব্যাকে খেলছেন বায়ার্নের তরুণ তুর্কি দারুণ ফর্মে থাকা জশুয়া কিমিচ। সেন্টার ব্যাক সামলাতে থাকছেন দুই অভিজ্ঞ বায়ার্ন সতীর্থ জেরোম বোয়েটাং ও ম্যাটস হামেলস। বিশ্বের অন্যতম সেরা এই দুই ডিফেন্ডার কে ফাঁকি দিয়ে বল জালে জোড়ানো এত সহজ নয়। লেফট ব্যাকে থাকছেন এফসি কোলনে খেলা জোনাস হেক্টর। ডিফেন্সিভ মিডফিল্ডে খেলবেন বিশ্বস্ত ও অভিজ্ঞ জুভেন্টাস মিডফিল্ডার স্যামি খেদিরা। পুরনো এই যোদ্ধা খুব ভালো করে জানেন দলের ঠিক কোন কোন ক্ষেত্রে তাকে প্রয়োজন হতে পারে। সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে খেলবেন রিয়াল মাদ্রিদ তারকা টনি ক্রুস। রিয়াল মাদ্রিদের টানা হ্যাট্রিক ইউসিএল জেতায় তাঁর যে ভূমিকা, সেটা সবারই জানা আছে। তিনি বর্তমানে বিশ্বের সেরা মিডফিল্ডারদের একজন। সাধারণত খেলার বিল্ডআপ শুরু হয় তাকে দিয়েই। সেন্ট্রাল এটাকিং মিডফিল্ডে খেলবেন আরেক জাদুকর আর্সেনালের মেসুত ওজিল। জার্মানি দলের প্রাণ ভোমরা বলতে যদি কাওকে বলা যায় তিনি হলেন এসিস্ট কিং মেসুত ওজিল। দলের সাথে এটি তাঁর তৃতীয় বিশ্বকাপ। রাইট উইং এ থাকছেন পিএসজির জুলিয়ান ড্রাক্সলার। দলের লেফট উইং এর ভার পড়েছে ডর্টমুন্ডের মার্কো রিউসের উপর। ইনজুরির কালো থাবায় নীল হয়ে যাওয়া এই প্লেয়ারের এটিই প্রথম আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্ট। স্ট্রাইকার হিসেবে ‘ফলস নাইন’ রোল পালন করবেন বায়ার্নের থমাস মুলার। অনেকেই তাঁর মধ্যে লিজেন্ড মিরোস্লাভ ক্লোসার ছায়া দেখতে পায়। কারন ইতিমধ্যে তিনি দুই বিশ্বকাপে ১০গোল করেছেন। দেখা যাক এবারের বিশ্বকাপে তিনি ক্লোসার রেকর্ড ভাংতে পারেন নাকি।
দলের রিজার্ভের দিকে যদি তাকাই তাহলে রীতিমতো আঁতকে উঠতে হবে! কারণ বেঞ্চে যারা বসে আছে তাঁরা প্রত্যেকেই প্রথম একাদশে খেলার যোগ্য। ব্যাকআপ কিপার টের স্টেগান এবারে বার্সার হয়ে তাঁর ক্যারিয়ারে সেরা ফর্মে আছেন। তাঁর অসাধারণ পারফর্মেন্সে দল জিতেছিল “কনফাডেরেশন কাপ” । নুয়ারের অনুপস্থিতিতে কোয়ালিফাইং ম্যাচগুলো দারুণ সামলিয়েছেন এই জার্মান কিপার। ম্যান সিটির হয়ে লীগ শিরোপা জেতা গুন্ডগান কেও একাদশে জায়গা করে নিতে রীতিমত বেগ পেতে হবে। এছাড়া গোল্ডেন বুট জেতা ওয়ের্নার হয়তো বেঞ্চে বসেই কাটিয়ে দিবেন এবারের বিশ্বকাপ।
দলের সাথে থেকেও অনেকের খেলা হয়না, তেমনি সেই দলেই জায়গা হয়না অনেক খেলোয়াড়ের। এবারের বিশ্বকাপের দলে জায়গা করে নিতে পারেন নি লেভারকুসেন গোলকিপার বার্ন্ড লেনো। এছাড়াও জায়গা হয় নি আর্সেনাল ডিফেন্ডার মুস্তাফি, বায়ার্ন ফরওয়ার্ড সান্দ্রো ওয়েগনার ও লিভারপুল মিডফিল্ডার এমরে চ্যান এর। গত বিশ্বকাপ ফাইনাল জয়ী গোলদাতা মারিও গোটজেও জায়গা করে নিতে বার্থ হয়েছেন। তবে অনেক সমালোচনার সৃষ্টি হয়েছে যার না থাক, তিনি হলেন ম্যানসিটি উইঙ্গার সানে। সিটির হয়ে বলতে গেলে উড়তে থাকা এক মৌসুম কাটানো এই উইঙ্গারেরও কপাল পুড়ল বলা যায়। প্রতিভাবান এই তরুণের জায়গায় লেভারকুজেনের ব্রান্ট কে যোগ্য হিসেবে মনে করেছেন কোচ।
জার্মানি দলের স্ট্রং পয়েন্ট:
“২০১৪ ব্রাজিল বিশ্বকাপ” জয়ী দলের সাথে এবারের দলটি শক্তিমত্তায় তেমন কোন পার্থক্য নেই। বরং বলা যায়, গতাবারের থেকে আরো পরিণত আরো অভিজ্ঞতায় ভরপুর হয়েছে দলটি। দলে যেমন রয়েছে তরুণদের সম্ভার, তেমনি রয়েছে অভিজ্ঞদের প্রাধান্য।
জার্মান দলের যাদের উপর নজর থাকবে সবার তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন টমাস মুলার। জার্মান এই খেলোয়াড় এখন আছেন ২৮বছর বয়সে, কিন্তু তিনি ইতিমধ্যে বিশ্বকাপের মতন প্রতিযোগিতায় দশটি গোল করে ফেলেছেন । ২০১০সালে “গোল্ডেন বুট” এবং ২০১৪ সালে “সিলভার বুট” জিতেছেন। কোনও বর্তমান খেলোয়াড়ই বিশ্বকাপে তাঁর থেকে বেশি গোল করেননি । এই মুহূর্তে তাঁর সামনে আরো একটি রেকর্ডের হাতছানি রয়েছে। টুর্নামেন্টে সর্বোচ্চ সর্বকালের সেরা গোলস্কোরার হওয়ার জন্য মুলারকে আরও ৭টি গোল করতে হবে। তবেই তিনি তার সতীর্থ মিরোস্লাভ ক্লোজকে টপকাতে পারবেন। এই মৌসুমে বুন্দেসলিগাতে ৮টি গোল করেছেন আর ১৪টি গোলে সহায়তা করে দলকে জিতিয়েছেন লীগ শিরোপা। সুতরাং বলা যায়, বেশ ভালো মোমেন্টামে আছেন তিনি। আরেকজন যার উপর আমার নজর থাকবে সে হলো, টিমো ওয়ের্নার। মাত্র ২২ বছর বয়সি এই জার্মান তরুণকে আন্তর্জাতিক টুর্নামেন্টে নতুন বলা কোন সুযোগ নেই। ২০১৭’র “কনফারেডেশন্স কাপ”-এ তিন গোল করে গোল্ডেন বুট জিতেন। এবারের জার্মানি দলের নতুন ভেল্কি এই টিমো ওয়ের্নারই দেখাবে বলে আমি মনে করি।
জার্মানির ভক্তদের জন্যে এবার আশীর্বাদই বলা যায় মার্কো রিউস এবং ইকায় গুন্ডগান এর অন্তর্ভুক্তি। ইনজুরির ছোবলে আক্রান্ত এই দুই জনপ্রিয় এবং প্রতিভাবান খেলোয়াড়ের এর আগে কোন বড় টুর্নামেন্টে অংশ নেওয়া হয়নি। তাই জার্মানির সাপোর্টাররা অধির আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করছে এই দুই মহারথীকে একসাথে দেখার জন্যে।
আরেক জার্মানের উপর স্পট-লাইট থাকবে, তিনি হলেন টনি ক্রুস। টনি ক্রুসের এটাকিং খেলার এবিলিটি অনেক বেশি পরিণত। তাঁর পাসিং এ্যাকুরেসি বিশ্বের সবার থেকে সেরা, শর্ট পাস – লং পাস দুটোই ভাল দিতে পারেন, ডান পা এবং বাম পা দুই পায়েই খেলতে পারেন এই সব্যসাচী প্লেয়ার। গোলে লং শট মারতে পারেন, কি পাস দিতে পারেন ফরওয়ার্ডদের। এজন্যে জার্মানি দলের হ্রদপিন্ড বলা হয় টনি ক্রুস কে।
জার্মানি দলের উইক পয়েন্ট:
জার্মানি দলের দিকে যদি আমরা তাকাই, পারতপক্ষে কোন ফাঁক-ফোকর নজরে পরবে না। কিন্তু একটু ডিপলি নজর দিলে একাদশ নির্বাচনে একটু খটকা লাগতে পারে। দলের গোলবারের অতন্দ্র প্রহরী হিসেবে নুয়ার বরাবরই আস্থার প্রতীক, কিন্তু এবারের প্রেক্ষাপট একটু ভিন্ন। বলতে গেলে এই মৌসুমের পুরোটাই ইনজুরিতে কাটিয়েছেন। তাঁর পরিবর্তে স্ট্যাগান খুব ভালো ভাবেই গোলবার সামলিয়েছেন। নুয়ার ম্যাচ ফিট হলেও পারফর্মেন্স এর দিকে তাকালে স্বভাবতই স্টেগ্যান এগিয়ে থাকছে। তাই একাদশে নুয়ারের জায়গায় স্টেগ্যানকে রাখার পক্ষেই আমার অভিমত।
দলের সেন্ট্রাল ডিফেন্সের দিকে যদি তাকাই, ফিলিপ লামের অবসরের পর তাঁর যোগ্য প্রতিনিধি হিসেবে এসেছে জেরোম বোয়েটাং ও ম্যাটস হামেলস। এরা দু’জন একসাথে ক্লাব পর্যায়ে খেলেছে, নিজেদের মধ্যে বোঝপোড়া তাই আর সকলের থেকে ভালো বলা যায়। কিন্তু বোয়াটেং এর সাম্প্রতিক ইনজুরির কারণে তাঁর পারফর্মেন্স এর কিছুটা হেরফের হতে পারে বলে আমি মনে করি। দলের সাথে থাকা দুই সেন্টার-ব্যাক নিকলাস সুলে বা আন্টনিও রুডিগার খেলতে পারেন তাঁর জায়গায়। তাঁর দুজনই প্রতিভাবান এবং প্রথম একাদশে খেলার যোগ্য। বোয়াটেং তাঁর ইনজুরি কাট্যে সদ্য ট্রেনিংয়ে ফিরেছেন। তাই এটাকিং সাইড যতটা স্ট্রং হবে ডিফেন্সিভ সাইড ততটাই দুর্বল হয়ে পড়বে যদি টনি ক্রুসকে সিঙ্গেল পিভট সিস্টেমে খেলানো হয়। এজন্যে ব্যাক আপ হিসেবে সর্তক থাকতে হবে সামি খেদিরাকে।
এবারের জার্মান দল, আগের সবগুলো দলের মতনই শক্তিশালী এবং ব্যালেন্সড টিম। পৃথিবীর সব অন্যতম সেরা লীগ থেকে আসা এসব খেলোয়াড়দের এক্টাই লক্ষ্য। নিজেদের জেতা বিশ্বকাপ আবার নিজেদের ঘরে ফেরত নিয়ে যাওয়া। এখন পর্যন্ত কোন দল পরপর দু’বার বিশ্বকাপ জিততে পারেনি। দেখা যাক জার্মানির হাত ধরেই হয়তো এই রেকর্ডের অবসান হবে।
সমগ্র বিশ্ব অধীর আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করছে “রাশিয়া বিশ্বকাপ ২০১৮”র জন্যে। আর কিছুদিন পরই পর্দা উঠতে যাচ্ছে বিশ্বের সবথেকে জনপ্রিয় এই আসরের। ধারাবাহিকভাবে বিশ্বকাপের আরো বিভিন্ন দলকে নিয়ে ফিচার আসবে সামনে। পর্ব আকারে সবগুলো লেখা পাবেন, “Bangla Hub”-সাইটে।
আগের পর্ব পড়ুন এখানেঃ
রাশিয়া বিশ্বকাপ : ফুটবল এখন তুযারশুভ্র দেশ “রাশিয়ার” পথে (পর্ব :১)